ময়না-তদন্ত, ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই দেহ পাঠাচ্ছে ইউপি! বিপাকে পরিজন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের দেহের না হচ্ছে ময়নাতদন্ত, না দেওয়া হচ্ছে ডেথ সার্টিফিকেট! হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হিন্দিতে লেখা একটি চিরকুট। তাতে নেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের কারও স্বাক্ষর। থাকছে শুধু মৃতের নাম–ঠিকানা আর যিনি মৃতদেহ নিচ্ছেন, সেই পরিজনের নাম ও স্বাক্ষর। এমন চিরকুট–সহ দেহ বাড়িতে এনে বেকায়দায় পড়ছেন পরিজন। দেখা দিচ্ছে আইনি জটিলতা। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বিষয়টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ডেথ সার্টিফিকেট না পাওয়া গেলে মৃতদেহ সৎকার হবে কী করে, সে প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য সরকার সৎকারের ব্যবস্থা করলেও ডেথ সার্টিফিকেটের কী ব্যবস্থা হবে—দেখা দিয়েছে সংশয়। ডেথ সার্টিফিকেট না পাওয়া গেলে মৃতের পরিজন কোনও ভাবেই মৃতের সম্পত্তির উত্তরাধিকারও দাবি করতে পারবেন না।

মহাকুম্ভে এই মহাবিভ্রাটে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। নবান্নের এক কর্তার কথায়, ‘এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, তিন–চার জন মারা গিয়েছেন বাংলার। দু’জনের মৃতদেহ ফিরেছে রাজ্যে। রাজ্য সরকারই ময়নাতদন্ত ও সৎকারের ব্যবস্থা করছে। পরে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’ তাঁর বক্তব্য, ‘মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। জানি না কী করে ময়নাতদন্ত ছাড়া, ডেথ সার্টিফিকেট না দিয়ে মৃতদেহ উত্তরপ্রদেশ সরকার পাঠাচ্ছে! মৃতদের পরিজনকে যে চিরকুট দেওয়া হয়েছে, তার আইনি বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’

আরও পড়ুন:– পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে দেশের একমাত্র নাম ছাড়া রেলস্টেশন, কোথায় রয়েছে সেই স্টেশন ?

এখনও রাজ্যের বহু মানুষ মহাকুম্ভে নিখোঁজ। তালিকা লম্বা হচ্ছে। এই নিখোঁজদের অনেকে হয়তো পরে দেখা যাবে, মৃত। নিখোঁজদের তালিকা তৈরি করে এবং এ রাজ্যের কত মানুষ মারা গিয়েছেন— সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। ডেথ সার্টিফিকেট না পাওয়া গেলে সরকারের পক্ষে আর্থিক সাহায্য দেওয়াও সমস্যার।

টালিগঞ্জের অশ্বিনীনগরের বাসিন্দা মৃত বাসন্তী পোদ্দারের ছেলে সুরজিৎ পোদ্দার বলেন, ‘প্রয়াগরাজের এক কার্যালয় থেকে একটা ছাপানো চিরকুট হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ছোট্ট কাগজে হিন্দিতে লেখা, আমি ছেলে হিসেবে মায়ের মৃতদেহ গ্রহণ করলাম। নীচে কোনও প্রশাসনিক কর্তার স্বাক্ষর নেই, আছে শুধু আমার সই!’ এমনই এক খণ্ড কাগজ দিয়ে পরিজনের সঙ্গে এক কনস্টেবলকে দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাসন্তীদেবীর মৃতদেহ। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির গুড়াপপাটনা গ্রামের ঊর্মিলা ভুঁইয়ার (৭৫) মৃতদেহ একই ভাবে তাঁর পরিজনের হাতে তুলে দিয়ে রাজ্যে পাঠিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

কলকাতা পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাসন্তীদেবীর মৃতদেহ প্রয়াগরাজ থেকে কলকাতায় রওনা হওয়ার খবর পেয়েই তাঁর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ফোনে সঙ্গী উত্তরপ্রদেশ সরকারের পুলিশ কনস্টেবলকে বলি, ডেথ সার্টিফিকেট সমেত বডি আনবেন। অন্যথায় লাশ নিয়ে ফিরে যান, ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আসুন। ওই কনস্টেবল জানিয়ে দেন, সম্ভব নয়, কারণ অনেকটা চলে এসেছেন!’

বৃহস্পতিবার মৃতের বাড়িতে গিয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘ইউপির সরকার যা করছে, তা হৃদয়হীন। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে কথা হয়েছে আমার, তিনি আমায় জানিয়েছেন, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পূর্ণ মর্যাদায় মৃতদেহ দাহের ব্যবস্থা করা হবে।’ ময়ানাতদন্ত, ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া মৃতের পরিবারের ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে অরূপ জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকার মানবিকতার কথা বিচার করেই যাবতীয় সাহায্য করবে।

অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মহাকুম্ভে ঊর্মিলা ভুঁইয়ার মৃত্যুর খবর জেনে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মর্গেই ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মৃতার ছেলে দুলাল ভুঁইয়া বলেন, ‘ময়নাতদন্ত করেই সৎকার করব।’

আরও পড়ুন:– কোন লক্ষণগুলি দেখে বুঝবেন আপনি ডায়াবিটিসে আক্রান্ত? রইলো বিস্তারিত

আরও পড়ুন:– Jio Coin বাজারে আনলো আম্বানি। থাকছে একাধিক সুবিধা। কিভাবে কাজ করবে এই কয়েন? জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন