কেন প্রাণের চিনি হয়ে উঠল ‘টক্সিক’, কী মত বিশেষজ্ঞদের?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

sugar

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কোভিড পরবর্তী বিশ্বে মানুষ সুস্থ থাকার উপায় খুঁজছে। লাইফস্টাইলে যোগ হয়েছে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা সবকিছুই। আর বাদ যাচ্ছে চিনি। আগেও চায়ে চিনি দিয়ে খেতেন। কিন্তু এখন একেবারেই চিনি ছুঁয়ে দেখেন না। কেউ কেউ পারলে মাসকাবারি থেকেই চিনি বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু যে খাদ্য সামগ্রী যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে, আজ হঠাৎ তার উপর ঘৃণা ধরল কেন? আসলে যে কোনও ‘হোয়াইট ফুড’ যেমন নুন, ময়দা, চিনিকেই স্বাস্থ্যের জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যদিও এই প্রতিবেদন শুভ্র চিনিকে কেন্দ্র করেই।

এই প্রসঙ্গে কলকাতার বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রুদ্রজিৎ পাল বলেন, ‘চিনি মানুষ আগেও খেত, কিন্তু এখন মানুষের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি ও নুন খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। আজকাল এমন অনেক খাবার বাজারে পাওয়া যায়, যার মধ্যে অত্যধিক চিনি ও নুন রয়েছে। তাই যখন নিজে খাবার বানাচ্ছি, তখন যতটা কম নুন ও চিনি ব্যবহার করা যায়, তার দিকে খেয়াল রাখা উচিত।’ কেক, বিস্কুট থেকে শুরু করে বোতলবন্দি জুস, ড্রিংক্স সব কিছুতে চিনি রয়েছে। এই সব খাবার খেলে দেহে চিনির পরিমাণ বাড়ছেই।

আরও পড়ুন:– ওভারহেড ইলেকট্রিক তারের ওপর শুয়ে পড়েও অদ্ভুত রক্ষা যুবকের, কিভাবে সম্ভব ?

শরীরের শারীরবৃত্তীয় (physiological) কার্যকলাপের জন্য চিনি দরকার। কাজ করার এনার্জি জোগায় চিনি। সুতরাং, সম্পূর্ণরূপে চিনি বাদ দেওয়া যায় না। কিন্তু এখন বেশিরভাগ মানুষ অলস জীবনযাপন করে। অর্থাৎ, শরীরচর্চার অভাব রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকে। এতে শরীরে কোনও অ্যাক্টিভিটি না হওয়ায় চিনিও জমতে থাকে।

বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও জেনারেল ফিজ়িশিয়ান ডাঃ শ্যামাসিস বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘আগে মানুষ চিনি-নুন সবই খেত। কিন্তু এত বেশি নয়। এখন মানুষের আর্থিক ক্ষমতা বেড়েছে, ফলে যখন যেখানে যে খাবার চাইছে, সেটাই সে পেয়ে যাচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন চিনি রেশনের দোকানে পাওয়া যেত। এখন যতটা পরিমাণ দরকার চিনি কেনা যায়। তার উপর প্যাকেটজাত, প্রক্রিয়াজাত খাবারে চিনি থাকে। আর চিনি সব সময় স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ।’ ডাক্তারবাবু সতর্ক করে জানিয়েছেন, শুধু চিনি নয়, রিফাইন্ড যে কোনও খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

অতিরিক্ত চিনি কী ভাবে শরীরের ক্ষতি করে?

চিনি খেলে সাময়িক ভাবে আপনার এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়। কিন্তু পরে গ্লুকোজ় লেভেল ওঠানামা করে। এর জেরে শরীর ক্লান্তও লাগতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি খাওয়ার জন্য হজমজনিত সমস্যা দেখা দেয়। গ্যাস-অম্বল হয়। আবার সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার জন্য ঘুমেরও সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় ত্বকেরও সমস্যা দেখা দেয়। আর দিনের পর দিন অত্যধিক পরিমাণে চিনি খেতে থাকলে হাই কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিসের মতো সমস্যা দেখা দেবেই। ডাক্তার পাল বলেন, ‘অল্প পরিমাণে নুন-চিনি খাওয়ায় ক্ষতি নেই। ব্যক্তির ওজন, বয়স ও কোনও রোগ আছে কি না, তার উপর নির্ভর করছে যে, সারাদিনে কতটা পরিমাণ চিনি খাওয়া উচিত।’

সুস্থ থাকতে গেলে চিনি খাওয়া কমাতে হবে। ডাঃ পালের কথায়, প্রথম প্রথম চিনি কম খেলে কিংবা চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে একটু সমস্যা হবে। খাবারের স্বাদ হয়তো মুখে ভালো লাগবে না। তবে ভবিষ্যতের জন্য এটাই উপকারী। তা ছাড়া অনেকেই চিনি ছেড়ে মুধ, গুড়, খেজুরের মতো খাবার খান। সেগুলোও চিনির মতো পরিমাণ বুঝেই খাওয়া উচিত। ডাক্তার পাল স্পষ্ট ধারণা দিয়ে বলেন, ‘মুধ, গুড়, খেজুরের মধ্যেও গ্লুকোজ় রয়েছে। এমনকী, চিনির বিকল্প হিসেবে আর্টিফিশিয়াল সুইটনার, স্টেভিয়াও ব্যবহার করা যায়, কিন্তু সেটাও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ও সীমিত পরিমাণে।’

ডাঃ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘চিনি আখের রস থেকে তৈরি, গুড়ও তাই। কিন্তু চিনি রিফাইন্ড করা। রান্নায় এক চামচ চিনির বদলে এক চামচ গুড় ব্যবহার করা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত করা চলবে না। এক চামচ চিনির বদলে পাঁচ চামচ গুড় কখনওই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।’

আরও পড়ুন: ২০২৫-এ কেমন হবে ভারতের সঙ্গে রসায়ন? জানালেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান

আরও পড়ুন:– বিমানযাত্রীদের জন্য সুখবর, ডোমেস্টিক ফ্লাইটেও মিলবে Wi-Fi পরিষেবা, কিভাবে এই সুবিধা পাবেন ? জানুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন