Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- শীতের সকালে খেজুরের রস অনেকের প্রিয়। তা রমরমিয়ে বিক্রিও হয়। কিন্তু এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, খেজুর রস খেলে নাকি নিপা ভাইরাস হয় না।
বাংলাদেশে বাড়ছে নিপা ভাইরাসের প্রভাব। সেই সময়েই খেজুরের রস খেলে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের কোনও ঝুঁকি নেই বলে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। তবে এ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
তাঁরা জানান, খেজুরের কাঁচা রস থেকে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যে ভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে সেটা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন। এটা বন্ধ করার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।
আরও পড়ুন:– লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়ানো হচ্ছে পিঙ্ক পাউডার, কী ভাবে রাক্ষুসে আগুন সামলাচ্ছে এই উপাদান?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নিপা একটি ভাইরাসঘটিত সংক্রমণ। এটা প্রাণী থেকে প্রথমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এরপর আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর, মাথা ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। দু-এক দিনের মধ্যে তিনি অচেতন হয়েও পড়তে পারেন। এই ভাইরাসের সংক্রমণের ধরন অনেকটা করোনার মতো। এতে মৃত্যুর হার করোনার চেয়ে অনেক বেশি। খেজুরের কাঁচা রস, পেয়ারা-সহ বিভিন্ন বাদুড়ে খাওয়া ফল থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা।
আইইডিসিআর জানিয়েছে, ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৩ জন। এর মধ্যে মারা গিয়েছেন ৭১ শতাংশই। গত বছর বাংলাদেশে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত ৫ জন মারা গিয়েছেন। তার আগের বছরে আক্রান্ত ১৩ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।
এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে,নিরাপদ খেজুর রস পাওয়া যাচ্ছে। বিজ্ঞাপন দাতাদের দাবি, গাছ নেট বা জাল দিয়ে ঢেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। তাই তাদের রসে নিপা ভাইরাসের ঝুঁকি নেই। স্বাদ অক্ষুন্ন রেখেই খেজুর রস হোম ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে আকৃষ্ট করতে গাছ থেকে রস পানের ভিডিয়োও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা জানান, নেট দিয়ে যতই ঢাকার কথা বলা হোক না কেন, বাদুড়ের হাত থেকে রসকে সুরক্ষার উপায় নেই। এই রসের সঙ্গে বাদুড়ের মুত্র মিশে যায় বলে জানিয়েছেন আইসিডিডিআরবি-র জাতীয় নিপা ভাইরাস সার্ভিল্যান্সের প্রধান বৈজ্ঞানিক সৈয়দ মঈনউদ্দিন সাত্তার। তিনি জানান, বাদুড়ের মূত্রথলি অপেক্ষাকৃত অনেক ছোট। বাদুড় তাই রস খেতে খেতেই প্রস্রাব করে। ফলে সেই রস খেলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, খেজুর গুড় নিয়ে সমস্যা নেই। বিপদ আছে কাঁচা রসেই। তাই খেজুরের কাঁচা রস একেবারেই খাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন:– অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল! ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কবে, কতটা বাড়ছে ডিএ ? জেনে নিন
আরও পড়ুন:– বঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে বাধা পঞ্চায়েত-রাজনীতি?