Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয়বার শপথ নিয়েই আমেরিকার নাগরিকত্ব অধিকারের বিষয়ে চরমসীমা বেঁধে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ ওভাল অফিসে বসে প্রথম দিন তিনি আদেশ দিয়েছেন, অভিবাসীদের সন্তানরা আর জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিকত্ব পাবে না । আগামী 19 ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে জানান হয় ৷ সেই আদেশের পর অকাল প্রসবের জন্য মার্কিন হাসপাতালগুলিতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে ভারতীয় প্রসূতিদের ৷ তবে পরে ট্রাম্পের এই নির্দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।
সংবাদমাধ্য়মে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অকাল প্রসবের জন্য লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে হাসপাতালগুলিতে ৷ এক চিকিৎসকের মতে, গত দু’দিনে প্রসবের জন্য় অন্তত 20টি ভারতীয় দম্পতি এসেছেন তাঁর কাছে ৷ এদের অনেকের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্টের আদেশের পর আমেরিকায় তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ৷ সুতরাং, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা ভেবে সি-সেকশন প্রসবের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা ৷
উল্লেখ্য় আমেরিকায় এতদিন নিয়ম ছিল, বাবা অথবা মায়ের পরিচয় না-দেখেই আমেরিকায় জন্ম হওয়া সন্তান জন্মগতভাবে সে দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে । কিন্তু দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে এই নিয়ম বদলাতে আদেশ পত্রে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৷ নয়া প্রেসিডেন্টের এই আদেশের পর রীতিমতো আতঙ্কে আমেরিকার একটা বড় অংশ ৷ বেশ সমস্যায় পড়েন ভারত-সহ অন্য়ান্য দেশের প্রবাসীরা ৷ কারণ, কর্মসূত্রে বিভিন্ন দেশের নাগরিক মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেন ৷ জন্মসূত্রে সে দেশের নাগরিকত্ব পেতে এতদিন বেগ পেতে হয়নি তাঁদের সন্তানদের ৷
আরও পড়ুন:– Jio গ্রাহকদের জন্য সুখবর! ট্রাইয়ের নির্দেশ মেনে দু’টি সস্তার প্ল্যান আনল Jio, জেনে নিন বিস্তারিত
নিউ জার্সির স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ এসডি রামা জানান, প্রেসিডেন্টের আদেশের পর অকাল প্রসবের জন্য তাঁর সঙ্গে একাধিক ভারতীয় প্রসূতি যোগাযোগ করেছেন ৷ একই কথা জানিয়েছেন টেক্সাসের চিকিৎসক ডাঃ এসজি মুক্কালা ৷ তিনি বলেন, “অকাল প্রসবে সন্তান ও মায়ের ক্ষেত্রে একাধিক ঝুঁকি থেকে যায় ৷ ফুসফুসের সমস্যা, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, স্নায়ুরোগের সম্ভাবনা প্রভৃতি জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে শিশুদের ৷ বিষয়টি বাবা-মাকে বোঝানো হয়েছে ৷ কিন্তু, তারপরও অন্তত 20 জন দম্পতি অকাল প্রসবের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ৷”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিভিন্ন আদালতে 5-6টি মামলা দায়ের করা হয় ৷ ওয়াশিংটন প্রদেশের আদালতে মামলা দায়ের করেছে ওয়াশিংটন, ওরেগন, ইলিনয় ও অ্যারিজোনা প্রদেশের প্রশাসন ৷ ডেমোক্র্যাটশাসিত এই রাজ্যগুলির দাবি ছিল, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানের 14তম সংশোধনী বিরোধী। কারণ এই সংশোধনীতে আমেরিকায় জন্মসূত্রে নাগরিকত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল ।
এরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই আদেশের উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করা হয় ৷ এমনকী, সিয়াটেল আদালতের বিচারক জন কফেনওয়ার ট্রাম্পের এই আদেশকে ‘স্পষ্টতই অসাংবিধানিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ৷ আগামী 6 ফেব্রুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে ৷
প্রসঙ্গত, 1868 সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর 14তম সংশোধনী গৃহীত হয়, যা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বিতর্কিত 1857 সালের ‘ড্রেড স্কট সিদ্ধান্ত’কে বাতিল করে । সেই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল, সংবিধানের সুরক্ষা ক্রীতদাস কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য প্রযোজ্য নয় । কিন্তু মার্কিন বিচার বিভাগের দাবি, 14তম সংশোধনী আইন কখনও দেশে জন্মগ্রহণ করা সকলের জন্য নাগরিকত্বের অধিকার দেয় না ৷
আরও পড়ুন:– লৌহযুগের শুরু তামিলনাড়ুতে, 5,300 বছরের পুরনো তরোয়াল হাতিয়ার স্ট্যালিনের
আরও পড়ুন:– ট্রেন ও রাস্তা বন্ধে বালি ব্রিজে যাত্রী হয়রানি, কাজ চলবে আরও তিনদিন