Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ক্লাস টু থেকে সবে থ্রি হয়েছে। একটু একটু করে লেখাপড়ার চাপ বাড়ছে। সেই দিকেই মনোনিবেশ ছিল ছোট্ট প্রীতিশার। এইটুকু বয়সেই যে অনেক বড় ‘পরীক্ষা’ দিতে হবে তা তার জানা ছিল না। হঠাৎই শরীরে বাসা বাঁধে ‘মারণরোগ’, যার পরিণতি বোঝার মতোও বয়স হয়নি তার। শুধু ডাক্তারকাকুর কথা শুনে চলেছে। দেড় বছর পর সে প্রমাণ করে দিয়েছে ক্যানসার ও মৃত্যু সমার্থক নয়। প্রাণপণে জীবনে ফিরতে চায় সে। বইপত্র কাঁধে ফের যেতে হবে স্কুলে। বড় হয়ে ডাক্তার হতে হবে যে!
বছর দেড়েক আগে প্রীতিশার হিপ জয়েন্টের কাছে একটি টিউমার ধরা পড়ে। সেখান থেকেই হাড়ে পচন ধরে। চিকিসৎকরা জানিয়ে দেন ‘বোন ক্যান্সার’-এ আক্রান্ত সে। পেশায় রঙ মিস্ত্রি প্রীতিশার বাবা ভাবতেও পারেননি তাঁদের জীবন এক লহমায় এরকম বেরঙিন হয়ে যাবে। সামান্য আয়ে সংসার চলে। মেয়ের চিকিৎসার অর্থ জুটবে কোথা থেকে? ছাত্রীর সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই।
আরও পড়ুন:– পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে দেশের একমাত্র নাম ছাড়া রেলস্টেশন, কোথায় রয়েছে সেই স্টেশন ?
মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাই স্কুলে পড়ে প্রীতিশা। স্কুলের সহপাঠীদের অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। চিকিৎসা শুরু হয়। তার হিপ জয়েন্টের হাড় কেটে কৃত্রিম হাড় বসানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ১৭টি কেমো। অসম লড়াইয়ের পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে সে।
মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা গিরি বাগ বলেন, ‘প্রীতিশা আমাদের প্রাথমিক বিভাগে পড়াশোনা করতো। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে আমরা পরিবারের পাশি দাঁড়াই। বর্তমানে সে সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং আমার স্কুলে আবার পড়াশোনা করবে শুনে খুব ভালো লাগছে।’ প্রীতিশার মা প্রতিমা জানা বলেন, ‘মেয়ে এখন সুস্থ। সে পড়তে চায়। আমরা ওকে এ বার স্কুলে পাঠাব।’ মা সরস্বতীর আশীর্বাদ নিয়ে আগামী সোমবার থেকে স্কুলে যাবে প্রীতিশা।