নাকে পলিপাসের সমস্যার ক্ষেত্রে সেরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা !

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

homeopathy

Bangla News Dunia , Pallab : ন্যাজাল পলিপাস (Nasal Polyps) হলো নাকের ভেতরে নরম, অস্বচ্ছ, অশ্রুসদৃশ বা ডিম্বাকৃতির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এটি সাধারণত নাকের মিউকাস ঝিল্লি থেকে উদ্ভূত হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ বা অ্যালার্জির কারণে দেখা দিতে পারে। যদিও এটি প্রাথমিকভাবে ক্ষতিকর নয়, তবে বড় হয়ে গেলে নাক বন্ধ হওয়া, ঘ্রাণ শক্তি হ্রাস এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।

ন্যাজাল পলিপাসের কারণসমূহ

1. দীর্ঘস্থায়ী সাইনোসাইটিস: সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ।

2. অ্যালার্জি: যেমন ধুলাবালি, ফুলের রেণু, বা ঘরের ধুলোর প্রতি অ্যালার্জি।

3. অ্যাজমা: শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা।

4. এসপিরিন সেনসিটিভিটি: অ্যাসপিরিন বা NSAIDs ওষুধে অ্যালার্জি।

5. ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা: যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস বা অন্য অটোইমিউন রোগ।

লক্ষণসমূহ

1. নাক বন্ধ বা ভারী অনুভূতি।

2. ঘ্রাণ শক্তি হ্রাস বা সম্পূর্ণ হারানো।

3. নাক দিয়ে পানি পড়া।

4. মাথাব্যথা বা চাপ অনুভব করা (বিশেষত সাইনাস এলাকায়)।

5. নাক দিয়ে শ্বাস নিতে সমস্যা।

6. ঘুমের মধ্যে নাক ডাকানো।

রোগ নির্ণয়

1. শারীরিক পরীক্ষা: নাকের ভেতরে পলিপাস দেখা।

2. এন্ডোস্কপি: নাক ও সাইনাস দেখতে ছোট ক্যামেরা ব্যবহার।

3. ইমেজিং টেস্ট: সিটি স্ক্যান বা এমআরআই।

4. অ্যালার্জি টেস্ট: অ্যালার্জির কারণ নির্ণয়।

চিকিৎসা

1. ঔষধ:

ন্যাজাল পলিপাসের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে, কারণ এটি রোগের মূল কারণকে লক্ষ্য করে এবং রোগীর সামগ্রিক শরীর ও মানসিক অবস্থাকে বিবেচনা করে। হোমিওপ্যাথি ওষুধ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে এবং পলিপাসের পুনরাবৃত্তি রোধে সাহায্য করে।

ন্যাজাল পলিপাসের জন্য ব্যবহৃত প্রধান হোমিওপ্যাথিক ওষুধসমূহ

1. থুজা অক্সিডেন্টালিস(Thuja Occidentalis)

এটি বিশেষভাবে মাংসের মতো বৃদ্ধি বা টিউমারজাতীয় অবস্থার চিকিৎসায় কার্যকর।

পলিপাসের আকার ছোট করতে সাহায্য করে।

যদি পলিপাস থেকে ঘ্রাণ শক্তি হারিয়ে যায়, তবে এটি কার্যকর।

2. সাঙ্গুইনারিয়া ক্যানাডেনসিস (Sanguinaria Canadensis)

নাকের রক্তস্রাবযুক্ত পলিপাসের জন্য ব্যবহৃত হয়।

নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মাথাব্যথা হলে কার্যকর।

3. ফ্লোরিক অ্যাসিড (Fluoric Acid)

দ্রুতবর্ধনশীল পলিপাস এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

যদি নাক থেকে সর্দি খুব বেশি পড়ে বা শুষ্ক নাক থাকে, তবে এটি কার্যকর।

4. ফসফরাস (Phosphorus)

রক্তপাতপ্রবণ পলিপাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

নাক দিয়ে পানি পড়া এবং নাকের প্রদাহে সহায়ক।

5. ক্যালক্যারিয়া কার্ব (Calcarea Carbonica)

নাকের শ্লেষ্মা ঝিল্লির বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করে।

সাধারণত স্থূল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যারা বেশি ঘামে এবং ক্লান্ত বোধ করে।

6. পালসাটিলা (Pulsatilla Nigricans)

নাক বন্ধ এবং রাতের দিকে নাকের সমস্যা বাড়লে কার্যকর।

হালকা প্রকৃতির রোগীদের জন্য প্রযোজ্য, যারা নরম এবং আবেগপ্রবণ।

7. লেমনা মাইনর (Lemna Minor)

এটি ন্যাজাল পলিপাসের চিকিৎসায় অন্যতম প্রধান ওষুধ।

যদি নাক বন্ধ থাকে এবং ঘ্রাণ শক্তি সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যায়, তবে এটি কার্যকর।

ঠান্ডা আবহাওয়ায় সমস্যার তীব্রতা বেড়ে গেলে ব্যবহার করা হয়।

8. সিলিকা (Silicea)

পলিপাস থেকে পুঁজের নির্গমনের ক্ষেত্রে কার্যকর।

এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ টক্সিন পরিষ্কার করে।

চিকিৎসার ধরন

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হয়, এবং চিকিৎসক রোগীর লক্ষণ, শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এবং রোগের প্রকৃতি বিবেচনা করে ওষুধ নির্ধারণ করেন।

ডোজ এবং ব্যবস্থাপনা

ওষুধ সাধারণত নিম্ন (6X, 30C) বা উচ্চ (200C, 1M) শক্তিতে ব্যবহার করা হয়।

ডোজের ফ্রিকোয়েন্সি নির্ভর করে রোগের তীব্রতা এবং রোগীর প্রতিক্রিয়ার উপর।

নিজে থেকে ওষুধ সেবন না করে, একজন প্রশিক্ষিত হোমিওপ্যাথের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

হোমিওপ্যাথির সুবিধা

1. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন: এটি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ।

2. প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: রোগের পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর।

3. ব্যক্তিকেন্দ্রিক: রোগীর সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসা করা হয়।

4. অস্ত্রোপচারের বিকল্প: অনেক ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তা দূর করতে পারে।

আরো পড়ুন :- ডিজিটাল গ্রেফতারির ভয়ে কাঁপছে বিশ্ব, সাইবার বিশেষজ্ঞের থেকে বাঁচার সহজ উপায় জেনে নিন

**** ন্যাজাল পলিপাসের জন্য বায়ো কেমিক ওষুধ হলো শুসলার বা বায়োকেমিক চিকিৎসা পদ্ধতির অংশ। বায়োকেমিক ওষুধ শরীরের অভ্যন্তরীণ মিনারেল ভারসাম্য ঠিক রেখে নিরাময় করতে সাহায্য করে।

ন্যাজাল পলিপাসের জন্য প্রযোজ্য অনুভূতি ওষুধসমূহ:

1. ক্যালক্যারিয়া ফ্লোর (Calcarea Fluorica)

এটি টিস্যুর ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে এবং জমাট বাঁধা বা শক্ত গঠনের টিস্যু ভেঙে সাহায্য করে।

ন্যাজাল পলিপাস থেকে হওয়া নাকের বন্ধভাব বা ঘ্রাণ শক্তি হারানোর ক্ষেত্রে কার্যকর।

2. ক্যালক্যারিয়া ফস (Calcarea Phosphorica)

নাকের টিস্যু এবং হাড়ের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করে।

পলিপাসের পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর।

3. ক্যালি মিউর (Kali Muriaticum)

এটি নাকের মিউকাস ঝিল্লির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

সাইনাসের মিউকাস স্রাব এবং নাক বন্ধের ক্ষেত্রে কার্যকর।

4. ক্যালি সালফ (Kali Sulphuricum)

নাক দিয়ে সর্দি পড়া বা নাকের মিউকাস ঝিল্লির প্রদাহে ব্যবহৃত হয়।

এটি দীর্ঘস্থায়ী পলিপাসের চিকিৎসায় কার্যকর।

5. সিলিকা (Silicea)

পলিপাস থেকে হওয়া পুঁজ বা ইনফেকশন দূর করতে সহায়ক।

এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়।

ডোজ এবং ব্যবস্থাপনা

সাধারণত বায়োকেমিক ওষুধগুলো 6X বা 12X শক্তিতে ব্যবহৃত হয়।

একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথ বা বায়োকেমিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ডোজ নির্ধারণ করা উচিত।

বায়োকেমিক ওষুধের সুবিধা

1. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন।

2. ন্যাজাল পলিপাসের পুনরাবৃত্তি রোধ করে।

3. প্রাকৃতিক এবং শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে।

আপনার যদি বায়োকেমিক চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ থাকে, তবে একজন প্রশিক্ষিত হোমিওপ্যাথ বা বায়োকেমিস্টের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। #End

আরো পড়ুন :- Big News : মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা দখল বিদ্রোহীদের, ভয়ে কাঁটা ইউনূস সরকার

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন