Bangla News Dunia , সুমি :- তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের বিচার চেয়ে প্রতিবাদ-আন্দোলন যত জোরালো হচ্ছে, ততই নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে স্বাস্থ্য প্রশাসনের অন্দরে। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ভবন- টেন্ডার, নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির পাশাপাশি উঠছে ছাত্র-শিক্ষকদের হুমকি, ডাক্তারদের ট্রান্সফার-পোস্টিং-প্রোমোশন ঘিরে টাকার খেলা, এমনকী মেডিক্যাল কাউন্সিলে চিকিৎসায় গাফিলতির বিচার ঘিরেও উঠছে আন্ডার টেবল লেনদেনের অভিযোগ। অন্তর্তদন্তে ‘এই সময়’।
চিকিৎসায় গাফিলতির একটি ছোটখাট মামলায় জড়িয়েছিলেন নদিয়ার এক প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। ২০১৭-য় ডেলিভারির পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের একটি অভিযোগ তাঁর নামে জমা পড়ে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে। চিকিৎসায় গাফিলতি প্রমাণিত হয়নি। চূড়ান্ত রায় বেরোয়নি। তার আগেই ২০১৮-তে ওই কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেই মামলা হিমঘরে চলে যায়।এত দিন পরে সম্প্রতি ওই চিকিৎসক ফোন পান কাউন্সিল অফিস থেকে। তাঁর দাবি, অচেনা কণ্ঠস্বর তাঁকে বলে, ‘পুরোনো ওই কেসটা ফের চালু করা হবে। মিটমাট করতে চাইলে ১৫ লক্ষ টাকা নগদে দিতে হবে নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে। নইলে পুরোনো মামলা খুঁচিয়ে ফের কাঠগড়ায় তোলা হবে তাঁকে।’ সন্ত্রস্ত ওই চিকিৎসক প্র্যাকটিস বাঁচাতে দরদাম করে ১০ লক্ষ টাকায় রফা করেন। বলাই বাহুল্য, সেই মামলায় চূড়ান্ত রায় গিয়েছে তাঁর পক্ষেই।
আরো পড়ুন :- বিরোধীদের জিভ ছিঁড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি ‘মমতা’র বিধায়কের
কয়েক মাস আগে একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন দক্ষিণ শহরতলির এক ইএনটি বিশেষজ্ঞ। তাঁর কেসটি ছিল ২০১৬-র। তিনিও সম্প্রতি ফোন পান কাউন্সিল অফিস থেকে। প্র্যাকটিসের বহর দেখে তাঁর থেকে ২২ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছিল। বেঁকে বসেন তিনি। তার ফল তাঁকে ভুগতে হচ্ছে এখন। পুরোনো কেস তো চালু হয়েইছে। তাঁর দাবি, এক রোগীকে দিয়ে ফের নতুন একটি অভিযোগও করানো হয়েছে ওই তাঁর বিরুদ্ধে।
রাজ্যের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, এ ভাবেই এখন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল চলছে তথাকথিত ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকদের অঙ্গুলিহেলনে। অভীক দে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসরা এখন সাসপেন্ড হয়ে গেলেও, তাঁদের আগেকার দাপাদাপির নমুনা দিতে গিয়ে এক চিকিৎসক বলছেন, ‘ভাবতে পারেন, মেডিক্যাল কাউন্সিলে বেশ কয়েকটি পিনাল অ্যান্ড এথিক্যাল কমিটি ছিল যেখানে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া অভীক কিংবা আরএমও বিরূপাক্ষ চেয়ারম্যান, অথচ তাতে সাধারণ সদস্য হিসেবে ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকী রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েক!’
তাই শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরেও রেডিয়োলজির প্রফেসর রেজ়াউল করিম বলছেন, ‘যে কাউন্সিল ডাক্তারদের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ছিনিমিন খেলে, সেই কাউন্সিলকে এখনই ভেঙে দেওয়া উচিত সরকারের।’ চিকিৎসকদের নীতি-নৈতিকতা দেখা এবং ডাক্তারদের রেজিস্ট্রেশন দেওয়াই কাউন্সিলের দায়িত্ব। অভিযোগ, গত কয়েক বছর ভুলভাল কেসে ডাক্তারদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিকে সামনে রেখে ‘টেবলের নীচে’ ডিল হচ্ছে। সম্মান ও রুজি বাঁচাতে বেশিরভাগ ডাক্তারই টাকা দিয়ে দিচ্ছেন।
কিছু চিকিৎসক দমে না গিয়ে মামলা লড়ছেন। তাঁদের সিংহভাগের বিরুদ্ধেই যাচ্ছে মেডিক্যাল কাউন্সিলের রায়। কখনও কয়েক মাস, কখনও এক বছরের জন্য কেড়ে নেওয়া হচ্ছে রেজিস্ট্রেশনও। অথচ প্রত্যেক ক্ষেত্রেই হাইকোর্টে সেই রায় চ্যালেঞ্জ করলে সেখানে খারিজ হয়ে যাচ্ছে কাউন্সিলের রায়!
বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধু সিনিয়র ডাক্তারদের থেকে টাকা তুলেই ক্ষান্ত হচ্ছে না কাউন্সিল। রেয়াত করা হচ্ছে না সদ্য এমবিবিএস পাশ করা চিকিৎসকদেরও। এক বছর ইন্টার্নশিপের পরে ডাক্তারি শুরু করতে রেজিস্ট্রেশন লাগে। অভিযোগ, সেই রেজিস্ট্রেশন দিতেও কিছু তরুণ-তরুণীকে টাকার জন্য ভোগাচ্ছে কাউন্সিল। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেকনজরে না থাকলে, হয় রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে না, অথবা ইন্টার্নশিপ শেষ করার শংসাপত্র পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না মেডিক্যাল কলেজ থেকে।
আরো পড়ুন:- ভয়াবহ বিশ্ব উষ্ণায়ন ! প্রমাণ মিলল চলতি বছরে
গত বছর টানা আট মাস এমন ভোগান্তি সহ্য করেছিলেন আরজি করের দুই ইন্টার্ন। তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের হাতে-পায়ে ধরেও লাভ হয়নি। মেলেনি নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট। শেষে আদালতের হস্তক্ষেপে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পান তাঁরা। মেলে রেজিস্ট্রেশন।
সন্দীপের পাশাপাশি তাঁর ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক অভীক, বিরূপাক্ষ, মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক, সৌরভ পাল, দীপাঞ্জন হালদারদের মতো চিকিৎসকরা ছিলেন মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিভিন্ন পিনাল অ্যান্ড এথিক্যাল কমিটিতে। তাঁদের দাপাদাপিতেই অতিষ্ঠ ছিল চিকিৎসক সমাজ।
চিকিৎসকরা অবশ্য ২০২২-এ এই কাউন্সিলের গঠন হওয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। ২০১৮ থেকে চার বছর অচলাবস্থা চলার পরে যে ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিল গঠিত হয়েছিল, তার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল আদালতে।
চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর চিকিৎসকেরা কলেজে কলেজে, এমনকী প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাসপাতাল থেকে ডাক্তারদের বদলি ও শাস্তির হুমকি দিয়ে ব্ল্যাঙ্ক ব্যালট তুলে ছাপ্পা ভোট মেরে নির্বাচনে জিতেছে। ভোটগণনার সময়েও ব্যাপক কারচুপি হয়। এই অভীক, বিরূপাক্ষরা রিগিং করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন।’
এই রকম খবর পেতে দয়া করে আমাদের চ্যানেল ফলো করুন
SSC GD Constable Recruitment 2024 : শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাশ, জেনে নিন বিস্তারিত👇🏻https://t.co/4WdIl4boGY
— Daily Khabor Bangla (@daily_khabor) September 8, 2024
— Daily Khabor Bangla (@daily_khabor) September 8, 2024
ভারতীয়দের নিয়ে সোজাসাপটা নিক ! বললেন, ‘ওরা তো…’https://t.co/SFRZPIVIhX
— Peek Medio (@peek_medio) July 29, 2024
মাত্র দুই বছরে 1300% বৃদ্ধি পেয়েছে এই শেয়ার, আপনার কাছে আছে এই শেয়ার ?https://t.co/EDhk1CG5fw
— Peek Medio (@peek_medio) August 28, 2024
৫০শে এসে ফুটন্ত যৌবন মালাইকার ! অর্জুনের পরে ফের মালাইকার জীবনে পুরুষ ?https://t.co/QPraDRAvIp
— Peek Medio (@peek_medio) July 17, 2024