জাভেদকে আশ্রয় দিয়ে গ্রেপ্তার বাড়ি মালিক, ‘বেঁটেখাটো ছেলেটা জঙ্গি!’ ঘুম উড়েছে ক্যানিংয়ের ঢালিপাড়ার

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ‘পরিযায়ী’ শাল বিক্রেতা ভেবেই কি বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল তেহরিক–উল–মুজাহিদিনের সদস্য জাভেদ মুন্সির শ্যালককে? নাকি নেপথ্যে ছিল সন্ত্রাসবাদের রাস্তা মসৃণ করার চক্রান্ত? ক্যানিংয়ে জঙ্গি গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশের স্ক্যানারে বাড়ির মালিক মোনাব্বর পিয়াদা। ইতিমধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের ঢালিপাড়া থেকে কাশ্মীরের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক–উল–মুজাহিদিনের সদস্য জাভেদ মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে জম্মু–কাশ্মীর পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জাভেদ জঙ্গি সংগঠন লস্কর–ই–তইবার নির্দেশে এসেছিল বাংলায়। পশ্চিমবঙ্গে কেন সে এসেছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

জাভেদের ‘ক্যানিং কানেকশন’-ও ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। সূত্রের খবর, জাভেদের স্ত্রী রোজির ভাই ক্যানিংয়ের বাসিন্দা। রোজির দুই ভাই গুলজ়ার ওরফে গোলাম আহমেদ ও নিসার আহমেদ কাশ্মীরি শালের ব্যবসা করে। চলতি বছরে ১ নভেম্বর থেকে ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড়–১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন জাভেদের শ্যালক গুলজ়ার। পাঁচ হাজার টাকায় সাত মাসের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল ওই বাড়ি।

আরো পড়ুন:– মাটি খুঁড়তে উঁকি দিল ৪ স্তরের ঐতিহাসিক ভাভ, তৈরির কারণ জানলে অবাক হবেন

বাড়ির মালিক মোনাব্বর পিয়াদার গ্রেপ্তারের পর তার পরিবারের সদস্যদের অবশ্য দাবি, সাত মাসের চুক্তিতে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। দশ টাকার সরকারি স্ট্যাম্প পেপারে তা লেখাও রয়েছে। জাভেদের দুই শ্যালক দীর্ঘদিন ক্যানিংয়ে শাল বিক্রি করতে আসে শীতকালে। আর তাদের নিছক পরিযায়ী ব্যবসায়ী ভেবেই বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তার সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের কোনও যোগাযোগ থাকতে পারে তা জানতই না মোনাব্বর, দাবি তার পরিবারের সদস্যদের।

যদিও এই ঘটনার তদন্তে নেমে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বাদ পড়ছে না বাড়ি মালিকের ভূমিকাও। এ দিকে ঘটনায় হতবাক দিঘিরপাড়–১ গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘মাঝেমধ্যে ওই বাড়িতে যেতাম শাল কেনার জন্য। কয়েকদিন ধরে এক কালো বেঁটে যুবককে দেখছিলাম। সে কোনও কথা বলত না। আমরাও আগবাড়িয়ে কোনও কথা বলিনি। শাল বিক্রেতাদের সঙ্গে যে জঙ্গি সংগঠনের কোনও যোগাযোগ থাকতে পারে, তা ভাবতেও পারছি না।’

আরো পড়ুন:– ৩ দিন বেপাত্তা বিমানের খোঁজ মিলল অদ্ভুত জায়গায়, ঘনাচ্ছে রহস্য

 

গোয়েন্দাদের দাবি, জাভেদ অত্যাধুনিক অস্ত্র হ্যান্ডলিংয়ে বেশ পোক্ত। ২০১১ সালে আল–ই–হাদিথ এর নেতা শওকত শায়ের খুনের ঘটনায় জেলও খেটেছে সে। এ ছাড়াও একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য ১৫–১৬ বছর জেলেই কেটেছে তার। এই প্রথমবার নয়, অতীতে দু’বার বাংলার এসেছিল সে, জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। ২০২১ সালে দিন কুড়ি এবং ২০২২ সালে দিন পাঁচেক ক্যানিংয়ে থেকেছিল জাভেদ। ২০২২ সালে ভিক্টোরাও ঘুরতে গিয়েছিল সে, দাবি তার এক আত্মীয়ের।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৯ ডিসেম্বর বিমানে দিল্লি থেকে সকাল ১১টা নাগাদ জাভেদ কলকাতায় আসে। তারপর সেখান থেকে সে গাড়িতে যায় ক্যানিং। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান ক্যানিং থেকে বাংলাদেশ তারপর নেপাল হয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার ছক কষছিল জাভেদ। তবে শুধুমাত্র পাকিস্তানে যাওয়ার সেফ প্যাসেজ হিসেবেই বাংলাকে ব্যবহার করছিল সে নাকি নেপথ্যে ছিল অন্য কোনও বড় ছক? উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দারা।

আরো পড়ুন:– ভিডিয়ো নিয়ে কড়া গাইডলাইন জারি YouTube-এর, চালানোর আগে জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন