Bangla News Dunia, Pallab : গত ১৩ জানুয়ারি থেকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভের মেলা। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের ভিড়ে মেতে উঠেছে এই মেলা। বাইরের দেশ থেকেও হাজির হয়েছে একাধিক পুণ্যার্থী। ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ যোগে মোক্ষলাভের আশায় পুণ্যার্থীদের ভিড় যেন আরও বাড়ছে। এই আবহে এবার বাংলাতেও কুম্ভমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। তবে এই প্রথম নয়। পর পর চার বছর ধরে হুগলির ত্রিবেণীতে কুম্ভমেলার (Hooghly Tribeni Kumbh) আয়োজন করা হচ্ছে। নানা টালবাহানার পর অবশেষে হুগলির ত্রিবেণীর সপ্তর্ষি ঘাটে ভূমিপুজো পর্ব অনুষ্ঠিত হল। আর এবার এই প্রথমবার মেলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আরও পড়ুন : ১৩,৭৬২ শূন্যপদে রুরাল ডেভেলপমেন্টে চাকরি ! ২২,৭৫০ টাকা থেকে বেতন শুরু
কুম্ভ মেলা শুরুর আগে ভূমি পুজোর আয়োজন
হুগলির এই ত্রিবেণীতে গঙ্গার পাড়ে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবং আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘ সংক্রান্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আগেই তাই গতকাল অর্থাৎ বুধবার সপ্তর্ষি ঘাট সংলগ্ন মাঠে ভূমিপুজোর মধ্যে দিয়ে ‘বঙ্গীয় কুম্ভ মহোৎসবে’র সূচনা হয়। গত তিন বছর ধরে মাঘ মাসের সংক্রান্তিতে কুম্ভমেলা হয়ে আসছে ত্রিবেণীতে। প্রয়াগরাজে যেমন গঙ্গা যমুনা সরস্বতীর সঙ্গম আছে, ঠিক তেমনই ত্রিবেণীতেও তিন নদীর সঙ্গম। প্রয়াগকে বলা হয় যুক্তবেণী। আর ত্রিবেণীকে বলা হয় মুক্তবেণী। অনেকে এই ত্রিবেণীকে দক্ষিণ প্রয়াগও বলে। প্রায় ৭০০ বছর আগে সেখানে কুম্ভ হত। কমিটির দাবি সেই ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার এবং পুনর্জাগরণ করার জন্য গত তিন বছরের মত এবছরও কুম্ভমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার
২০২২ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত এই কুম্ভমেলায় শুধুমাত্র স্থানীয় বাঁশবেড়িয়া পুরসভা মেলা প্রাঙ্গণ সাফাইয়ে সহযোগিতা করে এসেছে এবং তাদের স্থানীয় শৌচাগারগুলি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তবে এবার মেলার আয়োজনে রাজ্য সরকার বড় ভূমিকা পালন করতে চলেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, তাদের পক্ষ থেকে সেখানে ১০টি জৈব শৌচালয়ের ব্যবস্থা-সহ পরিষেবা সংক্রান্ত সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভিড় সামলাতে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। সামনেই যেহেতু মাঘী সংক্রান্তি তাই প্রচুর ভিড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই নানারকম পরিকাঠামো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে মৌনী অমাবস্যায় পুণ্য স্নান করতে গিয়ে প্রয়াগরাজে পদপিষ্ট এর ঘটনার এক বড় প্রভাব পড়েছে দেশ জুড়ে। তাই সেই ঘটনার শিক্ষা নিয়ে নেওয়া হচ্ছে একাধিক ব্যবস্থা।
সেখানকার মহকুমাশাসক স্মিতা সান্যাল শুক্ল জানান, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলায় যেমন প্রশাসন পরিষেবা সংক্রান্ত সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, এবার ত্রিবেণীর কুম্ভেও ঠিক একই রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এছাড়াও আয়োজকদের পক্ষে কাঞ্চন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কয়েকশো সাধু ত্রিবেণীতে আসবেন। ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় হবে পুণ্য স্নান। প্রশাসন আমাদের পাশে আছে। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আমাদের আবেদন মেনে আশপাশের স্কুলে কোনো মাধ্যমিক পরীক্ষা রাখেনি।’’ এদিকে রাজ্য সরকারের এক সাহায্যের হাতকে অনেকে অন্য চোখে দেখে আসছে। বিরোধী দলের মধ্যে থেকে ভেসে আসছে কড়া মন্তব্য। সিপিএম এর জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘কাজ নেই, শিক্ষা নেই, স্বাস্থ্য নেই। মানুষের নজর ঘোরাতে খালি দিদি-মোদী হাত ধরাধরি করে চলছেন। এর বেশি আর কী আশা করা যায়!’’