জয় রায় :- এখানে আমরা কিছু ছোট খাটো ঘরোয়া রোগের ব্যাপারে আলোচনা করবো। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক।
চুলকানি ও পাঁচড়া :-
লক্ষণ :- রক্ত দূষিত হওয়া ও অপরিষ্কার থাকার জন্য এই রোগ হয়। ঘামাচির মতো ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দেয় , চুলকায় ও কস পরে। কখনো বড় বড় ফোস্কার মতো হয় পাকে এবং ঘা হয়।
চিকিৎসা :- ভেজলিন ৫০ গ্রাম ,গন্ধক গুঁড়ো ২ গ্রাম ,কর্পূর ২ গ্রাম , চালমুগরার তেল ১০ গ্রাম মিশিয়ে মলম তৈরি করে নিতে হবে। নিম পাতা সিদ্ধ করা জল দিয়ে আক্রান্ত স্থান ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার ন্যাকড়া দিয়ে মুছে মলম লাগাতে হবে রোজ একবার।
পথ্য :- টক জাতীয় খাবার , তেলেভাজা ও ঘি জাতীয় খাদ্য আকম নিষেধ।
এলাৰ্জি :-
লক্ষণ :- শরীরের স্থানে স্থানে ফুলে ওঠে ও চুলকায়। কারো কারো বিশেষ দ্রব খেলে চুলকায়।
চিকিৎসা :- কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে ৫০ গ্রাম , শুকনো নিম পাতা গুঁড়ো ২৫ গ্রাম , শুকনো আমলকির গুলো ৭৫ গ্রাম মিশিয়ে রেখে দিতে হবে শিশিতে। রোজ সকালে খালি পেটে ৪ গ্রাম করে খেতে হবে ১৫ দিন।
পথ্য:- ডিম , বেগুন , চিংড়ি মাছ , বোয়াল মাছ , ইলিশ মাছ , রসুন , পিঁয়াজ খাওয়া নিষেধ।
দাদ :-
লক্ষণ:- আক্রন্ত স্থানে গোল গোল চাকা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে , চুলকায় ও কস পরে।
চিকিৎসা :- একটি পাথর বাটির মধ্যে নারকেলের মালা রেখে আগুন দিয়ে পোড়াতে হবে। মালাটি জ্বলন্ত অবস্থায় অন্য একটি পাথর বাটি দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। আধ ঘন্টা পরে ঢাকা তুললে দেখা যাবে পাথরের বাটিতে কালো কালো তেলের মতো পদার্থ। আক্রন্ত স্থানে ওই তেলের মতো পদার্থ লাগাতে হবে দিনে ১ বার করে তিন দিন। অথবা চুলকানি ও পাঁচড়ার ফর্মুলার মলম তৈরি করে লাগাতে হবে।
পথ্য :- টক জাতীয় খাদ্য , তেলেভাজা , ঘি জাতীয় খাবার খাওয়া নিষেধ। দাদের জাগায় সাবান ব্যবহার করবেন না।
নখকুনি :-
লক্ষণ :- নানা কারণে নখের মাংস অল্প দূষিত হয়ে নখের কোন বসে যায় তখনই নখকুনি হয়। পরে সমস্ত নখটি নষ্ট হয়ে যায়। নখ কাটার দোষেও নখ বসে গিয়ে নখকুনি হয়।
চিকিৎসা :- পানের রস ২/৩ চামচ , তেজপাতা ২টি পানের রসে তেজপাতা বেটে আঙুলের উপর প্রলেপ দিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রাখার পর ১ কাপ জলে ২০ থেকে ২৫ টি নিম পাতা থেঁতো করে ৫ থেকে ০ মিনিট ফুটিয়ে সেই অল্প গরম জলে আঙ্গুল চুবিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। অথবা হলুদ রস ১০০ মিলি , হরিতকি ২টি ,নিমফল ২০ থেকে ২৫টি ,হলুদের রসে হরিতকি , নিমফল বেটে অল্প গরম করে প্রলেপ দিন। খুব বেশি ব্যাথা হলে ১ ঘন্টা অন্তর অন্তর প্রলেপ দিন। ব্যাথা কমে গেলে আস্থে করে নখের কোন কেটে দিন।
বাতব্যাধি :-
লক্ষণ :- ঠান্ডা লাগা , হাঁসের ডিম ,টক বা ঠান্ডা দ্রব খাওয়া , যকৃতের দোষ পারদের অপব্যাবহার ইত্যাদি কারণে বাত হয়ে থাকে। এই রোগ শরীরের সন্ধিস্থলে আক্রান্ত হয়। প্রথমে সন্ধিস্থল লাল ও বেদনা যুক্ত হয়ে জ্বর হয়। পরে কাঁপুনি, ঘাম, কোষ্ঠ কাঠিন্য ,মাথার যন্ত্রনা ,হার্টের গন্ডগোল , অপরিষ্কার জিভ ইত্যাদি যখন দেখা দেয়। রোগ কঠিন হলে বুকে যন্ত্রনা ও নিঃশ্বাসের কষ্ট দেখা দেয়।
চিকিৎসা :- দুবেলা গরম ভাতের সাথে এক কোয়া রসুন বাটা ও সামান্য ঘি মেখে খেতে হবে ১৫ দিন। ৫ গ্রাম হরিতকি গুঁড়ো করে গরম জলের সাথে খেতে হবে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ১৫ দিন।