Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সাল ১৯৯১। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে পিভি নরসীমা রাও। ভারত তখন অর্থনৈতিক সমস্যা সামলাতে বেজায় চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্ব সাক্ষী হচ্ছে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের। ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে মধ্যরাতে একটি ফোন পেয়েছিলেন ইউজিসি-র তৎকালীন চেয়ারম্যান মনমোহন সিং। ফোনটা ছিল নরসীমা রাওয়ের মুখ্য সচিব পিসি আলেকজ়ান্ডারের। মনমোহনকে জানানো হয়েছিল, তিনিই দেশের পরবর্তী অর্থমন্ত্রী। ১৯৯১ সালের ২১ জুন ‘অ্যাকসিডেন্টার ফিন্যান্স মিনিস্টার’ হিসেবে শপথ নেন মনমোহন সিং।
তিনিই প্রথম শিখ রাজনীতিবিদ যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। মনমোহন সিং বলেছিলেন, ‘শিখ হিসেবে গর্বিত। আমার এই হেরিটেজই আরও বেশি করে আমায় ভারতীয় করে তোলে।’
২০০৯ সালে দিল্লির AIIMS হাসপাতালে ১০ ঘণ্টা ধরে বাইপাস সার্জারি হয় ডঃ মনমোহন সিংয়ের। তাঁর চিকিৎসক রমাকান্ত পাণ্ডা স্মৃতিচারণায় বলেছিলেন, ‘দীর্ঘ ১০-১১ ঘণ্টার অপারেশনের পর ওটি থেকে বের করার পর তাঁর প্রথম কথা ছিল, আমার দেশ কেমন আছে? কাশ্মীর কেমন আছে?’
সর্বদাই নীল পাগড়ি পরতে দেখা যেত মনমোহন সিংকে। তিনি জানিয়েছিলেন, এই রং তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। তাই সংসদ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রচার কিংবা বিদেশ সফর, নীল পাগড়িতেই বেশির ভাগ সময় দেখা যেত ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।
মনমোহন সিং বলতেন, ‘আমিষ বনাম নিরামিষ খাবারের দ্বন্দ্বে পড়তে চাই না। তবে চিকিৎসকরাও জানান মাংস ছাড়া নিরামিষ খাবার সবচেয়ে ভালো ডায়েট।’
মনমোহন সিংয়ের বডিগার্ড ছিলেন অসীম অরুণ। স্মৃতিচারণায় তিনি জানিয়েছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে একটি বড় কালো BMW গাড়ির পিছনে দাঁড় করানো থাকত মারুতি ৮০০। ওটিই তাঁর একমাত্র গাড়ি ছিল। ওই গাড়িতেই সর্বদা চড়তেন তিনি। বলতেন, BMW চড়তে ভালোলাগে না তাঁর। মারুতি ৮০০-তেই তিনি স্বচ্ছন্দ।
২০২৩ সালে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে হুইলচেয়ারে বসে পৌঁছে গিয়েছিলেন মনমোহন সিং। রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে ভোটদানও করেছিলেন। অশক্ত শরীরে সংসদে তাঁর অংশগ্রহণকে প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরো পড়ুন:– প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কোন কাজকে সেরা মনে করতেন মনমোহন? কী নিয়ে ছিল আক্ষেপ?