২০০ বনকর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রম, ‘বাঘ বন্দি’ খেলায় রাজ্যের খরচ কত হলো?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ২৯ ডিসেম্বর, রবিবার বিকেলে বাঁকুড়ার গোসাইডির জঙ্গলে অবশেষে কাবু করা হয়েছে ওডিশার সিমলিপাল থেকে বাংলায় ঢুকে পড়া বাঘিনি জ়িনাতকে। আপাতত তাকে রাখা হয়েছে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায়। সেখানে শারীরিক পরীক্ষার পরে তাকে ফেরানো হবে তার ‘ঘর’ সিমলিপালে।

বন দপ্তর সূত্রে খবর, প্রায় ২০০ জনের টিম মিলে বাঘিনিকে খাঁচাবন্দি করার জন্য দিনরাত এক করে কাজ চালানো হয়েছে। এক গুলিতে বাগে আসেনি জ়িনাত। ২৮ ডিসেম্বর, শনিবার রাতে প্রথম দেখা মেলে তার। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল একটু একটু করে কাবু করার প্রক্রিয়া। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় সে দিনই জানিয়েছেন, একাধিকবার ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে একটু একটু করে জিনাতকে কাবু করা হয়েছে। জ়িনাতকে খাঁচাবন্দি করার পরে বাংলার বনকর্মীদের উদ্দেশে প্রশংসা ভেসে আসছে নানা দিক থেকে। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘বন বিভাগের সকল আধিকারিককে আমার আন্তরিক অভিনন্দন বাঘিনি জ়িনাতকে সফল ভাবে উদ্ধার করার জন্য। এই অসাধারণ প্রচেষ্টায় তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পঞ্চায়েত কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।’

আরো পড়ুন: দুটি চালু ওষুধের নকল বাজারে ঘুরছে। এই নিয়ে সতর্কবার্তা কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার, বিস্তারিত জানুন

রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর এই সময় অনলাইনকে বলেন, ‘লালগড়ের মতো ঘটনা যাতে না হয়, তার জন্য আমরা প্রথম থেকেই সবটা নজরে রেখেছিলাম। বনকর্মী যাঁরা একদম মাঠে নেমে কাজ করেছেন তাঁদের ধন্যবাদ। বাকি যাঁরা রয়েছেন, সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে। ১৭০ জনের বেশি লোক মিলিয়ে বাঘটিকে ধরার কাজ শুরু হছিল। প্রাথমিকভাবে এই কাজে ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলেই আমরা জানি। বিস্তারিত সব কিছু নিয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনা হবে।’
মন্ত্রী যেখানে ১৭০-এর বেশি মানুষের অংশগ্রহণের কথা বলছেন, তখন বন দপ্তরের পদস্থ কর্তারা বলছেন, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া মিলিয়ে এই টিমে প্রায় ২০০-র বেশি মানুষ যুক্ত ছিলেন। বন দপ্তরের পদস্থ কর্তা থেকে রেঞ্জ অফিসে থাকা বনকর্মী, হুলা পাটির সদস্যরাও সেই কাজে ছিলেন। ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার একাধিক ডিভিশনের DFO, ADFO, বিট, রেঞ্জ অফিসার-কর্মী এই কাজে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন। একটা অংশ যখন বাঘ ধরার কাজে পুরোপুরি যুক্ত ছিল, তখন অন্য অংশ উৎসাহী ভিড় সামলালো থেকে লোকালয়ের মানুষকে নানা বিষয়ে বোঝানোর কাজ চালিয়ে গিয়েছে।

আর এই কাজে এত খরচ কী ভাবে হলো? ওই কর্তা বলেন, ‘এই কয়েকদিনে তা-ও প্রায় ১০ দিনের খাওয়া-দাওয়া থেকে গাড়ির খরচ রয়েছে। বহু শ্রমিককে জাল দিয়ে গ্রামে ফেন্সিং করানোর মতো কাজের জন্য নিতে হয়েছে—একাধিক শিফটে কাজ হয়েছে। সব মিলিয়ে এই খরচ ৩৫ লক্ষের বেশি হওয়া উচিত।’

মহারাষ্ট্রের আন্ধেরি-তাডোবার জঙ্গল থেকে জ়িনাত ও আরও একটি বাঘিনি যমুনাকে বংশবৃদ্ধির জন্য উড়িয়ে আনা হয়েছিল ওডিশার সিমলিপালে। কয়েক দিন কোয়ারান্টিনে (সফ্ট রিলিজ়) রাখার পরে গত ২৪ নভেম্বর সিমলিপাল টাইগার রিজ়ার্ভের মুক্ত জঙ্গলে ছাড়াও হয় জ়িনাতকে। কিন্তু দিন দশেকের বেশি সেখানে তার মন টেকেনি। গত ২০ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া থেকে বাঘিনি জ়িনাত ঢুকে পড়ে ঝাড়গ্রামে। তার পর থেকে শুরু হয় বাঘবন্দি খেলা। অবশেষে বন্দিনী জ়িনাত সুস্থভাবে নিজের ঘরে ফিরুক, সেটাই চাইছেন সকলে।

আরো পড়ুন: শ্বশুরবাড়ি থেকে 12 বছরের নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার!

আরো পড়ুন:– ভয়াবহ ১০ বিপর্যয় যা বিপুল ক্ষতি করেছে এ বছরে, জানুন বিস্তারিত

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন