Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- অশান্ত ও পার বাংলা। ফলে প্রতিবেশী ভারতে, বিশেষত এ পার বাংলায় চিকিৎসা করাতে আসা এখন কষ্টকল্পনাই বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিকের। সাধারণ ট্যুরিস্ট কিংবা বিজ়নেস ভিসা তো বটেই, চূড়ান্ত গুরুতর ও আপৎকালীন অসুস্থতা ছাড়া মেডিক্যাল ভিসাও ভারত সরকার ইস্যু করছে না সে ভাবে।
ফলে পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশি রোগী নেই বললেই চলে। যার জেরে কিছুটা হলেও ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়েছে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালগুলি। রোজই হাসপাতালে বাতিল হচ্ছে অস্ত্রোপচার এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট। ইন্ডোর ওয়ার্ডেও বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা তলানিতে।
ইএম বাইপাস লাগোয়া অন্তত আধ ডজন বেসরকারি হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীর ভিড় লেগেই থাকে। আউটডোর, ইন্ডোর—সর্বত্রই মোট রোগীর অন্তত ১০-১৫% আসেন পড়শি দেশ থেকে। হার্টের অসুখ থেকে শুরু করে নিউরোসার্জারি, ক্যান্সার, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, ইউরোলজিক্যাল সমস্যা থেকে শুরু করে অর্থোপেডিক রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি কিংবা বন্ধ্যত্ব— সবের চিকিৎসাতেই একটু সচ্ছল বাংলাদেশিরা ঢাকার চেয়ে কলকাতায় ভরসা রাখেন বেশি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের অধিকাংশই আটকে পড়েছেন দেশে। ফলে কলকাতার প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালেরই গড়ে সাপ্তাহিক ১২-২১ লক্ষ টাকার ব্যবসা কম হচ্ছে বলে খবর কর্পোরেট–সূত্রে।
পিয়ারলেস হাসপাতালের খবর, গত সপ্তাহের শেষে, শুক্র-শনিবারে পাঁচটি অপারেশন বাতিল হয়েছে। কারণ, রোগীরা আসতে পারেননি। পঞ্চসায়রের ওই বেসরকারি হাসপাতালের সিইও সুদীপ্ত মিত্র মঙ্গলবার বলেন, ‘যে কোনও সময়ে ইন্ডোরে ২৫-৩০ জন বাংলাদেশি রোগী ভর্তি থাকেন। কিন্তু এখন চার জন মাত্র ভর্তি। প্রায় সাত দিন পরে সোমবার এক জন এবং মঙ্গলবার তিন জন রোগী ভর্তি হয়েছেন যাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক। আরও ২৫-৩০ জন বাংলাদেশি রোগী ভর্তির জন্যে লাইনে আছেন। আগামী দিনে আশা করি ভিসা পেলে ওঁরা ধীরে ধীরে ভর্তি হবেন।’ তিনি জানান, অন্য সময়ে গড়ে রোজ প্রায় ১৫০ বাংলাদেশি রোগী আউটডোরে আসেন। এখন সেখানে সংখ্যাটা গড়ে ৪০-৫০ জন।
উডল্যান্ডস হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘আউটডোরে বাংলাদেশি রোগীর ভিড় অন্তত ৬০% কমেছে। এই মুহূর্তে কেউ ভর্তি নেই ইন্ডোরে।’ পূর্বতন আমরি গোষ্ঠী, কলাম্বিয়া এশিয়া এবং মেডিকা গোষ্ঠীর মালিকানা এখন মণিপালের হাতে। শহরে পাঁচটি হাসপাতাল রয়েছে তাদের। ওই হাসপাতাল গোষ্ঠীর পূর্বাঞ্চলীয় সিওও অয়ণাভ দেবগুপ্ত বলেন, ‘অসংখ্য বাংলাদেশি রোগী এই অচলাবস্থার কারণে কলকাতায় আসতে পারছেন না। তবে আমরা পুরোনো রোগীদের জন্যে টেলিমেডিসিন পরিষেবা দিচ্ছি।’ তিনি জানাচ্ছেন, অনলাইন কনসাল্টেশনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ধারাবাহিক ভাবে।
ডিসান হাসপাতালের অধিকর্তা শাঁওলি দত্ত বলেন, ‘বিদেশি রোগীদের জন্যে ভিসা ইনভিটেশন লেটার ও অন্যান্য ক্লিয়ারেন্স-সহ যাবতীয় আন্তর্জাতিক ফর্ম্যালিটি মেটানোর পরেই আমরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং অস্ত্রোপচারের সূচি তৈরি করি। ফলে আমাদের কিছু বাতিল বা স্থগিত করতে হয়নি। যাঁরা আসতে পারছেন না, তাঁদের জন্যে অনলাইন কনসাল্টেশনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। গত এক মাসে অন্তত ৫০ জন এই পরিষেবা নিয়েছেন।’ টেকনো-ইন্ডিয়া ডামা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার মহম্মদ শাহনওয়াজ পুরকাইত জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির কারণে তাঁদের হাসপাতালে অন্তত ২০% রোগী কমেছে। দিশা আই হসপিটালের কর্ণধার দেবাশিস ভট্টাচার্য অবশ্য জানাচ্ছেন, তাঁদের হাসপাতালে মাসে গড়ে ৫০ জন করে বাংলাদেশি রোগী আসেন চোখের জটিল চিকিৎসার জন্যে। সেই ধারায় এখনও ছেদ পড়েনি।
আরো পড়ুন:– কবে আসবে আপনার মৃত্যু? বলে দিচ্ছে এআই-চালিত ‘ডেথ ক্লক’। কিভাবে? জানলে অবাক হবেন
আরো পড়ুন:– সস্তা স্যামসাঙ স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র 6499 টাকার বিনিময়ে, পাওয়া যাবে 50MP Camera এবং 5000mAh Battery