হাইকোর্টে সাক্ষ্যগ্রহণে সাক্ষী ভাম! ব্যাপারটা কি ? জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

High Court

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- শ’দেড়েক বছর পুরোনো কলকাতা হাইকোর্ট ভবনের বয়স যত বাড়ছে, ততই যেন সেখানে সংখ্যাবৃদ্ধি হচ্ছে ভাম (সিভেট ক্যাট) বা খটাশের। আধুনিক কলকাতায় এত ভাম কোথা থেকে এল, জানা নেই কারও। তবে হাইকোর্ট চত্বরে এতদিন ভামের দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেই আদালতের কর্মীরা তাড়া করতেন, আর ভামের দলও বেশ কিছুদিনের জন্য হাওয়া হয়ে যেত। কিন্তু তেমনটা আর হচ্ছে কই!

মঙ্গলবার হাইকোর্টের মূল ভবনের তিন তলার ২৩ নম্বর এজলাসের কার্নিস থেকে সিলিং হয়ে বাথরুম— একজোড়া ভামের যে দাপাদাপির সাক্ষী রইলেন বিচারক থেকে সাক্ষীরা, তাতে সওয়াল–জবাব মাথায় ওঠার জোগাড়। শেষ পর্যন্ত তলব করা হলো বন দপ্তরকে। বাঁকুড়ায় বাঘিনি জ়িনাতকে ধরার কায়দায় মঙ্গলবার সকালে হাইকোর্টে রীতিমতো খাঁচা, টোপ, জাল নিয়ে হাজির বনকর্মীরা। পাকা কলার টোপ দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নজরদারি চলল সেই নিশাচরদের উপরে। তবে রাত পর্যন্ত জোড়া ভামের একটি টোপ গিলে খাঁচায় ঢুকেছে বলে খবর বন দপ্তর সূত্রে।

আরও পড়ুন:– লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়ানো হচ্ছে পিঙ্ক পাউডার, কী ভাবে রাক্ষুসে আগুন সামলাচ্ছে এই উপাদান?

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্টের এই ভবনের বিভিন্ন এজলাসে ভামের দাপাদাপি সহ্য করতে হয়েছে বিচারপতি থেকে আইনজীবীদের। কয়েক বছর আগে তো হুড়োহুড়ি করতে করতে একটি ভাম পুরোনো আমলের সিলিং ভেঙে এক বিচারপতির টেবিলের উপরে পড়ে। ভয়ে চেয়ার ছেড়ে লাফ দিয়ে এজলাস ছাড়েন সেই বিচারপতি। তার আগেই অবশ্য হুড়মুড়িয়ে হাওয়া আইনজীবীরা। এ দিন দুপুর থেকে বন দপ্তরের কর্মীরা ২৩ নম্বর এজলাসে ভামের উৎপাতের উৎপত্তিস্থলের খোঁজ করতে গেলে প্রথমে বিফল হন। কারণ বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় তখন এজলাসে বসে শুনানি করছেন। বন কর্মীরা তখন ওই এজলাসের আশপাশের ঘরগুলির উপর দিয়ে সিলিংয়ে মই লাগিয়ে ভাম খুঁজতে ব্যস্ত। এক বনকর্মীর মন্তব্য, ‘হাইকোর্টে জজ সওয়াল শুনছেন, আর আমরা তখন সেখানেই ভাম খুঁজছি — এতে মানসিক চাপটা বেশি।’

প্রথম দফায় বনকর্মীরা বাইরে থেকে খোঁজাখুঁজি করে ঘুলঘুলির মধ্যে একটি ভামের হদিশ পান। কিন্তু দৌঁড়ঝাঁপের অভিযোগ একজোড়ার বিরুদ্ধে! পরে দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ কোর্টে টিফিন ব্রেকে বিচারপতি এজলাস ছাড়তেই ওই ঘরের ভিতর দিয়ে বনকর্মীরা সিলিং বরাবর তল্লাশি শুরু করেন। তখনই ভাম দুটি ঘুলঘুলি থেকে বেরিয়ে সিলিং থেকে লাফিয়ে পাইপ বেয়ে মাটিতে নামে। একটি বাথরুমের দিকে ছোটে, অন্যটি উল্টোদিকে। শেষে দুটি খাঁচায় কলা রেখে তা বসানো হয় সিলিংয়ের দুই মাথায়। সন্ধে নাগাদ একটি খাঁচায় টোপ গিলে একটি ভামের ধরা পরার খবর পাওয়া গেলেও, অন্যটির হদিশ নেই।

হাইকোর্টের এই হেরিটেজ ভবনের ১২ নম্বর এজলাসে কয়েক মাস আগে মরা ইঁদুরের দুর্গন্ধ নাকানিচোবানি খাইয়েছিল পূর্ত দপ্তরের কর্মীদের। বেশ কয়েকদিন ধরে বালতি বালতি জল আর লিটার লিটার ফিনাইল ছড়িয়েও দুর্গন্ধের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। দুর্গন্ধের ঠেলায় এক বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চই ওই এজলাস থেকে সরিয়ে ঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকদিন পরে পূর্ত দপ্তরের কর্মীরা পুরোনো একটি আলমারির ভিতর থেকে সেই ইঁদুরের দেহ উদ্ধার করেন। এ বার জোড়া ভামের উৎপাত ঠেকাতে বন দপ্তর কতটা সফল হয়, সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন:– অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল! ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কবে, কতটা বাড়ছে ডিএ ? জেনে নিন

আরও পড়ুন:– বঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে বাধা পঞ্চায়েত-রাজনীতি?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন