রাতভর জ্বলছে হিটার, দমবন্ধ হয়ে কাশ্মীরে শেষ পরিবার

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ঘরের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু বাবা-মা ও তিন সন্তানের ৷ যার মধ্যে এক সন্তানের বয়স মাত্র 28 দিন ৷ রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে ৷ গৃহকর্তার নাম আজাজ আহমেদ ভাট ৷ তিনি শ্রীনগরের ললিত গ্র্যান্ড প্যালেসে বেসরকারি হোটেলে শেফ হিসেবে কাজ করতেন ৷ তারা মূলত উপত্যকার বারামুল্লা জেলার উরি তহসিলের বাসিন্দা ৷ কিন্তু তারা শ্রীনগরের উপকণ্ঠে পান্দ্রাথানে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ।

এই বিষয়ে বাড়ির মালিক মুখতার আহমেদ বলেন, “ওনারা দু’মাস আগে ভাড়া এসেছেন ৷ মৃত আজাজের মা আমাকে ফোন করে জানান তিনি বিকেল 4টে থেকে ছেলেকে ফোনে পাচ্ছেন না ৷ এরপর আমি আবাসনে গিয়ে দেখে আসি ৷ দরজায় ধাক্কা দিলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি ৷ দরজা ধাক্কা দিয়ে খোলা হলে ভাট, তাঁর স্ত্রী এবং তিন নাবালক শিশুকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ।”

সরকারি এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘর গরম করার জন্য হিটার চালিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ওই দম্পতি ৷ তাতেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে । দেহগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজ শ্রীনগরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ৷ তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:– ‘এত নীচে নামবে…’, বিজেপি নেতার মন্তব্যে কান্নায় ভেঙে পড়লেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী

তীব্র ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে কাশ্মীরের লোকেরা ঘরের উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য রুম হিটার ব্যবহার করে ৷ তবে সেগুলি যদি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে ঘরের ভিতরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়ে কার্বন মনোক্সাইড বৃদ্ধি পায় ৷ সুতরাং এই ধরনের কিছু চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে ৷ গত কয়েকদিনে উপত্যকায় এটি দ্বিতীয় ঘটনা । এর আগে, বারামুল্লা জেলার তাংমার্গ এলাকায় টিন-শেড পুড়ে যাওয়ায় দুই নাবালকের মৃত্যু হয়।

 

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার এবং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ কাশ্মীরের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ডঃ আরশেদ ট্রাগ, শীতকালে দায়িত্বশীলভাবে ঘর গরম করার গ্যাজেটগুলি ব্যবহার করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি নিম্নলিখিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন :

ঘরে সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন : নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছাড়া বন্ধ ঘরে গ্যাস বা কেরোসিন হিটার ব্যবহার এড়িয়ে চলুন ৷ কারণ এটি কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে ।

ঘুমানোর আগে বন্ধ করুন : ঘুমানোর আগে সর্বদা গ্যাস হিটার, তেল-ভিত্তিক হিটার এবং বৈদ্যুতিক কম্বল বন্ধ করুন ।

বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি : ঘর গরম করার বিভিন্ন গ্যাজেট প্রতি বছর সার্ভিসে দিন ৷ যাতে সেগুলি নিরাপদে কাজ করে ।

আরও পড়ুন:–  একা মায়ের লড়াইয়ে উদ্ধার পাচার হওয়া কন্যা, পড়ুন রুদ্ধশ্বাস কাহিনী

ওভারলোডিং সার্কিট এড়িয়ে চলুন : বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট প্রতিরোধ করতে একাধিক হিটিং ডিভাইস এক সকেটে প্লাগ করা থেকে বিরত থাকুন ।

কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর ইনস্টল করুন : ঘরে রাখুন কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর ৷ যার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন ঘরে কার্বন মনোক্সাইড ভরে গিয়েছে ৷ বিশেষ করে যদি গ্যাস-ভিত্তিক হিটার ব্যবহার করা হয় তাহলে এই ডিটেক্টর রাখা জরুরি ৷

দাহ্য বস্তু দূরে রাখুন : ঘর গরম করার যন্ত্র এবং পর্দা, কাগজপত্র এবং আসবাবপত্রের মতো দাহ্য বস্তুর মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন ।

সার্টিফাইড ডিভাইস ব্যবহার করুন : ঘর গরম করার গ্যাজেট কেনার সময় সঠিক সার্টিফিকেট দেখে কিনুন ৷ দেখে নিন সেটি নামীদামি প্রতিষ্ঠানের দ্বারা প্রত্যয়িত হয়েছে কি না ।

অন্য একজন সিনিয়র মেডিকো, ডাঃ ওয়েইস এইচ দার জানান, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বাড়ির ভিতরে একটি নিরাপদ তাপমাত্রা বজায় রাখা ৷ তবে নিরাপত্তার সঙ্গে আপোস করা উচিত নয় । যদিও ঘরের তাপমাত্রা 19 ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার উপরে রাখা স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৷ বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য । যাইহোক, ঘর গরম করার পদ্ধতিগুলির নিরাপত্তার সঙ্গে আপোস করা উচিত নয় । সঠিক সতর্কতা জীবন বাঁচাতে পারে এবং শীতকালে দুঃখজনক ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারে ৷

আরও পড়ুন:– ২৫,০০০ টাকা বেতনে সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে মেডিকেল কলেজে কর্মী নিয়োগ চলছে , আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখে নিন ,

 

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন