কেরালার স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক অভিযোগ মায়ের, জানতে বিস্তারিত পড়ুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কেরালার কোচি শহরে ১৫ বছরের এক স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। ঘটনার সপ্তাহখানেক পর বিস্ফোরক ছাত্রের মা। তাঁর অভিযোগ, নৃশংস ভাবে ব়্যাগিং করা হয়েছিল তাঁর ছেলেকে। যার জেরে সে আত্মহত্যা করে। ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন মৃত ছাত্রের মা রজনা পিএম। তাঁর অভিযোগ, ‘আমার ছেলে মিহির আহম্মদকে মারধর করা হয়। অশ্রাব্য গালিগালাজ করে সিনিয়ররা। এমনকী টয়লেট সিট চাটতে বাধ্য করা হয়।’

পুলিশ ইতিমধ্যেই আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা রুজু করেছে। মিহিরের মা জানিয়েছেন, তিনি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দপ্তর এবং কেরালার পুলিশ প্রধানকে চিঠি লিখেছেন। পক্ষপাতহীন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি ১৫ জানুয়ারির। কোচির থ্রিপুনিথারা এলাকায় ২৬ তলা আবাসনের নীচে রক্তাক্ত এবং অচেতন অবস্থায় স্কুল ছাত্র মিহির আহম্মদের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় সে। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার এক ঘণ্টার মধ্যেই মিহির এই কাণ্ড ঘটায় বলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।

আরও পড়ুন:– BECIL-এ ৯ ধরনের পদে লোক নেওয়া হচ্ছে, শুরুতেই বেতন ১৮,৯৯৩ টাকা, এখনই আবেদন করুন

ছেলের মৃত্যুর ন্যায়বিচার চাইছেন মিহিরের মা। তিনি বলেন, ‘মিহিরের মৃত্যুর পর থেকেই আমি আর ওর বাবা তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, কেন মিহির এত বড় পদক্ষেপ করল। ওর বন্ধু, সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে, সোশ্যাল মিডিয়া মেসেজ দেখে সত্যিটা জানতে পেরেছি। মিহির নৃশংস ব়্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিল। ওকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছিল। স্কুলের একদল ছাত্র এর পিছনে রয়েছে। স্কুল বাসেও ব়্যাগিং করা হয় মিহিরকে।’

ছাত্রের মায়ের সংযোজন, ‘যে তথ্যপ্রমাণ আমরা পেয়েছি তা ভয়ঙ্কর। ওকে মারধর করা হতো। অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হতো। কল্পনাও করা যায় না, এমন নৃশংস অত্যাচার করা হতো আমার ছেলের উপর। জোর করে ওকে ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে টয়লেট সিট চাটতে বাধ্য করা হয়েছিল। ওর মাথা কমোডে ঢুকিয়ে ফ্লাশ করা হয়েছিল। এই ধরনের ঘটনায় সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছিল আমার ছেলে। সহ্য করতে না পেরেই চরম পদেক্ষপ নেয় ও।’

চামড়ার রঙের জন্যই ছেলেকে হেনস্থা করা হতো বলে দাবি করেছেন মিহিরের মা। এমনকী, মৃত্যুর পরও হেনস্থাকারীরা চুপ করে বসে নেই বলে অভিযোগ তাঁর। হেনস্থাকারীদের পক্ষ থেকে অশালীন শব্দ প্রয়োগ করে মিহিরের সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হয়, ‘ও সত্যিই মরে গিয়েছে। চিয়ার্স।’

রাজনা পিএম দাবি করেছেন, মিহিরের বন্ধুরা ‘জাস্টিস ফর মিহির’ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম পেজ তৈরি করেছে। তবে সেটি এই মুহূর্তে ডিলিট হয়ে গিয়েছে। তাঁর সন্দেহ, স্কুল কর্তৃপক্ষই এর নেপথ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তথ্যপ্রমাণগুলি নিয়ে স্কুলের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। ওরা জানিয়েছিল, সব তথ্য পুলিশকে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। আমার দৃঢ় সন্দেহ, স্কুল এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। স্কুলের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয়, সেই চেষ্টা করতে সমস্ত লুকিয়ে রাখা হচ্ছে। ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে করতে কালপ্রিটরা পালিয়ে যাবে, এই আশঙ্কায় রয়েছি।’

কেরালার শিশু সুরক্ষা কমিশনের কানেও গোটা ঘটনা তুলেছেন মিহিরের মা। স্থানীয় মাতৃভূমি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, কিশোরের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্যানেল। স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল মিহিরকে হেনস্থা করতেন বলেও কমিশনে জানিয়েছেন মিহিরের মা।

কেরালার শিক্ষামন্ত্রী ভি সিভনকুট্টি ইতিমধ্যেই ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।

এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অভিনেতারা। সামান্থা রুথ প্রভু বলেন, ‘এই ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। ২০২৫ সালে এমন হতে পারে? আরও একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হলো। কিছু মানুষের মনে এত বিষ রয়েছে, তার জন্য এত নৃশংস অপরাধ হয়।’

আরও পড়ুন:– কী ভাবে ব্যবহার করবেন ভারতীয় রেলের ‘বুক নাউ পে লেটার’ সুবিধা? জানুন এক ক্লিকেই

আরও পড়ুন:– ‘গুলির আঘাতে ব্যান্ডেড’, কেন্দ্রীয় বাজেটকে কটাক্ষ বিরোধী দলনেতা রাহুলের

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন