খাচ্ছি খাবার, গিলছি ‘বিষ’! শহরের খাবারের পুর–রিপোর্ট, কি জানা গেলো?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

testy food

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কলকাতার খাবার, কলকাতার রেস্তোরাঁ, কলকাতা তথা বাঙালির খাদ্যরসিকতা নিয়ে কতই না আবেগ–আহ্লাদ। সত্যিই তো, ‘সিটি অফ জয়’–এ খাবারের পসরা সাজানো। কিন্তু হোটেল–রেস্তোরাঁর সেই খাবার কতখানি নিরাপদ? কলকাতা পুরসভার সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, সেই খাবারে ভেজালের প্রয়োগ ক্রমবর্ধমান।

পুরসভা সূত্রে খবর, এ বছর ১ এপ্রিল থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মহানগরের উত্তর থেকে দক্ষিণের ৮৬০টি হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবার তৈরির উপকরণ পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৯টি নমুনায় ভেজাল মিলেছে। গত বছর নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৯১০টি জায়গা থেকে। যার ৯১টিতে মিলেছিল ভেজাল।

আবার, চলতি বছরে (৩০ অক্টোবর পর্যন্ত) ৯১০টি জায়গা থেকে সংগ্রহ করা হয় তৈরি করা খাবারের নমুনা। যার মধ্যে ৬৭টি দোকান–রেস্তোরাঁয় খাবারের মান খারাপ বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে। গত বছর এই পরীক্ষা হয়েছিল ৭৯১টি জায়গার তৈরি করা খাবার নিয়ে। যার মধ্যে ৪৩টি জায়গার খাবারের মান সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

তাঁদের বক্তব্য, লাভের আশায় কম দামের মশলা ও বাসি জিনিস ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। যার জেরে ভুগতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাড়ছে অসুখ। এই পরিস্থিতিতে শহর–জুড়ে ভেজাল খাবারের রমরমা রুখতে আরও বেশি করে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুর–কমিশনার ধবল জৈন।

পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, সেপ্টেম্বরে পার্ক সার্কাস এলাকার এক নামী রেস্তোরাঁর বিরিয়ানিতে ‘মেটানিল ইয়েলো’ পাওয়া গিয়েছে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। রেস্তোরাঁটিকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির একটি রেস্তোরাঁ থেকে মাস দুয়েক আগে মিলেছে বাসি মাংস।

শুধু নামজাদা দোকান নয়, ডালহৌসি চত্বরের বেশ কয়েকটি স্ট্রিট ফুডের স্টলেও মিলেছে ভেজাল মশলা। পোস্তর সঙ্গে সুজি ব্যবহার করার জন্য মোটা টাকা জরিমানা করা হয়েছে শিয়ালদহের একটি হোটেলকে। সব মিলিয়ে চলতি আর্থিক বছরে ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে ১১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩৪৫ টাকা পুরসভার ঘরে ঢুকেছে।

ভেজাল খাবার শরীরের কতটা ক্ষতি করে? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুইয়ের বক্তব্য, ‘ভেজাল মশলা ও বাসি জিনিস ব্যবহারে পেটের রোগ বাড়ছে। লিভারের ক্ষমতা কমে যাওয়া থেকে শুরু করে ক্যান্সারের আশঙ্কাও থাকেছে ভেজাল মশলার খাবারে।’ দীর্ঘদিন ধরে শহরের স্ট্রিট ফুডের মানোন্নয়নের দাবিতে লড়াই চালাচ্ছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা সমরেশ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘খোলা বাজারে ভেজাল মশলার রমরমা রুখতে সে ভাবে কোনও পদক্ষেপ প্রশাসন করে না। ফলে, বেশি লাভের আশায় অনেকেই ভেজাল মশলার দিকে ঝুঁকছেন।’

যদিও পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা জানাচ্ছেন, খাবারে ভেজাল রুখতে ২০১৬ সালে খাদ্য–সুরক্ষা টিম তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে অভিযানের জন্য শহরের ১৬টি বরোয় ১৬টি টিম রয়েছে। প্রতিটি টিমে অফিসার ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে জনা আটেক সদস্য। তাঁরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন। জরিমানাও করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:- চাপে পড়ে নতিস্বীকার, সব ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ইউনূসের, জানতে পড়ুন বিস্তারিত

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন