Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- নতুন বছরে কি নতুন পথে বাংলাদেশ? আগামিকাল, মঙ্গলবার ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ বা ‘প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভলিউশন’ প্রকাশ করতে চলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিনের মতো ফের ওই দিন সবাইকে ফের মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ রবিবার জানিয়েছেন, ওই দিন ‘নতুন বাংলাদেশ’–এর ঘোষণা করা হবে। তাঁর কথায়, ‘এই ঘোষণাপত্রে আগামীর বাংলাদেশের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। ৩১ ডিসেম্বর নাৎসিবাদী আওয়ামি লিগকে বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে। মুজিববাদী সংবিধানকে (বাংলাদেশের সংবিধান) কবরে পাঠানো হবে৷’ এই ঘোষণার পরে স্বাভাবিক ভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে, আগামী বছরে কি তা হলে নতুন সংবিধান রচনার পথেও এগোবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন?
আরো পড়ুন:– ১১ নম্বরে রোজ ১১১ মিনিট! আয়ু বাড়ায় ১১ বছর, দাবি গবেষণায়। বিস্তারিত জানুন
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে হাসনাত আরও বলেন, ‘এটা নির্দিষ্ট কোনও দলের বা গোষ্ঠীর প্রোক্লেমেশন নয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারিত জাতি। আর যেন প্রতারিত না হই, সে জন্য এই ইস্তেহার ঘোষণা করা হবে। গত ৫ অগস্টই এটা ঘোষণা করা উচিত ছিল। সেই সময়ে এটা করতে না পারায় স্বৈরাচারের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। আমরা চাই, যেখান থেকে এক দফা ঘোষণা (হাসিনার পদত্যাগ) করা হয়েছিল, সেখান থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা করতে।’
যদিও এই ঘোষণার সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই বলে এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘এটা একটা প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ। আমরা প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ হিসেবেই দেখছি। এর সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পৃক্ততা নেই।’
বাংলাদেশে পালাবদলের পরে এই মুহূর্তে একেবারেই কোণঠাসা হাসিনার দল আওয়ামি লিগ। যদিও বিএনপি–ও যে এ দিনের ঘোষণায় স্বস্তিতে নেই, সেটাও স্পষ্ট। খালেদা জিয়ার দলের নেতা ও তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘ছাত্ররা একক ভাবে জুলাই-অগস্টের আন্দোলনের ক্রেডিট নিতে চায়। এটা ঠিক নয়। শহিদের রক্তে লেখা সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কষ্ট হয়। সংবিধান একটি রাফ কাগজ নয়, চাইলেই ছুড়ে ফেলে দেওয়া যায়!’
আরো পড়ুন:– ভয়াবহ ১০ বিপর্যয় যা বিপুল ক্ষতি করেছে এ বছরে, জানুন বিস্তারিত
হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্বতন আওয়ামি সরকারকে একাধিক বার ‘ফ্যাসিবাদী সরকার’ বলে কাঠগড়ায় তুলেছেন বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তবে এ দিন হাসনাতের ‘কবরে পাঠানো’র হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্বাস বলেছেন, ‘মেরে ফেলব, কেটে ফেলব— এই ধরনের কথা কিন্তু ফ্যাসিবাদীদের মুখ থেকেই আসে। ছাত্ররা যে ভাবে আজ কথা বলছে, তাতে ’৭১ সালে দেশ স্বাধীন করে আমরা কী করলাম বা কী পেলাম, এই প্রশ্ন জাগে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন সমন্বয়ক ও বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘এই ঘোষণাটি সামগ্রিক ভাবে গোটা বাংলাদেশে লিখিত অবস্থায় থাকবে। পুরোনো সিস্টেমগুলোকে রিজেক্ট করে নতুন সিস্টেম তৈরি করবে। আগামীতে মানুষ যখন ভোট দেবে, তখন তারা বুঝতে পারবে কোন প্রেক্ষাপটে অভ্যুত্থান হয়েছিল।’
হাসনাতের কথায়, ‘১৯৭২–এর সংবিধানের মূলনীতিগুলোর মাধ্যমে ভারতীয় আগ্রাসনের ইনস্টলমেন্ট হয়েছে। ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট করা হবে, মুজিববাদী সংবিধান কী ভাবে মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে বিনষ্ট করেছে এবং ঠিক কী ভাবে আমরা এর বদল চাই।
’আরো পড়ুন:– জ়িনাতকে ধরতে বন দপ্তরের সফল অভিযানকে কুর্নিশ মমতার, কী লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী?