শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলিতের উৎপীড়ন বন্ধে কী ব্যবস্থা ? জানুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পরাধীন ভারতে জাতিগত পরিচয়ের সূত্রে ছাত্রজীবনে যে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বি আর আম্বেদকর, তাঁর নেতৃত্বে তৈরি স্বাধীন দেশের সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তিতেও সেই ঘৃণ্য ট্র্যাডিশনে যতি পড়েনি! আজও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্যমূলক আচরণ, দুর্ব্যবহার সমানে চলছে বলেই অভিযোগ। তার জেরে ছাত্রছাত্রীদের আত্মহত্যার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও বিরল নয় এ পোড়া দেশে। এই অবস্থা বদলাতে, পড়ুয়াদের হয়রানি ঠেকাতে কার্যকরী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে— ভারত সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মূ‍ল্যায়নকারী সংস্থা ন্যাক–কে এ বার তার জবাব দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট।

বিহিত চেয়ে পাঁচ বছর আগে দায়ের জনস্বার্থ মামলাটি বেবাক দলিত–আদিবাসীর নীরব আর্তনাদের মতোই এতদিন পড়েছিল ঠান্ডাঘরে। অবশেষে শুক্রবার বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ ঠান্ডাঘর থেকে সেই মামলা বের করে এনে শুনানি করে। তার পরেই জবাব তলব করা হয়েছে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে এ বিষয়ে বিশেষ দায়িত্ব নিতেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্যের অবসান চেয়ে, পড়ুয়াদের নিগ্রহ বন্ধের দাবিতে ২০১৯–এ এই মামলা করেছিলেন সন্তানহারা দুই মা—২০১৬–য় রহস্যজনক ভাবে মৃত হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক–পড়ুয়া রোহিত ভেমুলার মা রাধিকা এবং ২০১৯–এ আত্মঘাতী মহারাষ্ট্রের মেডিক্যাল স্টুডেন্ট পায়েল তাদভির মা আবেদা সালিম তাদভি। পাঁচ বছর আগে একবার মাত্র শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট ইউজিসি–কে নোটিস ইস্যু করেছিল। ওই পর্যন্তই! তার পরেই মামলা চলে গিয়েছি‍ল ঠান্ডাঘরে। বিষয়বস্তুর গুরুত্ব বিবেচনা করেই জমে থাকা পুরোনো মামলার পাহাড় থেকে এই মামলাটি শুনানির তালিকায় আনা হয়েছে বলে জানান বিচারপতি সুর্য কান্ত।

মামলাকারীদের পক্ষে সওয়ালে বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতিগত পরিচয়ের সূত্রে বৈষম্যমূলক আচরণে রাশ টানতে আগের সরকারের সময়ে সেই ২০১২–য় একটি রেগুলেশন (প্রোমোশন অফ ইক্যুইটি ইন হায়ার এডুকেশন ইনস্টিটিউশন) তৈরি করেছিল ইউজিসি। কিন্তু ১২ বছরেও সেই রেগুলেশনের বাস্তবায়নে কার্যত কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। সেই রেগুলেশন অনুযায়ী সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইক্যুয়াল অপরচুনিটি সেল’ তৈরি হওয়ার কথা। ইউজিসি রেগুলেশনে এই সেল–এর দায়িত্বে এক জন অফিসারকে রাখার কথা বলা হয়েছিল। সেটা এমনিতেই অপ্রতুল বন্দোবস্ত।

আরও পড়ুন:– এখনই কিনবেন না এই সব স্মার্টফোন, দিন কয়েক পরেই কমতে পারে দাম

সেল–এর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো, তাতে সমাজকর্মীদের যুক্ত করাও একান্ত জরুরি। সে–সব তো হয়ইনি, ৮০০–র বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশয় সেল তৈরিই হয়নি! পরিসংখ্যান তুলে ধরে জয়সিং জানান, আইআইটি–র মতো শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও জাতিগত বৈষম্য ও উৎপীড়নের বহ‍র নিদারুণ, যার পরিণতিতে তফসিলি জাতি–উপজাতি এবং দলিত বর্গের অন্তত ১১৫ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন গত দু’দশকে।

বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতও উদ্বিগ্ন। ১২ বছর আগে তৈরি রেগুলেশনের বাস্তব রূপায়ণে যা করণীয়, আদালত তা করবে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে ইউজিসি–কে বিশ্ববিদ্যালয় ধরে ধরে ‘ইক্যুয়াল অপরচুনিটি সেল’ তৈরি কতটা কী হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান পেশের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

আরও পড়ুন:– ক্যানসারের চিকিৎসায় বাঙালি বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার, জানুন বিস্তারিত

 

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন