Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ-সহ ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর অনেক দেশকে উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে ভারত। প্রতি কেন্দ্রীয় বাজেটেই এই খাতে আলাদা করে অর্থ বরাদ্দ হয়। বাজেট ২০২৫-এ এই দেশগুলির মধ্যে বরাদ্দ সবচেয়ে বেশি বাড়ল মালদ্বীপের, প্রায় ২৮ শতাংশ! বাজেট নথি অনুসারে, ২০২৫-২৬ সালে মালদ্বীপের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।
অথচ, এক বছর আগেই ছবিটা একেবারে অন্যরকম ছিল। মালদ্বীপের ক্ষমতায় মহম্মদ মুইজ্জু আসার পর থেকেই ভারত বিরোধী অবস্থান নিয়েছিল ওই দ্বীপরাষ্ট্র। ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার গতি পেয়েছিল। ভারত ছেড়ে চিনকেই ‘কাছের বন্ধু’ বলে মনে করেছিল তারা। ভারতীয় সেনাকে সেই দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। চূড়ান্ত অবনতি ঘটেছিল ভারত-মালদ্বীপ ঐতিহাসিক সুসম্পর্কের।
এই পরিস্থিতিতে ২০২৪-এর অন্তর্বর্তী বাজেটে মালদ্বীপের জন্য সহায়তা বরাদ্দ কমিয়ে ৬০০ কোটি টাকা করা হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের পর পূর্ণাঙ্গ বাজেটে তা আরও কমিয়ে ৪০০ কোটি টাকা করা হয়। পরে বরাদ্দের পরিমাণ একটু বাড়িয়ে ৪৭০ কোটি টাকা করা হয়েছিল। অথচ, ২০২৩-এর বাজেটে মালদ্বীপের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৮৩২.৮৩ কোটি টাকা।
গত একবছরে ড্যামেজ কন্ট্রোলের বহু চেষ্টা দেখা গিয়েছে মহম্মদ মুইজ্জুর পক্ষ থেকে। গত অক্টোবরে ভারত সফরে এসেছিলেন তিনি। সেই সময় ভারতীয় পর্যটকদের মালদ্বীপে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছিলেন। বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের কোনও বিরোধ নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠকের সময় ভারতকে মালদ্বীপের প্রধান অংশীদার হিসেবে স্বীকার করেছিলেন মুইজ্জু। সম্ভবত, তারই প্রভাব দেখা গেল চলতি বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে।
মোদী সরকারের ‘নেবারহুড ফার্স্ট’ বা ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি মেনে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে ভুটানকে, ২,১৫০ কোটি টাকা। এর পর আছে নেপাল, ৭০০ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে আছে মালদ্বীপ। তার পরেই রয়েছে মরিশাস। তাদের দেওয়া হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। গত বছর তাদের দেওয়া হয়েছিল ৫৭৬ কোটি টাকা। তবে এ বার এই দ্বীপরাষ্ট্রের বরাদ্দ কমেছে। অশান্ত মিয়ানমারের জন্য বরাদ্দ ৪০০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কত পেল? শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। দুই দেশই স্বীকার করেছে, সম্পর্কে ‘মেঘ জমেছে’। তবে তা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের সহায়তা বরাদ্দ কমানো হয়নি। বাড়ানোও হয়নি। গত বাজেটের মতোই এই বারও বাংলাদেশের জন্য ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। একই ভাবে শ্রীলঙ্কার বরাদ্দও অপরিবর্তিত রয়েছে, ৩০০ কোটি টাকা।
সামান্য আর্থিক বরাদ্দ বেড়েছে আফ্রিকান দেশগুলির। ২০২৪-এ এই দেশগুলির জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ২০০ কোটি টাকা। এই বছর তা বেড়ে হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:– নিষিদ্ধ ঘোষণা ! রাজ্যে 17টা ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্যভবন, দেখে নিন তালিকা