সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তুমুল হট্টগোল, সাসপেন্ড কল্যাণ-সহ ১০ সাংসদ, জানতে বিস্তারিত পড়ুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির (JPC) বৈঠকে শাসক ও বিরোধী সাংসদদের বাগবিতণ্ডা। তুমুল হট্টগোলের মাঝে শুক্রবার এই কমিটি থেকে ১০ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর সঙ্গে বচসার জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে BJP সাংসদ নিশিকান্ত দুবের। এই হট্টগোলের জেরে আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত JPC বৈঠক মুলতুবি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, যৌথ সংসদীয় কমিটির শেষ ট্যুর ছিল লখনৌতে গত ২১ জানুয়ারি। ২০ তারিখ কলকাতায় বৈঠক হয়। তার পর কমিটির তরফে নোটিস দেওয়া হয় ২৪ এবং ২৫ জানুয়ারি ওয়াকফ বিল নিয়ে বৈঠক হবে। যদিও বিরোধী সাংসদদের অনেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালের কাছে তাঁরা অনুরোধ করেন বৈঠকের দিন পিছিয়ে ৩০-৩১ জানুয়ারি করা হোক। বিরোধীদের একাধিক সাংসদের দাবি ছিল, মৌখিক ভাবে ওই আবেদন মেনে নেওয়া হলেও সরকারি ভাবে তাঁরা কোনও নোটিস পাননি।

এ দিকে, গত মঙ্গলবার JPC বৈঠকে বলা হয়েছিল, ২৪ তারিখ জম্মু-কাশ্মীরের সাংসদদের বক্তব্য শোনা হবে। ২৭ তারিখ শোনা হবে অন্যান্য সাংসদের বক্তব্য। যা নিয়ে প্রতিবাদে সরব হন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ-সহ বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, এত তাড়াহুড়ো কেন করা হচ্ছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ নিয়ে BJP সাংসদ নিশিকান্ত দুবের কথা কাটাকাটি হয়। তুমুল হট্টগোল বেধে যায়।

আরও পড়ুন:– Jio গ্রাহকদের জন্য সুখবর! ট্রাইয়ের নির্দেশ মেনে দু’টি সস্তার প্ল্যান আনল Jio, জেনে নিন বিস্তারিত

বৈঠক থেকে সাসপেন্ড করা হয়, ১০ বিরোধী সাংসদকে। তালিকায় রয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, এ রাজা, সঞ্জয় সিং-সহ অন্যান্যরা।

সংবাদমাধ্যমে গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মিটিংয়ের নামে প্রহসন চলছে। একাধিকবার বলা সত্ত্বেও বৈঠকের দিনক্ষণ নিয়ে আমাদের কোনও অনুরোধই রাখা হয়নি। কোনও কোনও BJP সাংসদ মনে করছেন, তাঁদের মর্জি মাফিক সবটা চলবে। বৈঠকে যেন অঘোষিত ইমার্জেন্সি চলছে। দিল্লি নির্বাচন রয়েছে বলে এত তাড়াহুড়ো করছেন চেয়ারম্যান। যেন জমিদারি প্রথা চলছে। বিরোধীদের কোনও সম্মান করেন না।’

নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ, ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে গন্ডোগোল করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। আমি বলার জন্য মাইক হাতে নিতেই বিরোধীরা আমায় বাধা দিয়েছেন। এর পর চেয়ারম্যান ওই সাংসদদের সাসপেন্ড করেছেন।’

উল্লেখ্য, ওয়াকফ বিল নিয়ে গত অক্টোবরেও যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে একইরকম ভাবে অশান্তি তৈরি হয়েছিল। সে দিন আহত হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। কাচের বোতল ভেঙে তার হাত কেটে গিয়েছিল। বৈঠকে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছিল কল্যাণের বিরুদ্ধে। তাঁকে এক দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল।

গত বছর ৮ অগস্ট লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বিলটি ‘অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। দীর্ঘ বিতর্কের শেষে ঐকমত্যের লক্ষ্যে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। কংগ্রেস, তৃণমূল, DMK, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি, AIMIM-সহ প্রায় সব ক’টি বিরোধী দলের বক্তব্য ছিল, ওই বিল সংবিধান বিরোধী। এই বিল এক দিকে যেমন মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেবে, তেমনই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতেও আঘাত করবে। বিলে বলা রয়েছে, আগামী দিনে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণা করার অধিকার ওয়াকফ বোর্ডের হাতে থাকবে না। ওই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে জেলাশাসকদের হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ, নতুন আইনে যাবতীয় ক্ষমতা জেলাশাসকের হাতে চলে যাবে। এর ফলে জেলাশাসক ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন। যাবতীয় গুরুত্ব হারাবে ওয়াকফ বোর্ড।

আরও পড়ুন:– লৌহযুগের শুরু তামিলনাড়ুতে, 5,300 বছরের পুরনো তরোয়াল হাতিয়ার স্ট্যালিনের

আরও পড়ুন:– ট্রেন ও রাস্তা বন্ধে বালি ব্রিজে যাত্রী হয়রানি, কাজ চলবে আরও তিনদিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন