Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মাটির গর্ভে লুকিয়ে রয়েছে বহুমূল্য ধাতু। তার লোভেই যথেচ্ছ বেআইনি খননকাজ। বেআইনি সোনার খনন রোখার কাজে নেমেছিল পুলিশ। আর তাতেই প্রাণ গেল অন্তত ৭৮ জন খনি শ্রমিকের। উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় আড়াইশো জনকে। ঘটনাস্থল দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের দক্ষিণ-পশ্চিমে স্টিলফনটেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই এলাকায় মাটির নীচে সোনার ভাণ্ডার রয়েছে। সোনার খনি সে দেশের মানুষের রোজগারের অন্যতম উৎস। কিন্তু এই সোনার লোভেই যথেচ্ছ বেআইনি খনি চলে। এই বেআইনি সোনার খনি ঘিরে অপরাধের সিন্ডিকেট চলে সেই দেশে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়। এই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি খনি রুখতে অপারেশন চালাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রশাসন।
সেই কাজেই স্টিলফনটেনের বেআইনি সোনার খনিতে তল্লাশি চালিয়েছিল সেই দেশের পুলিশ। অগাস্ট থেকে ওই খনি ঘিরে রেখেছিল সে দেশের পুলিশ। যে পুলি বা কপিকলের মাধ্যমে খনির ভিতরে খাবার ও জল পাঠানো হতো, সেটা সরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে বেআইনি খনির ভিতরে থাকা শ্রমিকদের কাছে খাবার ও জল পৌঁছনো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী লোকজনের মাধ্যমে খনির অন্দরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছিল। এরই মধ্যে এ ভাবে অভিযান চালানো নিয়ে সেই দেশের অন্দরেই তীব্র বিরোধিতা করা হয়। এই আবহে আদালতের নির্দেশে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। সোমবার থেকে উদ্ধার চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ৭৮ জন খনি শ্রমিকের দেহ মিলেছে। ২৪৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই প্রকৃতস্থ অবস্থায় নেই বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর।
গোটা ঘটনাটির তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে সেদেশের ট্রেড ইউনিয়নের তরফে। এ ভাবে খাবার ও জল বন্ধ করে খনি শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া আদতে রাষ্ট্রের অত্যাচার বলে বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও পুলিশ এই অভিযোগে আমল দিতে চায়নি, খনি অপরাধ রুখতে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, খনি থেকে কাউকে বেরিয়ে আসতে বাধা দেওয়া হয়নি। অনেকেই বেরিয়ে এসেছেন। সংবাদসংস্থা সূত্রের খবর, স্থানীয়দের অনেকের দাবি, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে অন্য খনিমুখ দিয়ে বেরনোর চেষ্টা করার সময় খনিগর্ভের জলে ডুবে বা অন্য কোনও কারণে বেশ কিছু খনি শ্রমিকদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এই বেআইনি খনির পিছনে আদতে কে বা কারা রয়েছে, তার খোঁজ করা হচ্ছে।
যাঁদের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশকেই চিহ্নিত করা যায়নি। যাঁরা জীবিত উদ্ধার হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশও মোজাম্বিক, জিম্বাবোয়ে বা আরও কোনও দেশের নাগরিক। দক্ষিণ আফ্রিকায় বেআইনি সোনার খনিতে কাজের জন্য পড়শি দেশ থেকে পাচার করে লোক আনা হয়। ফলে এই শ্রমিকদের অধিকাংশেরই সরকারি খাতায় কোনও হিসেব থাকে না। সেই কারণেই মৃতদের অধিকাংশের পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে মনে করা হচ্ছে। ওই খনি গহ্বরে আরও কেউ আটকে আছেন কিংবা মৃত অবস্থায় রয়েছেন কি না তা জানা সম্ভব হচ্ছে না বলে সংবাদসংস্থা সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন:– দিল্লি দখলে BJP-র ভরসা মমতার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, বিস্তারিত জানতে এক ক্লিকে পড়ে নিন
আরও পড়ুন:– ইন্টারভিউর মাধ্যমে কলকাতা ESIC তে কর্মী নিয়োগ চলছে! আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখেনিন