৯ মাস বয়সে হারিয়েছিলেন দৃষ্টি, লক্ষ্যভেদে তৈরি হচ্ছেন অনুপ, পাশে মা, পড়ুন চমকপ্রদ জীবন কাহিনী

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মাত্র ৯ মাস বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারালেও হারিয়ে যায়নি মনের জোর। ‘দোসর’ মা। হুগলির ভদ্রেশ্বরের গৌরহাটির বাসিন্দা বছর ২৮-এর অনুপ সিং এখন ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (নেট)-এর জন্য প্রস্তুত নিচ্ছেন। অর্জুনের মতো তাঁর লক্ষ্য এখন জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ (জিআরএফ) পাওয়া। দৃষ্টিহীন সন্তানকে পড়ানোর জন্য বছরের পর বছর অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করেছেন অনুপের মা গীতা সিং। আর সেই লড়াইয়ের পর মাকে ‘পুরস্কার’ হিসেবে জিআরএফ এনে দিতে চান অনুপ। তাই আপাতত ধ্য়ান-জ্ঞান পড়াশোনা।

গীতা সিং আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। বিবাহবিচ্ছেদের পর ২০০১ সালে তিনি সন্তানদের সঙ্গে হুগলিতে চলে আসেন। বর্তমানে গৌরহাটিতে এক চিলতে টালির বাড়িতেই সন্তানদের নিয়ে থাকেন তিনি। তাঁর দুই মেয়েই বিবাহিতা। বড় ছেলে কম্পিউটার বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ছোট ছেলে অনুপও নেট পাশ করছেন ইতিমধ্যে। তবে গতবার মেলেনি জিআরএফ। চার ছেলেমেয়ের মধ্যে অনুপকে নিয়েই গীতাদেবীর চিন্তা সবথেকে বেশি। মাত্র নয় মাস বয়সে ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুটি চোখ নষ্ট হয়ে যায় অনুপের। এরপর বহু চিকিৎসকের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলেও দৃষ্টিশক্তি ফেরেনি। কিন্তু তা বলে জীবনযুদ্ধে হার মানেননি অনুপ।

জ্ঞানের আলোয় জীবনের সব অন্ধকার মুছতে চেয়েছেন তিনি। হুগলির বাসিন্দা সিদাম সাহার সাহায্যে অনুপকে উত্তরপাড়া ব্লাইন্ড স্কুলে ভর্তি করান তাঁর মা। সেখানে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর তিনি ২০১৪ সালে ক্যালকাটা ব্লাইন্ড স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পাশ করেন। এর পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি।

আর অনুপকে পড়াশোনা করানো এবং পরিবারের সকলের মুখে অন্ন তুলে দিতে অন্যের বাড়িতে রান্না করতেন গীতাদেবী। জিআরএফ পেলে অনুপ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন, সেই আশায় দিন গুনছেন তিনি।

এ দিকে চেষ্টায় কোনও খামতি রাখতে নারাজ অনুপও। ২৩৮ পাতার বইয়ের লেখা শুনছেন রেকর্ডিং মেশিন। এ ছাড়াও পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করছেন অ্যাপ এবং ইউ টিউব। এই চ্যালেঞ্জও হাসিমুখে পার করবেন অনুপ, বিশ্বাস পরিবারের।

আরো পড়ুন:- নতুন শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিকের 19টি বিষয়ে পাঠক্রম বদল, কোন কোন বিষয়? জেনে রাখুন

মন্তব্য করুন