রসুনে দেদার চিনা হানাদারি রাজ্যে, হতে পারে প্রাণঘাতী, কিভাবে চিনবেন ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পেঁয়াজ একাধিক বার ভুগিয়েছে। ফি–বছরই পেঁয়াজের দামের ঝাঁজ পোহাতে হয় আমজনতাকে। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় ধরে রসুন কখনও ভোগায়নি। এর আগে হয়তো সর্বোচ্চ ২০০–২৫০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়েছে রসুন। এ বার সেই দড়ই ৫০০ ছুঁয়েছে! আর এই মওকায় বাজারে ঢুকে পড়েছে চিনা রসুন।

এ দেশে এক দশক আগেই নিষিদ্ধ হয়েছিল চিনা রসুন। কারণ, ওই রসুন বিষাক্ত। নিয়মিত ব্যবহারে প্রাণঘাতীও হতে পারে। কিন্তু দেশি রসুনের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ রসুনের সঙ্গে মিশিয়েই বিকোচ্ছে চিনা রসুন। সম্প্রতি নদিয়ায় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রচুর চিনা রসুন।

কলকাতায় যদুবাবুর বাজার এবং লেক মার্কেটে কিছু চিনা রসুন নজরে এসেছে। সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি প্রান্তে শুল্ক বিভাগ প্রায় ১৬ টন চিনা রসুন বাজেয়াপ্ত করেছে। মূলত নেপাল হয়েই ঢুকছে এই রসুন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, নিবিড় পর্যবেক্ষণে সাদা চোখেই চিনে নেওয়া যায় চিনা রসুন।

সম্প্রতি গুজরাটের একটি বাজারে এক পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় ৭৫০ কেজি চিনা রসুন। অবাক হন অন্য ব্যবসায়ীরা। বাজার কমিটিই ঘটনাটি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে আনে। বাজার কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেখানে রোজই ২০০০ বস্তা রসুন বিক্রি হয়। সবই দেশি। তার মধ্যেই চিনা রসুন মেশানো হচ্ছিল। কম দাম এবং চটকদার চেহারার জন্যে দেশি রসুনকে টেক্কা দিয়ে ভারতীয় বাজার দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে চিনা রসুন। তবে দেশি রসুনের দাম তেমন বেশি ছিল না বলে সে ভাবে বাজার দখল করতে পারেনি এতদিন। শুল্ক বিভাগ এবং টাস্ক ফোর্সের নজরদারির ফলেও দেশের বাজারে সে ভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি ওই রসুন।

তবে নিষেধাজ্ঞা জারির পরে মূলত বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে চোরাচালান বেড়েছে বলে শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। চিন থেকে নেপাল সীমান্ত হয়ে এই রসুন ভারতে আনা হচ্ছে। কিন্তু কেন নিষিদ্ধ করা হলো চিনা রসুন? ২০১৪ সালে চিনা রসুন আমদানি বন্ধ করেছিল ভারত সরকার। পরীক্ষায় চিনা রসুনে ছত্রাকের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।

তার পরে ভারতে যে রসুন চিন থেকে পাঠানো হতো, তাতে মিথাইল ব্রোমাইড ব্যবহার করা শুরু হয়। রসুনকে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে কীটনাশক হিসাবে এই বিষাক্ত রাসায়নিকটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। এ ছাড়াও ব্যবহার করা হতো ক্লোরিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত মিথাইল ব্রোমাইড পেটে গেলে লিভার-কিডনি বিকল হতে পারে। দেখা দিতে পারে স্নায়ুর সমস্যাও। নষ্ট হতে পারে দৃষ্টিশক্তি। লালচে ভাব কাটিয়ে রসুনের কোয়া সাদা করতেও ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ।

দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ রসুন চাষ হয় মধ্যপ্রদেশে। ১৫ শতাংশ রসুন চাষ করে রাজস্থান। দুই আমেরিকা, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ২০২০ সালের পর থেকে ভারতীয় রসুনের চাহিদা বেড়েছে। অন্য দিকে, চিনের রসুনে ক্ষতিকারক উপাদানের উপস্থিতির কারণে বিদেশের বাজারে চাহিদায় ভাটা পড়েছে। আবার রপ্তানি বাড়ায় দেশি রসুনের চাহিদা ক্রমে বেড়েছে। তার ফলে বেড়েছে দামও। এ বছর দেশে রসুনের উৎপাদনও কম হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতেই চিন থেকে প্রায় অর্ধেক দামে আনা হচ্ছে রসুন।

চিনা নিন চিনে

চিনা রসুন সাদা ধবধবে। দেশি রসুন একটু হলদেটে বা ক্রিম রঙের। চিনা রসুনের কোয়া আকারে অনেকটাই বড়, ঝাঁজ কম। চিনা রসুনের খোসা মোটা। দেশি রসুনের খোসা পাতলা। দেশি রসুনের ঝাঁজ বেশি, কোয়া ভেঙে হাতে ঘষলে আঠালো ভাব থাকে

আরো পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কোন কাজকে সেরা মনে করতেন মনমোহন? কী নিয়ে ছিল আক্ষেপ?

আরো পড়ুন:– রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষায় আসছে আমূল বদল, সিলেবাস-পরীক্ষা পদ্ধতিতে কী কী পরিবর্তন হবে? জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন