Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভাগ্যে থাকলে কী না হয়! একটানা ২৫ বছর নিখোঁজ থাকা এক মহিলাকে মৃত বলে ধরে নিয়ে তাঁর পারলৌকিক কাজও সেরে ফেলেছিলেন পরিবারের লোকজন। করবেন নাই বা কেন? ২৫ বছর, মানে আড়াই যুগ অপেক্ষা করেও মহিলার খোঁজ না পেয়ে বাড়ির লোকজন ধরেই নিয়েছিলেন, তিনি মৃত। তাই হিন্দু ধর্মের প্রথা মেনে তাঁর পারলৌকিক কাজ শেষ করতে একরকম বাধ্যই হয়েছিলেন মহিলার পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়রা। কিন্তু ভাগ্য শেষ পর্যন্ত সহায় হলো। কন্নড় ভাষাই বাড়ি ফেরাল ৫০ বছর বয়সি সাকাম্মাকে।
২৫ বছর ধরে নিখোঁজ থাকা কর্নাটকের বাসিন্দা সাকাম্মাকে সম্প্রতি পাওয়া গিয়েছে হিমাচল প্রদেশের বৃদ্ধাবাসে। হিমাচলের মান্ডির বৃদ্ধাবাসে তাঁর খোঁজ মিলেছে। বুধবার, বড়দিনে (২৫ ডিসেম্বর) বাড়ি ফিরতে চলেছেন কর্নাটকের মহিলা। দীর্ঘ ২৫ বছর পরিবারের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগই ছিল না।
আরো পড়ুন:– পৃথিবী গোলাকার নয়, প্রমাণ করতে গিয়ে ৩১ লক্ষ টাকা খোয়ালেন ইউটিউবার, কিভাবে ? জানুন
সূত্রের খবর, কর্নাটকের বল্লারি জেলার দানানায়াকাঙ্কাকেরে গ্রামে সাকাম্মার বাড়ি। ২৫ বছর আগে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে তিনি কর্নাটকের হোসাপেটে তাঁর এক আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় ভুলবশত তিনি চণ্ডীগড়গামী একটি ট্রেনে চড়ে বসেন। তারপরেই দুর্ভাগ্য তাঁর নিত্যসঙ্গী হয়। উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের একের পর এক জায়গায় কার্যত ভবঘুরের মতো জীবন কাটতে থাকে সাকাম্মার।
মহিলাকে না পেয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন প্রথমে স্থানীয় থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন। সাকাম্মার খোঁজ পেতে বল্লারি জেলা পুলিশের সঙ্গেও তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। পুলিশ কর্নাটের সঙ্গে গোটা দক্ষিণ ভারত, এমনকী দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তাঁর সন্ধান চেয়ে ছবি-সহ চিঠি পাঠায়। মহিলার পরিবারের লোকজন ও তাঁর আত্মীয়রা অসংখ্য় জায়গায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁর সন্ধান চাইতে শুরু করেন। কিন্তু কোনও ভাবেই খোঁজ মিলছিল না মহিলার। সাকাম্মা আর ফিরবেন না ধরে নিয়ে পরিবারের লোকজন কয়েক বছর আগে তাঁর পারলৌকিক কাজও সেরে ফেলেন।
আরো পড়ুন:– ভারতীয় অর্থনীতি, ব্যবসা, শিল্পোদ্যোগের জন্য কেমন ছিল 2024 ? বিস্তারিত জানুন
কী ভাবে ফের বাড়ি ফিরতে পারলেন সাকাম্মা? সূত্রের খবর, সম্প্রতি হিমাচলের মান্ডির এক বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তরুণ এক আইপিএস অফিসার। সেখানে গিয়ে তিনি বৃদ্ধাবাসে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন। ওই আইপিএস অফিসারের নজরে আসে কন্নড় ভাষায় কথা বলছেন বছর পঞ্চাশ বয়সী এক মহিলা। তীব্র কৌতুহল জাগে অফিসারের। ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারে, তাঁর নাম সাকাম্মা। মহিলা তাঁকে জানান, কী ভাবে হারিয়ে গিয়েছেন তিনি। কী ভাবে বহু জায়গা ঘুরে তাঁর ঠাঁই হয়েছে মান্ডির বৃদ্ধাশ্রমে।
আর দেরি করেননি ওই পুলিশ অফিসার। দ্রুত তিনি যোগাযোগ করেন কর্নাটক সরকারের সমাজ কল্যাণ দপ্তরের সঙ্গে। ওই দপ্তরের অফিসাররা যোগাযোগ করেন সাকাম্মার পরিবারের সঙ্গে। পরিবারের লোকজনকে বলেন, হিমাচলের মান্ডির ওই বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে সাকাম্মাকে নিয়ে আসতে। এ দিন (২৫ ডিসেম্বর) বাড়ি ফিরছেন সাকাম্মা।
আরো পড়ুন:– কলকাতার বসু বিজ্ঞান মন্দিরে অনন্য গবেষণা, বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেন বাঙালি বিজ্ঞানীরা