Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- যতদিন যাচ্ছে শুকিয়ে যাচ্ছে কলকাতার ভূগর্ভ। দ্রুত নামছে জলস্তর। নীচের মাটি আলগা হচ্ছে। বিপদ বাড়ছে শহরবাসীর। এ নিয়ে চিন্তিত পরিবেশকর্মী থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়াররা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে ভাবে কলকাতায় ভূগর্ভের জলস্তর নামছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে বড়সড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। মাটি আলগা হয়ে বসে যেতে পারে বাড়িঘর। শহরে যে সব ব্রিজ এবং ফ্লাইওভার রয়েছে, সেগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাঘাযতীনে মাটি বসে আস্ত একটা চারতলা বাড়ি হেলে পড়ার পর এই বিষয়টি ফের আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের ব্যাখ্যা, ভূগর্ভ থেকে যদি অনবরত জল তোলা হয় এবং রিচার্জ না–হয় তা হলে ভূগর্ভে জলশূন্যতা তৈরি হয়। সেটা হলে বিল্ডিং, রোড, ফ্লাইওভার সব ড্যামেজ হবে। মনে করা হচ্ছে, কলকাতা শহর বছরে ২০ মিলিমিটার করে বসবে। তাঁর কথায়, ‘যেহেতু শহরটা নরম মাটির উপরে, সে জন্যে এটা বেশি বসবে। সে জন্যে বাড়ি করার আগে অতি অবশ্যই মাটি পরীক্ষা করা দরকার। এ ক্ষেত্রে কংক্রিটটা যদি দুর্বল হয় তা হলে ক্ষতিও বেশি হবে।’
আরও পড়ুন:– ‘বিষাক্ত’ দিল্লির বাতাস, সামাল দিতে GRAP 4-এ ফিরল দেশের রাজধানী, বিস্তারিত জানুন
কলকাতা পুরসভার টাউন প্ল্যানিং বিভাগের প্রাক্তন চিফ ইঞ্জিনিয়ার দীপঙ্কর সিং বলেন, ‘কলকাতা শহরে যত ডিপ টিউবওয়েল আছে সেগুলি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। তা না হলে ভূগর্ভের জলস্তর নামতেই থাকবে। এর ফলে ভবিষ্যতে যদি শহরে ছোটখাট ভূমিকম্প হয় তা হলে কলকাতার মানুষকে বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতে পারে।’
পুরসভার রিপোর্ট বলছে, প্রায় দু’দশক আগে কলকাতা শহরে ভূগর্ভস্থ জলস্তর ছিল ৭–১০ মিটারের মধ্যে। সেটা এখন ১৪–১৬ মিটারে নেমে গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলিপুর, পার্ক সার্কাস, বাবুঘাট এবং বালিগঞ্জ। গড়িয়ার কাছে জলস্তর নেমে গিয়েছে ৮–১০ মিটারে। বাঁশদ্রোণীতে সেটা আবার ৯–১১ মিটার।
সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকাতেও জলস্তর আগের থেকে অনেকটাই নেমে গিয়েছে। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এক ইঞ্জিনিয়ারের ব্যাখ্যা, ইএম বাইপাসের পাশে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকায় নতুন নতুন জনবসতি গড়ে উঠছে। সেখানে পুরসভার জলের পাইপলাইন না থাকায় লোকজন ভূগর্ভের জলই ব্যবহার করছেন। সে জন্যেই ওই তল্লাটেও জলস্তর নেমে গিয়েছে। পুকুর ও জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘এখন আর নতুন করে কাউকে ডিপ টিউবওয়েল বসানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। হাজারখানেকের মতো ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে শহরে। তবে কেউ কেউ বেআইনি ভাবে ভূগর্ভের জল তুলছেন। সেটাও যাতে না হয় সেটা আমরা দেখব।’
আরও পড়ুন:– হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বন্ধের খবরে হুহু করে বাড়ল আদানি গোষ্ঠীর স্টকের দাম
আরও পড়ুন:– সরকারি কর্মীরা পাবেন 25 লাখ টাকা। অবসরের পর বিশেষ সুবিধার ঘোষণা করল সরকার। দেখে নিন বিস্তারিত