Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- দুই হাত-পা একেবারে অসাড়। মাথা ছাড়া শরীরের আর কোনও অঙ্গই তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। কী করে তাহলে পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন বছর চৌত্রিশের পঙ্কজ ঠাকুর? কী ভাবেই বা নিজেকে সমাজের কাছে প্রাসঙ্গিক রাখবেন তিনি? এই ভাবনা কিছুতেই তাঁকে স্থির থাকতে দিত না।
ঠিক সেই সময় পঙ্কজের অন্যতম অবলম্বন হয়ে উঠল অ্যান্ড্রয়েড ফোন। বাড়ির বারান্দায় ছোট একটা মুদিখানা দোকান খুললেন। তারপরে শুরু হলো তাঁর লড়াই। জিনিসপত্র আনার ক্ষেত্রে অন্যেরা সাহায্য করলেও ব্যবসার হিসেব রাখা, টাকা পাঠানোর মতো কাজ করেন পঙ্কজ নিজেই। বলা ভালো, এই কাজটা তিনি একেবারে নিজের মতো করে করেন।
আরো পড়ুন:– কবে আসবে আপনার মৃত্যু? বলে দিচ্ছে এআই-চালিত ‘ডেথ ক্লক’। কিভাবে? জানলে অবাক হবেন
আরো পড়ুন:– সস্তা স্যামসাঙ স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র 6499 টাকার বিনিময়ে, পাওয়া যাবে 50MP Camera এবং 5000mAh Battery
তিনি হিসেব রাখা, টাকাপয়সা দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে ভরসা করেন গুগল পে, কিংবা ফোন পে-র মতো পেমেন্ট অ্যাপের উপর। কিন্তু তাঁর তো হাত অসাড়। তাহলে? এখানেই পঙ্কজ স্বতন্ত্র। তিনি নিজের নাককে ব্যবহার করেন হাতের আঙুলের মতো করে। নাক দিয়েই স্ক্রিন টাচ করে তিনি পেমেন্ট করেন। আর এ ভাবেই গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা চালাচ্ছেন মালবাজারের রাঙামাটির পঙ্কজ। তাঁর বাবা অশোক ঠাকুর চা শ্রমিক। তিন ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র পঙ্কজই বিশেষ ভাবে সক্ষম।
পঙ্কজের এই লড়াইয়ে সর্বক্ষণের সঙ্গী ভাই আমূল ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘দাদা নাককে হাতের আঙুলের মতোই ব্যবহার করতে শিখেছে। আর সে ভাবেই মোবাইল চালাচ্ছে।’ পঙ্কজ বলেন, ‘আমি প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডির বাইরে আর বেরোতে পারিনি। তবে স্মার্টফোনের সৌজন্যে আমার অনেক সুবিধা হচ্ছে। টাকাপয়সা লেনদেনের অ্যাপগুলো না থাকলে দোকানদারি করতে পারতাম না।’
বাড়ির সকলেই কমবেশি রোজগার করেন। তাই দোকানটাই যে একমাত্র সম্বল, তেমনটা নয়। তবে পঙ্কজের মা রেবা ঠাকুর বলেন, ‘দোকানে যেটুকু রোজগার হয় সেটাই পঙ্কজকে স্বস্তি দেয়। আমরাও যে যখন যতটা পারি ওকে সাহায্য করি। মালবাজার শহর থেকে জিনিসপত্র কিনে এনে দোকানে রাখি।’