Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরির গ্রামে ১৭ জনের মৃত্যুর নেপথ্যে কোন অজানা রোগ রয়েছে? অবশেষে ভেদ হলো সেই রহস্য। গত এক মাস ধরে এই অজানা রোগ রাজৌরির বাধাল গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। তদন্তে নেমেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি বিশেষ দল।
মৃতদের শরীরে কোনওরকম ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজাত সংক্রমণ হয়নি বলে আগেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এর পর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং সংবাদমাধ্যমে জানান, ক্যাডমিয়াম টক্সিন থেকে এতগুলি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রোগাক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও একাধিক।
দৈনিক জাগরণে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘লখনৌতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টক্সিকোলজি রিসার্চে আক্রান্ত ও মৃতদের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। তবে কী ভাবে গ্রামবাসীদের শরীরে ক্যাডমিয়াম পৌঁছলো, তা খতিয়ে দেখা হবে।’ জিতেন্দ্র সিংয়ের সংযোজন, ‘এর নেপথ্যে যদি কোনও ষড়যন্ত্র থাকে, তাও খতিয়ে দেখা হবে।’
ক্যাডমিয়াম অত্যন্ত বিষাক্ত একটি পদার্থ। মানবদেহে প্রবেশ করলে তা একাধিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দূষিত বাতাস থেকে ক্যাডমিয়াম মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। পাশাপাশি এই বিষ শরীরে ঢুকতে পারে সংক্রমিত খাবার এবং জল থেকেও।
আরও পড়ুন:– Jio গ্রাহকদের জন্য সুখবর! ট্রাইয়ের নির্দেশ মেনে দু’টি সস্তার প্ল্যান আনল Jio, জেনে নিন বিস্তারিত
গত সপ্তাহে একদল স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানিয়েছিলেন, ১৭ জনের মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে নিউরোটক্সিন। প্রত্যেকের শরীরেই উপসর্গগুলি অল্প বিস্তর একই। এই ধরনের বিষ শরীরে প্রবেশ করার অর্থ ব্রেন সোয়েলিং কিংবা এডেমা। এমনটাই জানাচ্ছেন রাজৌরির সরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ এএস ভাটিয়া।
নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িস কন্ট্রোল (NCDC) এবং পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি থেকে। সেখানেও দেখা গিয়েছে মৃতদের শরীরে রয়েছে নিউরোটক্সিন। এর জেরে তাঁদের ব্রেন হ্যামারেজ হয়েছে। ডাঃ এএস ভাটিয়া বলেন, ‘ব্রেন ড্যামেজ আক্রান্তদের সমস্যা কী ছিল তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি আমরা। স্বাস্থ্য দপ্তর এই ঘটনা নিয়ে মনিটরিং করছে।’
গত বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকেই অজানা রোগে জর্জরিত রাজৌরির প্রান্তিক গ্রামটি। ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। তার মধ্যে ১৪ জনই শিশু। কেন্দ্র এবং কাশ্মীর সরকারের কাছে মৃতদের পরিবারের প্রশ্ন, কেন এখনও মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করা যাচ্ছে না? গত দু’দিনে আরও ছয় শিশু এই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রাজৌরির সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে সকলকে। তাদের রাখা হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ডে।
মৃতদের সংস্পর্শে আসা মোট ২০০ জনকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। গোটা বাধাল গ্রামকেই কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। একাধিক পরিবারকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজৌরি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও পাঁচ জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পাঁচ জন অ্যানাস্থেসিয়া স্পেশালিস্টকেও। যে কোনও ইমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে পরিকাঠামো কোনও বাধা হবে না বলে জানিয়েছেন ডাঃ এএস ভাটিয়া।
চলতি সপ্তাহেই শুরুতেই রাজৌরির এই গ্রামে গিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
আরও পড়ুন:– লৌহযুগের শুরু তামিলনাড়ুতে, 5,300 বছরের পুরনো তরোয়াল হাতিয়ার স্ট্যালিনের
আরও পড়ুন:– ট্রেন ও রাস্তা বন্ধে বালি ব্রিজে যাত্রী হয়রানি, কাজ চলবে আরও তিনদিন