হাজার-হাজার তালিবান যোদ্ধা এগোচ্ছে পাকিস্তানের দিকে, আর একটা যুদ্ধ দেখবে বিশ্ব ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ২০১১ সালেই পাকিস্তানকে সতর্ক করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন। তিনি বলেছিলেন, ‘বাড়ির উঠোনে সাপ পুষে আশা করতে পারেন না যে, তারা শুধুমাত্র আপনার প্রতিবেশীদেরই কামড়াবে। শেষ পর্যন্ত সেই সাপগুলি, যার উঠোনে তারা আছে, তাকেই ঘুরিয়ে কামড়াবে।’ ১৩ বছর আগে করা তাঁর সেই মন্তব্যই এখন বাস্তব হতে দেখা যাচ্ছে। এক সময় পাকিস্তানের মদতেই বেড়ে উঠেছিল আফগানিস্তানের তালিবান শক্তি। এখন ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানো’র মতো তারা পাকিস্তানকেই কমড়াতে চলেছে। আফগান ভূমে পাকিস্তানি বিমান হামলার পর, প্রায় ১৫,০০০ তালিবান যোদ্ধা এখন পাকিস্তান সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতা পুনর্দখলের পর থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী হামলার সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হামলা চালিয়েছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি জঙ্গি গোষ্ঠী। মাত্র কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি চেকপয়েন্ট হামলা চালিয়েছিল তারা। ১৬ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল। এর পরই বুধবার রাতে, ভারত যেমন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরে এয়ার স্ট্রাইক করেছিল, সেই ধাঁচে আফগানিস্তানে হামলা চালায় পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান।

 

পূর্ব আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে এই হামলা চালায় পাকিস্তান। ইসলামাবাদের দাবি সেখানে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি জঙ্গি গোষ্ঠীর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। সেখানেই হামলা চালানো হয়েছে। তবে, পাকিস্তানের এই এয়ার স্ট্রাইকের কড়া সমালোচনা করেছে আফগানিস্তানের তালিবান কর্তৃপক্ষ।

তাদের দাবি, পাক যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে অসামরিক এলাকায়। এর জেরে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। তাদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। কাবুলে এক তালিবান মুখপাত্র জানান, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ ‘বর্বরোচিত এবং সুস্পষ্ট আগ্রাসন’। তালিবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই হামলার প্রতিশোধ নেবে। কাবুলে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এই হামলার তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছে তালিবান সরকার।

এর পরই, প্রায় ১৫,০০০ তালিবান যোদ্ধা কাবুল, কান্দাহার এবং হেরাত থেকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ সংলগ্ন মির আলি সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিয়োতেও তালিবান যোদ্ধাদের সামরিক যানে পাক সীমান্তের দিকে এগোতে দেখা গিয়েছে।

আরো পড়ুন: নতুন বছরের শুরুতেই সর্বনাশ! বন্ধ হয়ে যেতে পারে WhatsApp, বিস্তারিত জানুন 

ফলে পাকিস্তানকে এখন আফগানিস্তান থেকে দ্বৈত আক্রমণের মোকাবিলা করতে হবে। ইতিমধ্যেই টিটিপি জঙ্গি গোষ্ঠীকে ‘হুমকি’ বলে চিহ্নিত করেছে পাকিস্তান। কাবুলে যেমন তালিবান গোষ্ঠী একটি ইসলামি দেশ প্রতিষ্ঠা করেছে, সেই ধাঁচে পাকিস্তানেও একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এই গোষ্ঠীর লক্ষ্য। আফগান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে নিয়মিত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালায় এই গোষ্ঠী। বুধবারের এয়ার স্ট্রাইকের পর, এখন ইসলামাবাদকে মোকাবিলা করতে হবে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালিবান শাসক গোষ্ঠীরও।

তবে, ইসলামাবাদ এবং কাবুলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। তালিবান সরকারকে সরাসরি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের জন্য অভিযুক্ত করেছে পাকিস্তান। তাদের উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রায় ৫ লক্ষ অনথিভুক্ত আফগান উদ্বাস্তুকে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আফগান নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

টিটিপি-র বিরুদ্ধে কাবুল যথেষ্ট পদক্ষেপ না করতেই আশা ভঙ্গ হয়েছে পাকিস্তানের। অথচ, কাবুলের ক্ষমতা পুনর্দখলের সময় তালিবান শাসনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছিল ইসলামাবাদ। তারও অনেক আগে থেকে তালিবান গোষ্ঠীর মদতদাতা ছিল ইসলামাবাদ। কাশ্মীরে অশান্তি জিইয়ে রাখতে কাবুলকে ব্যবহার করতে চেয়েছিল তারা। হিলারি ক্লিন্টনের সতর্কতার পরও তারা বোঝেনি দুধ-কলা দিয়ে তারা কালসাপ পুষছে।

আরো পড়ুন: আরজি করে আট তলার ঘরের সিল ভাঙার চেষ্টা, নেপথ্যে কোন রহস্য?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন