Bangla News Dunia , Rajib : বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করে কলকাতা পুরসভা কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু পরোয়া করেনি প্রোমোটার। এ বার গোটা পাঁচতলা বিল্ডিংই ভেঙে ফেলতে পুরসভাকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতি কৌশিক চন্দ পুরসভার রিপোর্ট দেখার পর প্রশ্ন তোলেন, যদি পুরসভা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে থাকেই তা হলে তার পরেও কী করে এতবড় একটা বেআইনি নির্মাণ হয়ে গেল? এর পরেই বিচারপতি পুরসভাকে এক মাসের মধ্যে ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেন।
ফলে মেটিয়াবুরুজ থানা এলাকার এন ১৪৭/সি বল্লমতলা লেনের ওই বেআইনি বাড়ি নিয়ে চাপ বাড়ল পুরসভার। ওই জমির আসল মালিক মহম্মদ আতাউল্লার অভিযোগ, তাঁর নামেই জমির মিউটেশন অথচ স্থানীয় কিছু অসাধু প্রোমোটার ওই জমি দখল করে বেআইনি পাঁচতলা তৈরি করে তা ফ্ল্যাট আকারে বিক্রি করেছে।
ইতিমধ্যে সেখানে লোক বসবাসও শুরু হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, পুরসভার ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে ওই বেআইনি নির্মাণ চলেছে, স্থানীয় কাউন্সিলার থেকে পুলিশ–প্রশাসন ও কলকাতা পুরসভাকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশীষকুমার চৌধুরী জানান, জমির মালিক মহম্মদ আতাউল্লা নিয়মিত পুরসভায় ট্যাক্স জমা দেন। অথচ সেই জমি রাতারাতি দখল করে নেয় স্থানীয় কিছু মাতব্বর। পুরসভাকে জানানোর পরেও বেআইনি নির্মাণ থামেনি।
আরো পড়ুন :- পাহাড়ে কর্মসংস্থানে জোর, ৪টি ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ গড়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
আরো পড়ুন :- দুঃসংবাদ রাসেলকে নিয়ে, চিন্তায় KKR
আইনজীবীর প্রশ্ন, কী ভাবে পুরসভার অনুমতি ছাড়া সেখানে বেআইনি নির্মাণ সম্ভব হলো? পুরসভার কাছে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?
কলকাতা পুর–আইনের ৩৯৩ ও ৪০০ ধারায় বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে পুরসভার হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তা ব্যবহার করা হয়নি। আগের শুনানিতে এই ব্যাপারে পুরসভার কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি চন্দ।
মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট দিয়ে পুরসভার আইনজীবী জানান, মেটিয়াবুরুজে বেআইনি পাঁচতলা নির্মাণের ক্ষেত্রে তারা কোনও অনুমতি নেয়নি। বেআইনি ধরা পড়ার পরেই নোটিস দিয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বিচারপতি চন্দের পাল্টা প্রশ্ন, তা হলে কী ভাবে চোখের সামনে অবৈধ নির্মাণ হয়ে গেল? পুরসভার তা হলে আগাম জেনে লাভ কী হলো? পুরসভা জানায়, তারা তদন্ত শুরু করেছে। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, এক মাসের মধ্যে পুরসভাকে ওই পাঁচতলা নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে।
এর আগেও কলকাতা হাইকোর্ট কলকাতা, হাওড়া ও বিধাননগরে একাধিক এমন বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারপরেও একদিকে আইনি জটিলতা ও অন্য দিকে মানবিক কারণ দেখিয়ে সে সব ঠেকিয়ে রাখার নানা কৌশল করা হয়।
সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখার উদাহরণও রয়েছে। তাই নাগরিকরা চান, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে রাজনীতিমুক্ত কড়া পদক্ষেপ।
#END