একরত্তি মেয়ের চিকিৎসায় বিপুল খরচ, অভিষেকের দ্বারস্থ পরিবার

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- হুগলির খানাকুলের বাসিন্দা একরত্তি নেহা। দুরারোগ্য স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফিতে (টাইপ–৩) আক্রান্ত এই শিশু। দু’পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা পর্যন্ত নেই। কলকাতার এসএসকেএম, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা নেহার বাবা সনাতন মাজিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই রোগের চিকিৎসার খরচ বিপুল। ইএম বাইপাসের একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছিলেন, রিজ়ডিপাম নামে একটি জীবনদায়ী ওষুধ এই রোগের নিরাময় করতে পারে। কিন্তু তাতে প্রতি বছর খরচ হবে অন্তত ৭২ লক্ষ টাকা।

খানাকুলের তাঁতিশাল গ্রামের ছাপোষা সনাতন কী ভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাবেন, ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না। রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না ছোট্ট নেহার চিকিৎসার জন্য সহায়তার আর্জি জানিয়ে কিছু দিন আগে নবান্নে চিঠিও দিয়েছেন। এই শিশুর চিকিৎসা কী ভাবে হবে, তার কোনও দিশা না পেয়ে শনিবার ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’ স্বাস্থ্য শিবিরে নেহাকে নিয়ে এসেছিলেন তার পরিজনরা।

আরও পড়ুন:– ঠান্ডার আবহেও IPO-র বাজার গরম, দেখুন কোন দিন কোন সংস্থায় লগ্নির সুযোগ মিলবে

ডায়মন্ড হারবার এসডিও গ্রাউন্ডে ‘সেবাশ্রয়’–এর মডেল ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। মেডিসিনের ডাক্তার থেকে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন এখানে। এই মডেল ক্যাম্পেই শনিবার দুপুরে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে মাজি দম্পতি মেয়েকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। স্বেচ্ছাসেবকরা দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তাঁদের। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নেহার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে এবং মেডিক্যাল হিস্ট্রি দেখে বুঝতে পারেন, দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত তিন বছরের এই শিশু। তাকে সুস্থ করতে ব্যয়বহুল চিকিৎসা প্রয়োজন। নেহার এই দুরারোগ্য অসুখের খবর ডায়মন্ড হারবারের মডেল ক্যাম্প থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছয়।

ছোট্ট নেহাকে কোলে নিয়ে এ দিন তার মা নিভারানি মাজি কান্নাভেজা চোখে বারবার একটাই কথা বলেছেন, ‘আমার মেয়েকে বাঁচান। একের পর এক হাসপাতালে গিয়েছি। অনেক আশা–ভরসা নিয়েই এখানে এসেছি।’ ‘সেবাশ্রয়’ ক্যাম্পের চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবকরা আশ্বাস দিয়েছেন, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ নেহার চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন।

গত ২ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার ৪১টি ক্যাম্পে ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে শনিবার শেষ দিনের সন্ধে পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাম্পে উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে। গত ১০ দিনে ২ লক্ষ ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ এই ক্যাম্পগুলিতে এসেছেন। শেষ দিনে শনিবার রেকর্ড ৮৪ হাজারের বেশি রোগী এসেছেন বিভিন্ন ক্যাম্পে।

এই বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক এক্স হ্যান্ডলে বলেছেন, ‘সেবাশ্রয় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। এই বিপুল সংখ্যা মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফল‍ন। সবাইকে নিয়ে আমরা নতুন মাইলফলক ছুঁতে পারব।’

চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এই রোগীদের ওষুধ দিতে অমানুষিক পরিশ্রম করছেন ফার্মাসিস্টরা। ডায়মন্ড হারবারের মডেল ক্যাম্পের ফার্মেসিতে ভিড় সামলাতে সামলাতে সঞ্চিতা সেনগুপ্ত বললেন, ‘প্রেসক্রিপশনে উল্লেখিত অধিকাংশ ওষুধ আমরা এখান থেকে নিখরচায় দিচ্ছি। যে ওষুধের স্টক শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা পরের দিন সেই রোগীকে দেওয়া হচ্ছে।’

ইংরেজিতে লেখা প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কোন ওষুধ কখন খেতে হবে, তা যাতে সহজে রোগী বুঝতে পারেন, তার জন্য অজস্র খাম আগে থেকে ফার্মেসিতে তৈরি রাখা হয়েছে। কোনও খামে লেখা ‘সকালে খাওয়ার ওষুধ’, কোনও খামে লেখা ‘রাতে খাওয়ার ওষুধ’। অধিকাংশ ক্যাম্পে মেডিসিন, চোখ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে এ দিন দীর্ঘ লাইন দেখা গিয়েছে।

ডায়মন্ড হারবার মডেল ক্যাম্পের চিফ মেডিক্যাল কো–অর্ডিনেটর অমিতকুমার মণ্ডলের কথায়, ‘শনিবার এই একটি ক্যাম্পে ৩২৫ জন রোগীর চোখের চিকিৎসা হয়েছে। শিশু বিভাগে ৯২ জনের চিকিৎসা হয়েছে।’ প্রতিদিন একশোরও বেশি ইউএসজি হচ্ছে। এই টেস্টের রিপোর্ট পরের দিনই হাতে পাচ্ছেন রোগী।

আরও পড়ুন:– দাবানলের কারণ কী? ট্রাম্প থেকে মাস্ক, কে কোন যুক্তি দিচ্ছেন ?

আরও পড়ুন:– ৪০০ বছর আগে বাড়িতে তৈরি টেলিস্কোপে গ্যালিলিও কিভাবে বৃহস্পতির ৪টি উপগ্রহের সন্ধান পান ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন