ভারতে চাকরির বাজারে বেতন বৈষম্যের করুন চিত্র উঠে এল সমীক্ষায়, বিস্তারিত জানুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভারতে চাকরির বাজারে বেতন বৈষম্যের সমস্যা খুব নতুন নয়। এ নিয়ে অভিযোগও দীর্ঘদিনের। কোনও কোম্পানির ‘টপ বস’-দের মাইনে সাধারণ কর্মীদের থেকে কয়েক গুণ বেশি। এর পাশাপাশি দেশে মূল্যবৃদ্ধি যে হারে হচ্ছে, সাধারণ কর্মীদের বেতন সে হারে বাড়ছে না। এর জেরে মাইনের ফারাক দিনে দিনে বাড়ছে। একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। সেখানেই জানা গিয়েছে, অনেক সংস্থাতেই শীর্ষকর্তারা যে অঙ্কের বেতন পান, তা ছুঁতে সাধারণ কর্মীর লেগে যেতে পারে প্রায় ৫০০ বছর।

নিফটি ২০০ সূচকে যে সমস্ত নথিভুক্ত সংস্থা রয়েছে, তার মধ্যে প্রথম সারির ১১০টি সংস্থার কর্মী এবং সংস্থার টপ অফিশিয়ালদের বেতনের ফারাকের হিসাবে করা হয়েছে এই রিপোর্টে। ২০১৯ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত সেই হিসাব রয়েছে। কোম্পানির শীর্ষ কর্তা বোঝাতে সিইও, এমডি, চেয়ারপার্সন— পদমর্যাদার ব্যক্তিদের ধরা হয়েছে। সাধারণ কর্মীদের মধ্যে সবার বেতন কাঠামো এক নয়। তাই ওই সমস্ত কর্মীর বেতনের গড় করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই হয়েছে এই তুলনা। সেখানে দেখা গিয়েছে, অতিমারি পরবর্তী সময়ে এই বেতনের বৈষম্য বেড়েছে। অতিমারির আগে ২০১৯ অর্থবর্ষে বেতনের ফারাকের অনুপাত ছিল ১১ শতাংশ। সেটাই ২০২৪ অর্থবর্ষে বেড়ে হয়েছে ১৬ শতাংশ।

শীর্ষকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির হারও গত কয়েক বছরে বেড়েছে। ২০১৯ অর্থবর্ষে শীর্ষকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ৬১ শতাংশ। সেটাই বেড়ে ৬৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। ২০১৯-এ শীর্ষ কর্তাদের গড় বেতন ছিল সাড়ে ৭ কোটি টাকা। ২০২৪-এ তা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ কোটি টাকা। কিন্তু সাধারণ কর্মীদের বেতন এই হারে বাড়েনি বলে উঠে এসেছে রিপোর্টে।

আরও পড়ুন:– বদলে যাচ্ছে DA-DR হিসেবের সূত্র-পদ্ধতি! কতটা বাড়বে মাইনে-পেনশন? দেখে নিন

যদিও সমস্ত সেক্টরে কর্মীদের বেতন এক নয়। ফিনানশিয়াল, পরিকাঠামোর মতো সেক্টরে সাধারণ কর্মীদের গড় বেতন ৫ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা। সমীক্ষায় থাকা সংস্থাগুলির দুই তৃতীয়াংশেরই সাধারণ কর্মীদের বার্ষিক গড় বেতন ১০ লক্ষ টাকা বা তার কম। কিছু কোম্পানির কর্মীদের গড় বেতন ৫ লক্ষ টাকা বা তার কম। সেখানে টপ অফিশিয়ালদের বার্ষিক বেতন কোটির ঘরে। অর্থাৎ ওই বেতনে পৌঁছতে কর্মীদের কয়েকশো বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় সংস্থার শীর্ষকর্তার মুখে শোনা গিয়েছে, দীর্ঘ ‘ওয়ার্কিং আওয়ার্স’-এর কথা। তার পরই এই বেতন বৈষম্যের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশি। যেমন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণমূর্তি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের পক্ষে সওয়াল করেছেন। লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর কর্তা সুব্রহ্ম্যণম সংস্থার কর্মীদের ৯০ ঘণ্টা কাজের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এর পর সোশ্যাল মিডিয়া-সহ বিভিন্ন মাধ্যমে বেতনের ফারাক নিয়ে চর্চা চলেছে। এই রিপোর্ট সেই সত্যকে আরও বেশি করে সামনে এনেছে। ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, পুনাওয়ালা ফিনকর্পের শীর্ষ অফিশিয়ালদের থেকে সাধারণ কর্মীদের বেতনের ফারাক ২ হাজার ৬৭৯ গুণ। টেক মাহিন্দ্রায় এই ফারাক ১ হাজার ৩৭৯ গুণ। উইপ্রোতে এই ফারাক ১ হাজার ৭০১ গুণ। এই বৈষম্য ঘুচবে না ধরে নিয়েই হয়তো কাজ করে যেতে হবে সাধারণ কর্মীদের।

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন