Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সেপ্টেম্বরের ঘটনা। তিরুপতি মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে ভক্তদের মধ্যে যে লাড্ডু বিতরণ করা হচ্ছিল, তার গুণমান নিয়ে অভিযোগে উত্তাল হয় দেশ। পশুর চর্বি মেশানো ঘি দিয়ে ওই লাড্ডু তৈরির অভিযোগে শেষ পর্যন্ত তদন্তে নেমেছিল সিবিআই। সেই ঘটনায় এ বার কলকাতারও যোগ পেলেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, কলকাতার এক ব্যবসায়ী নিয়মিত ট্যাঙ্কারে করে ঘি পাঠাতেন তিরুপতিতে। সরাসরি নয়, কলকাতার ব্যবসায়ী পাঠাতেন দেরাদুনের এক ব্যক্তির কাছে। দেরাদুনের সেই ব্যক্তিই নাকি তিরুপতি মন্দিরের প্রধান ঘি–সাপ্লায়ার ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নেমে সিবিআই অনেকটা ব্যাক–কালকুলেশন করে দেরাদুন ঘুরে কলকাতায় এসে পৌঁছয়।
জানতে পারে, লাড্ডু নিয়ে বিতর্ক শুরুর পরে চার ট্যাঙ্কার ঘি ফেরত আসে কলকাতায়। সেই চার ট্যাঙ্কার ঘি আশপাশে বিক্রির বহু চেষ্টা করে বিফল হন কলকাতার ওই ব্যবসায়ী। তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, আসানসোলে ওই ট্যাঙ্কারগুলি পাঠিয়ে অন্য ট্যাঙ্কারে ঘি ট্রান্সফার করা হয়। গুজরাটে গুনগালিয়ানা গ্রামে একটি সংস্থাকে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকায় অবশেষে সেই চার ট্যাঙ্কার ঘি বিক্রি করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
আরো পড়ুন:– রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষায় আসছে আমূল বদল, সিলেবাস-পরীক্ষা পদ্ধতিতে কী কী পরিবর্তন হবে? জেনে নিন
কিন্তু, ঘি তো কোনও ব্যবসায়ী পাঠাতেই পারেন! তাতে দোষের তো কিছু নেই! ফেরত পাওয়া ঘি বিক্রিও তো অপরাধ নয়!
সিবিআই সূত্রের খবর, নতুন মোড় নিয়েছে তদন্তে। জানা গিয়েছে, কলকাতার যে ব্যবসায়ী দেরাদুনে নিয়মিত ঘি পাঠাতেন, তিনি ভুয়ো বিল পাঠিয়ে ঘি–য়ের আসল দামের চেয়ে অনেক বেশি টাকা তুলতেন। তদন্তকারীদের দাবি, এটা তিনি নাকি বহু বছর ধরেই করছেন বলে তাঁদের হাতে নথি এসেছে। যাঁদের কাছ থেকে তিনি ভুয়ো বিল নিতেন, কলকাতা ও হাওড়ার সেই সব সংস্থায় ইতিমধ্যেই হানা দিয়েছে সিবিআইয়ের দল।
কী ছিল সেই মোডাস–অপারেন্ডি?
সিবিআইয়ের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট–এর এক কর্তার কথায়, ‘ধরা যাক, এক ট্যাঙ্কার ঘিয়ের দাম ২৫ লক্ষ টাকা। কলকাতার ব্যবসায়ী সেই ঘি দেরাদুনে পাঠিয়ে ২৫ লক্ষ–র বদলে বিল পাঠাতেন ৪০ লক্ষ টাকার। এই ৪০ লক্ষ টাকার বিল তিনি সংগ্রহ করতেন কলকাতা ও হাওড়ার একাধিক ভোজ্য তেল সংস্থার কাছ থেকে। এই ভুয়ো বিলের বদলে ভোজ্য তেল সংস্থাগুলিকে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা কমিশন িদতেন ওই ব্যবসায়ী। ফলে, প্রতি ট্যাঙ্কার থেকে অতিরিক্ত প্রায় ১০–১২ লক্ষ টাকা মুনাফা করতেন ওই ব্যবসায়ী।’
যে সব সংস্থা ওই ব্যবসায়ীকে ভুয়ো বিল সাপ্লাই করত, তাদের খোঁজে কলকাতায় এসে সিবিআইয়ের সিট সম্প্রতি অভিযান চালায় ওয়েস্ট ক্যানাল রোডে। এই সূত্রে বজবজের এক ব্যবসায়ীরও খোঁজ পান তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, বজবজের এই ব্যক্তিই কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন ভোজ্য তেল সংস্থার সঙ্গে কলকাতার ওই ব্যবসায়ীর যোগাযোগ করান। সিবিআই কর্তাদের দাবি, চারপাশ থেকে এখন নথিপত্র সংগ্রহের কাজ চলছে। এখনও অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর দরজায় কড়া নাড়া হয়নি।