Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- প্রায় দিনদশেক ধরে এই দিনটারই অপেক্ষা করছিলেন দালাল স্ট্রিটের তামাম লগ্নিকারী। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসের দখল নেওয়ার পর থেকে একের পর এক ফতোয়া জারি করায় বিশ্বের আরও একাধিক দেশের মতোই ভারতের শেয়ারবাজার নেমে গিয়েছিল প্রায় ১,৮০০ পয়েন্ট।
সেখানে বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষা করেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাজেটে এমন কিছু ‘স্টিম্যুলাস’ থাকবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ঝুলিতে, যা বাজারের গতিকে ফের ঊর্ধ্বমুখী করবে। শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হওয়ার পর তেমন হালচাল দেখা যায়নি বাজারে। সোমবারও ট্রাম্পের শুল্ক-শাসানি’তে লালেই বন্ধ হয়েছিল বাজারের অধিকাংশ কাউন্টার।
কিন্তু সোমবার রাতেই জানা যায়, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শ্যিনবাম এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে টেলিফোনিক আলোচনা ‘সদর্থক’ হওয়ায় একেবারে শেষ মুহূর্তে বর্ধিত শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ১ মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যে খবরে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায় বিশ্বের অধিকাংশ শেয়ারবাজারে। যার সূত্র ধরে মঙ্গলবার এক লাফে ১৩৯৭ পয়েন্ট (১.৮১%) উঠে বন্ধ হয়েছে বাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্স। এ হেন লাফ চলতি বছর ২ জানুয়ারির পরে আর দেখা যায়নি।
নিফটি-৫০র পাশাপাশি মিডক্যাপ-স্মলক্যাপ-ব্যাঙ্কিং এর কাউন্টারেও এদিন ভালো লগ্নি হওয়ায় দিনের শেষে ৫.৬ লক্ষ কোটি টাকা বেড়েছে লগ্নিকারীদের সম্পদ। ১৩টির মধ্যে ১২টি কাউন্টারই এ দিন লাভের মুখ দেখেছে। বিশেষজ্ঞদের গরিষ্ঠ অংশের দাবি, বাজেটের প্রকৃত সারমর্ম বুঝে উঠতে কিছুটা সময় নিয়েছেন লগ্নিকারীরা।
ব্ল্যাঙ্কেট ভাবে অর্থমন্ত্রীর তরফে কোনও ঘোষণা না থাকায় নি-জ়ার্ক অ্যাকশন হিসেবে শনি-সোমে বাজার নামলেও, এ দিন ধাতস্থ হয়ে বাজারে লগ্নিমুখী হয়েছেন ঘরোয়া প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নিকারীরা। যার জন্য তেজি ভাব দেখা গিয়েছে বাজারে। এখন ৭ তারিখে ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের দিকে উৎসুক ভাবে তাকিয়ে রয়েছে লগ্নিকারীরা। যেখানে ‘সদর্থক’ কোনও ইঙ্গিত আরও কিছুটা টেনে তুলবে বাজারকে। কিন্তু নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে ভাবে ধূমধাড়াক্কা এগজ়িকিউটিভ অর্ডার এবং নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন, তাতে স্থায়ী ভাবে বাজারে ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকা এখনই শক্ত।
আরও পড়ুন:- নিজেদের দেশেই ব্যান আর্জেন্তিনা ফুটবল সমর্থকরা! কারণ জানলে অবাক হবেন
বিশেষজ্ঞমহলের একাংশের মতে, যে ভাবে মেক্সিকো এবং পরে ক্যানাডার ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রথমে হুঁশিয়ারি এবং পরে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথে হাঁটছেন, তাতে বিশ্বজুড়ে পুরোদমে ট্রেড-ওয়ার হওয়ার যে সম্ভাবনার আশঙ্কা প্রথমে করা হচ্ছিল, সেটা এখন অনেকটাই ফিকে। যে সম্ভাবনা আরও কমেছে হোয়াইট হাউসের তরফে জারি করা বিবৃতিতে, যেখানে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সরাসরি কথা বলবেন তাঁর চিনা কাউন্টারপার্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে।
মনে রাখতে হবে, এই ঘোষণার আগেই মার্কিন বর্ধিত শুল্ক কার্যকর করার সিদ্ধান্তের পাল্টা হিসেবে বেজিংও ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০-১৫% হারে বর্ধিত হারে শুল্ক চাপানোর কথা জানিয়েছে মার্কিন পণ্যের উপর। তারপরেও ট্রাম্পের তরফে এই ‘নরম’ মনোভাব দেখানোকে এ দিন ভারতীয় শেয়ারবাজার চাঙা হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা।
যার পরেই রাখতে হবে টাকার বিনিময়ে ডলারের বিনিময়মূল্য কমাকে। সোমবারই ডলার ইনডেক্স ১০৯.৮৪-এ উঠে যাওয়ায় টাকা-ডলার বিনিময়মূল্য পৌঁছে যায় সর্বকালীন রেকর্ড ৮৭.২৯ টাকায়। তবে ট্রাম্পের ঘোষণার পর তা ০.৫৬% পড়ে ১০৮.৯০ স্তরে নেমে যাওয়াতেও এ দিন বাড়তি অক্সিজেন এসেছে বাজারে।
এর সঙ্গেই রাখতে হবে লগ্নিকারীদের ‘বাই-অ্যাট-ডিপ’ স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কম দামে আকর্ষণীয় শেয়ার পোর্টফোলিও’তে ঢোকানোর হিড়িকে। যার সার্বিক ফলে মঙ্গলবার দিনের শেষে হাসিমুখেই অ্যাকাউন্ট থেকে লগ-আউট করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
(বাংলা নিউস দুনিয়া কোথাও বিনিয়োগের জন্য পরামর্শ দেয় না। শেয়ার বাজার বা যে কোনও ক্ষেত্রে লগ্নি ও বিনিয়োগ ঝুঁকিসাপেক্ষ। তার আগে ঠিকমতো পড়াশোনা এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়। এই খবরটি শিক্ষা সংক্রান্ত এবং সচেতন করার জন্য প্রকাশিত।)
আরও পড়ুন:- ADHD রোগে কমতে পারে আয়ুও, বলছে গবেষণা, জানুন বিস্তারিত
আরও পড়ুন:- BHEL সংস্থায় নতুন করে প্রচুর কর্মী নিয়োগ চলছে! আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখেনিন