Bangla News Dunia, Pallab : শনিবার চেন্নাই ঝড়ে কাবু হয়েছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। প্লে অফে ওঠার সাহসী স্বপ্ন গতকালই যুবভারতীর ঘরের মাঠে এক প্রকার গুড়িয়ে গিয়েছে লাল হলুদ বাহিনীর। শেষ দুই ম্যাচে জয় ও ড্র করে আগামী ম্যাচগুলিতে ধারাবাহিক জয়ের অসাধ্য সাধন নিয়ে মাঠে নেমেছিল অস্কার ব্রুজোর দল।
তবে চেন্নাইয়িন এফসির প্রথম আঘাতেই নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে মশাল ব্রিগেড। শেষ পর্যন্ত রেফারির দীর্ঘ বাঁশিতে 3-0 গোলে জয় হয় ভিন রাজ্যের ছেলেদের। বর্তমানে নিভে যাওয়া মশাল নিয়ে এখনও প্লে অফে ওঠার দিবা স্বপ্ন দেখছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী দল ইস্টবেঙ্গল।
আরও পড়ুন : প্রতিমাসে পাবেন ৪০,১০০ টাকা ! পোস্ট অফিসের এই স্কিমে এখনই আবেদন করুন
চেন্নাইয়ের ফাঁদে পা দেন নিশু কুমার!
শনিবার যুবভারতীর মাঠে জয়ের আশা বুকে বেঁধে নেমেছিল লাল হলুদের ছেলেরা। সেই মতো শুরুটা মসৃণ ভাবে হলেও খেলা 10 মিনিট জেতে না জেতেই ইস্টবেঙ্গল খেলোয়াড়দের ব্যর্থতা আলগা হয়ে যায়। মাঠ জুড়ে তখন দাপট দেখাচ্ছে চেন্নাইয়িন এফসি। নিজেদের রক্ষণভাগ সামলে একটানা আক্রমণ শানিয়ে যেতে পারেননি ইস্টবেঙ্গলের লড়াকুরা।
যার জেরে বল পায়ে গতকাল গোটা ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে কব্জা করে চেন্নাই। আর ঠিক সেই মোক্ষম সময়ে শিশুসুলভ ভুল করে বসেন লাল হলুদের ভরসার কাঁধ নিশু কুমার। এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই কোনর শিল্ডস লাল হলুদ লক্ষণকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। এই খেলোয়াড়ের পায়েই দলের প্রথম গোলটি আসে।
তবে সেই সময় সুযোগ ছিল নিশুর। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে যাওয়ার সময় ডান দিক থেকে সেই বল টেনে ফেরাতে পারেননি নিশু কুমার। উল্টে শিল্ডসের ব্যাক হিলের সময় অপ্রত্যাশিত বলে পা লাগিয়ে নিজেই আত্মঘাতী গোল করে বসেন তিনি। লাল হলুদ তারকার এই ঘটনায় ওয়াকিবহাল মহল দাবি করেছে, বল যদি নিশুর পায় না লাগতো সে ক্ষেত্রে তা ক্লিয়ার হয়ে যেতে পারত। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চেন্নাইয়ের ফাঁদে পা দিয়ে একপ্রকার ফেঁসে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল।
আত্মঘাতী গোল বিপদ বাড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গলের!
চলতি মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের ধরাশায়ী অবস্থার কারণ হিসেবে অনেকেই দলের রক্ষণভাগ ও খেলোয়াড়দের ছন্নছাড়া ফুটবলকে নিশানা করেছেন। বেশ কিছু রিপোর্ট মারফত খবর, 2024-25 ISL মরসুমে চেন্নাইয়ের ম্যাচ মিলিয়ে মোট 10টি আত্মঘাতী গোল করেছে ইস্টবেঙ্গলের ছেলেরা। ফুটবলে কোনও দলের পক্ষে এই পরিসংখ্যান একেবারেই কাম্য নয়। গতকালের ম্যাচে দ্বিতীয় আত্মঘাতী গোলও জালে জোরালো সেই নিশু কুমারের দোষেই। ইরফানকে আটকাতে গিয়ে চেন্নাইয়ের ফাঁদে পা দিয়ে আত্মঘাতী গোলে নাম জড়ান নিশু।
আরও পড়ুন : ৮ হাজারে কাশ্মীর, ৪৫০ টাকায় দিঘা ভ্রমণ ! সস্তায় ঘুরতে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ
আবারও জায়গা তৈরি করেছেন বিষ্ণু
লাল হলুদের রক্ষণ যন্ত্রণার মাঝে নিজের গোছানো ফুটবল দিয়ে দর্শকদের নজর কেড়েছেন ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম সৈনিক পিভি বিষ্ণু। কেরলের এই তরুণ খেলোয়াড় দলের হয়ে যে ক’টি ম্যাচে অংশ নিয়েছেন তার প্রায় প্রতিটিতেই নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। গতকালের ম্যাচেও সেই চেষ্টায় ভাটা পড়েন। চেন্নাইয়ের ছেলেদের বিরুদ্ধে শনিবার বেশ কিছু ডুয়েল জিতেছেন তিনি। সেই সাথে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ফাউলও আদায় করেছেন বিষ্ণু। এক কথায় বলতে গেলে, ইস্টবেঙ্গল দলের হয়ে প্রতিটি ম্যাচেই নিজের খিদে মেটানোর চেষ্টা রয়েছে এই তরুণ ফুটবলারের।
কোন উপায়ে এবার দিবাস্বপ্ন পূরণ করবে ইস্টবেঙ্গল?
চলতি মরসুমে জয়ের থেকে বেশি পরাজয়ের পাল্লা ভারী ছিল ইস্টবেঙ্গলের। আর সেই কারণেই কলকাতার চির প্রতিদ্বন্দ্বী দল মোহনবাগানের থেকে লিগ টেবিলে দীর্ঘ ব্যবধান রয়েছে তাদের। শুরুর দিকে ধারাবাহিক পরাজয়ের পর অস্কারের হাত ধরে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল লাল হলুদ। তবে দলের ছেলেদের চোট আলগা হয়ে যাওয়ার রক্ষণভাগ নিয়ে কেরালার ম্যাচের পর আর জয়ের মুখ দেখা হয়নি ব্রুজোর।
ফলত এক সময়ে হাতের নাগালে থাকা প্লে অফ ক্রমশ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। এহেন আবহে চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে লজ্জার পরাজয় প্লে অফের দৌড়ে ইস্টবেঙ্গলের পথ আরও ভঙ্গুর করেছে। এখন প্রশ্ন, দলের এই দুরবস্থা নিয়ে কি এখনও প্লে অফে ওঠার সুযোগ রয়েছে লাল হলুদের? উত্তরটা হ্যাঁ হলেও তাতে বেশকিছু যদি কিন্তু জড়িয়ে। অঙ্ক বলছে, চেন্নাইয়ের ম্যাচে পরাজয়ের পর ইস্টবেঙ্গলকে প্লে অফে উঠতে হলে আসন্ন প্রতিটি ম্যাচ জিততে হবে। তবে এখানেই শেষ নয়, নিজেদের সাফল্যের পাশাপাশি টেবিলে 5 বা 6 নম্বরে থাকা দলগুলিকে হারতে হবে প্রায় প্রতিটি ম্যাচ। যা দিনের আলোয় স্বপ্ন দেখার মতোই।
আরও পড়ুন : দুর্গন্ধজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য সেরা বায়োকেমিক ঔষধ !