বাংলাদেশে উত্তেজনার আঁচ বর্ধমানের খোসবাগানেও, কিভাবে ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আঁচ পড়েছে বর্ধমানের ডাক্তারপাড়া নামে পরিচিত খোসবাগানেও। চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর সংখ্যা এখানে আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। তা–ও যাঁরা আসছেন, তাঁরা ঠিকানা ভাঁড়িয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। চিকিৎসার সুযোগ পাইয়ে দেওয়া দালালরা ওই রোগীদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ঠিকানা ব্যবহার করছেন।

কখনও রোগীদের অসম বা ত্রিপুরার নাগরিক হিসেবে পরিচয় করানো হচ্ছে। একই অবস্থা শহরের নার্সিংহোমগুলিরও। সেখানেও বাংলাদেশি রোগীদের সংখ্যায় ভাটা পড়েছে বলে জানিয়েছেন মালিকরা।

চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করে দেওয়া ছেত্রী ভাই নামে বর্ধমানের পরিচিত এক দালাল জানাচ্ছেন, শহরের বাছাই করা কয়েকটি নার্সিংহোমে তিনি বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতেন। তাঁদের পরিচয় করাতেন অসম, ত্রিপুরার বাসিন্দা হিসেবে। রোগীদের জন্য নবাবহাটে বাড়িভাড়াও নিয়ে রেখেছেন ছেত্রী ভাই।

সেখানেই রোগী ও পরিবারের লোকেদের নিখরচায় থাকার ব্যবস্থা করেন তিনি। চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট, নার্সিংহোমে ভর্তি করানোর বিনিময়ে মোটা টাকা কমিশনও নেন ছেত্রী ভাই। কিন্তু, বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির কারণে এখন আর রোগী পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ‘এখন রোগী আসা অনেক কমে গিয়েছে। এলেও কাউকে বাংলাদেশের নাগরিক বলা হচ্ছে না। ভর্তির সময়ে ত্রিপুরা বা অসমের কোনও ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি। ব্যবসায় এখন মন্দা।’ নার্সিংহোমের মালিকরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের বহু নাগরিকের আত্মীয়দের বাস এই জেলায়। এখানে বেড়াতে আসার সঙ্গে তাঁরা চিকিৎসাও করিয়ে নিতেন। তখন তাঁদের ঠিকানায় বাংলাদেশ লেখা থাকত।

আরও পড়ুন:– নতুন বছরে সুখবর! সবার অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসে ঢুকবে 9000 টাকা পেনশন।

তবে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের ঠিকানা কেউ ব্যবহার করছেন না। এঁদের বেশিরভাগই নিজেদের কাঞ্চননগর, উদয়পল্লি, বাহির সর্বমঙ্গলাপাড়ার বাসিন্দা বলে জানাচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশি কি না সেটা সবসময়ে বোঝাও যাচ্ছে না। বুধবার উদয়পল্লির বাসিন্দা শম্পা দাস তাঁর আত্মীয় ষাটোর্ধ্ব এক মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন খোসবাগানে।

বাংলাদেশে ওই প্রৌঢ়ার জরায়ুতে অস্ত্রোপচারের পরে নতুন কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। ফের চিকিৎসা করাতে তিনি এসেছেন এখানে। শম্পা বলেন, ‘আমার বহু আত্মীয়ের বাড়ি বাংলাদেশে। এর আগে ওঁরা এলেও সমস্যা হয়নি। ইনি আমার মাসি, ভিসা করিয়েই এসেছেন। শুক্রবার এখানে অপারেশন হবে। একজন সব করিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে দেড় লাখ টাকা লাগবে। আজ রক্ত সমেত আনুসঙ্গিক কিছু পরীক্ষা ছিল।’

প্রভাব পড়েছে ওষুধের দোকানেও। খোসবাগানের ওষুধের দোকানের মালিক মনোতোষ ঘোষ বলছেন, ‘আগের থেকে প্রেসক্রিপশন অনেক কমে গিয়েছে। আগে আমাদের এখানে কম–বেশি ৮-১০ জন রোগী আসতেন বাংলাদেশ থেকে। এখন একেবারে নেই।’ খোসবাগানে দীর্ঘ দিনের চা বিক্রেতা পল্টু সাহা বলেন, ‘এখন দালালদের বাজার খুব খারাপ যাচ্ছে। আগে ভুল বুঝিয়ে কালনা, নদিয়া থেকে রোগীদের ধরে নিয়ে আসত, যারা প্রধানত বাংলাদেশি। এখন পুরো ফাঁকা বাজার।’

কলকাতা থেকে সপ্তাহে তিন দিন বর্ধমানে আসেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ স্বর্ণপ্রভ সরকার। তিনি বলেন, ‘আমি বছর দেড়েক এখানে আসছি। আগে মাসে ৩-৪ জন বাংলাদেশের রোগী পেতাম। গত ৪-৫ মাসে কেউ আসেননি।’

আরও পড়ুন:– ছয় থেকে বারো মাস বয়সি শিশুকে কীভাবে খাওয়াবেন ? টিপস দিলেন ডায়েটিশিয়ান

আরও পড়ুন:– 15 হাজারে আধার কার্ড, 5 হাজারে প্যান ! বাংলাদেশিদের নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে শ্রীঘরে ল’ক্লার্ক

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন