বারাণসীতে আলোচনার কেন্দ্রে ‘লুকনো’ মন্দির, কোথায় মিলল খোঁজ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। তারই লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদ। তার থেকে ঠিক ১০ মিনিটের হাঁটাপথ বারাণসীর গোদলিয়া বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় গমগম করে এই এলাকা। বেনারসী শাড়ির বাজার হিসেবে বিখ্যাত এই এলাকা। কিন্তু সম্প্রতি একেবারেই অন্য একটি বিষয়ের জন্য শিরোনামে রয়েছে এলাকাটি। দি প্রিন্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বুধবার, বেশ কয়েকজন লোক সেখানে এসে শাঁখ বাজিয়ে একটি বিশেষ ঘোষণা করেছেন। ওই এলাকায় একটি মন্দির অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, সেই মন্দির ছিনিয়ে আনতে হবে। যাঁরা এই দাবি করেছেন, তাঁদের দাবি, তাঁরা ‘সনাতন রক্ষা দল’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য।

ওই এলাকায় বাজারের ঠিক মাঝেই রয়েছে একটি পুরনো মন্দির, নিত্য পুজোর জন্য এটির ব্যবহারও হয় না। বারাণসীর মতো পুরনো শহরে এমন মন্দির নানা জায়গায় আকছার দেখা মেলে। এ বার ওই মন্দিরই আলোচনার কেন্দ্রে। বুধবারের পর থেকে ওই মন্দির পাহারায় রয়েছে পুলিশবাহিনী। যে এলাকায় ওই মন্দিরটি রয়েছে, সেটি মুসলিম প্রধান এলাকা। সেখানেই ‘সনাতন রক্ষা দল’-এর নামে ওই ঘটনা উত্তেজনা বাড়িয়েছে। তাদের দাবি, এই মন্দিরটি আদতে ভগবান শিবের, এটি দখল করে নেওয়া হয়েছে। প্রিন্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই এলাকার বাসিন্দা আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘মন্দিরটি সবার সামনে রাস্তার উপর রয়েছে। কোনওদিন কোনও ক্ষতি করা হয়নি।’

আরো পড়ুন: হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা পাকিস্তানের ২০ গুণ বাংলাদেশে, তথ্য বিদেশ মন্ত্রকের 

 

যদিও সনাতন রক্ষা দলের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শর্মার দাবি, ওই মন্দিরটি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। ওই মন্দিরটিতেই প্রার্থনার করার দাবি জানিয়েছে বারাণসীর জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, মদনপুরা এলাকায় এমন আরও মন্দির রয়েছে যেগুলি ‘হারিয়ে’ গিয়েছে, সেগুলিকে উদ্ধার করার ডাকও দিয়েছেন তিনি। প্রিন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কন্দ পুরাণের অন্তর্গত কাশী খণ্ড-এর প্রসঙ্গ তুলে মন্দিরের তালিকা তৈরি করছেন তিনি।

এই ঘটনা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গিয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ওই মন্দির অন্তত আড়াইশো বছরের পুরনো। বুধবার, সনাতন রক্ষা দলের দাবি জানানোর পরে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রিন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ জানিয়েছে ওই এলাকায় কোনও সমস্যা নেই। শান্তি বজায় রয়েছে। প্রিন্টকে দশাশ্বমেধ থানার স্টেশন অফিসার প্রমোদ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ওই মন্দিরে পুজো দেওয়া নিয়ে কোনও আপত্তিও নেই স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে।

আরো পড়ুন: অ্যামাজন প্রাইম মেম্বারশিপের নিয়মে বদল, আপনার সাবস্ক্রিপশন রয়েছে?

যদিও স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের দাবি, এমন উত্তেজনার কারণে ধাক্কা লাগছে ব্যবসায়। ওই এলাকায় একাধিক ব্যবসায়ীকে ফোন করে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

মদনপুরের যে মন্দির নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, সেই জমির মালিক এখন মহম্মদ জাকি। তিনি পরিবার নিয়ে ওখানেই থাকেন। প্রিন্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর পূর্বপুরুষ ১৯১৭ সালে এক বাঙালি হরিহর দাসের থেকে ওই সম্পত্তি কিনে নেন। তাঁর দাবি, এই মন্দির ওই পরিবারের ব্যক্তিগত ছিল। কোনওদিনই বাইরের কেউ এখানে আসতেন না। হাতবদলের পরেও ওই মন্দিরে হাত দেওয়া হয়নি। খোলা না হলেও বাইরে থেকে যতটা সম্ভব দেখভাল করা হয়েছে মন্দিরের। তিনি বলছেন, ‘জেলা প্রশাসন ঠিক করবে এ বার কী হবে। কেউ এসে এখানে পুজো দিতেই পারেন, আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’ ওই মন্দিরটি থেকে খুব বেশি হলে ১০০ মিটার দূরে রয়েছে ২টি শিব মন্দির। যেখানে নিয়মিত পুজো হয়। স্থানীয় দোকানদারদের দাবি, মুসলিম পরিবারের বাড়িরই একটি অংশে ওই মন্দির রয়েছে।

আরো পড়ুন: বিনামূল্যে রেশন সামগ্রীর সঙ্গে 1000 টাকা পাবেন? বিস্তারিত জানতে পড়ুন

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন