বাড়িতে দেখার কেউ নেই, মাতৃহারা সদ্যোজাত বেড়ে উঠবে হাসপাতালে

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সন্তান প্রসবের পর মৃত্যু হয়েছে মায়ের। হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ওঠে চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে। হয় বিক্ষোভ, জাতীয় সড়ক অবরোধ। একইসঙ্গে ওঠে আর একটি প্রশ্ন— মা নেই, শিশুটিকে দেখবে কে? যার উত্তর খুঁজছিলেন অন্ডালের গোপালমাঠ এলাকার বাসিন্দা কার্তিক বাউড়ি।

স্ত্রী মামনি ছাড়া পরিবারে আর কেউ নেই তাঁর। শনিবার রানিগঞ্জের মারোয়ারি রিলিফ সোসাইটি হাসপাতালে যখন তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু ও পুত্রসন্তানের জন্ম হলো তখন বাইরে দাঁড়িয়ে কার্তিক প্রশ্ন করেন, ‘এখন এই দুধের শিশুটিকে কে দেখবে?’ তাঁর আবেদন, ‘আমি অসহায়। আমার কিছু করার নেই। হাসপাতাল কয়েক মাস দায়িত্ব নিক আমার ছেলের।’ শেষে অবশ্য রানিগঞ্জ থানার মধ্যস্থতায় সেই প্রস্তাব মেনে নেয় ওই হাসপাতাল। আপাতত হাসপাতালের সিস্টার, আয়ার স্নেহ, আদর–যত্নেই বেড়ে উঠবে কার্তিক–মামনির সন্তান।

আরও পড়ুন:– জলে ন্যাপথালিন! আশঙ্কা বাড়তে পারে বন্ধ্যত্ব, অ্যাজ়মা–ক্যান্সারও, জানুন বিস্তারিত

শনিবার সকালে রানিগঞ্জের ওই বেসরকারি হাসপাতালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন বছর ৩২–এর মামনি বাউড়ি। চিকিৎসক বিজন মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। বিকেলে সিজ়ারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানোর পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় মামনির। কিছুক্ষণ পরই মৃত্যু হয় তাঁর। এই খবর পাওয়ার পর পরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পশ্চিমবঙ্গ বাউড়ি সমাজ শিক্ষা সমিতির নেতৃত্বে রাতেই ঘটনাস্থলে হাজির হন স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রসূতির মৃত্যুর কারণ জানতে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তের দাবি জানান। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সংলগ্ন ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান ওই সংগঠনের কয়েকশো কর্মী–সমর্থক ও স্থানীয় নেতৃত্ব। বিক্ষোভের মাঝে তাঁদের তরফ থেকেও প্রশ্ন ওঠে, ‘মা–হারা শিশুটিকে এ বার কে দেখভাল করবে? বাড়িতে ওর আর কেউ নেই।

আরও পড়ুন:– অবিবাহিত যুগলদের জন্য বন্ধ হলো OYO রুম, নতুন নিয়ম জানেন তো?

ইতিমধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় সড়কে হাজির হন রানিগঞ্জ থানার পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য শোনেন রানিগঞ্জ থানার ইনস্পেক্টর ইনচার্জ (আইসি) বিকাশ দত্ত। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রাজেন্দ্রপ্রসাদ খৈতান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে কথা বলেন। আইসির বক্তব্য, ‘শিশুটির পরিবারে কেবল ওর বাবা রয়েছে। শিশুটিকে দেখার জন্য বা ওর বাবাকে পরামর্শ দেওয়ার মতোও তেমন কেউ নেই। তাই হাসপাতালের সিস্টার, আয়া ও চিকিৎসকরা অন্তত ছ’মাস দায়িত্ব নিক শিশুটির। একটু বড় হলেই ও ঘরে ফিরে যাবে।’

ব্যাপক বিক্ষোভ, জাতীয় সড়ক অবরোধ ও উত্তেজনার মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই প্রস্তাব মেনে নেন। তার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রাজেন্দ্রপ্রসাদ বলেন, ‘অর্থ সংগ্রহ করে এই হাসপাতাল চলে। তাই ওই পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু শিশুটি এখানে কয়েক মাস থাকলে তাকে দেখভালের দায়িত্ব অবশ্যই আমাদের সিস্টার ও আয়ারা নেবেন। কোনও চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকার প্রয়োজন পড়লে সেই সুবিধাও মিলবে।’ হাসপাতালের এই আশ্বাসে চিন্তামুক্ত কার্তিক বলেন, ‘মায়ের বিকল্প তো কেউ হয় না। তবে আমার বিশ্বাস, হাসপাতালের সিস্টার–আয়ারা আমার ছেলেকে তাঁদের সন্তানের মতোই রাখবেন।’

আরও পড়ুন:– নতুন বছরে পোস্ট অফিস চালু করল নতুন নিয়ম। এই কাজ না করলে লেনদেন বন্ধ। বিপদে পড়ার আগে জেনে নিন

 

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন