Bangla News Dunia, Pallab : গুলিয়ান বারি (Guillain-Barre) সিনড্রোম (GBS) একটি বিরল স্নায়ুজনিত রোগ, যা সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে স্নায়ুতে আক্রমণ করে। এই রোগের ফলে রোগীর স্নায়ুগুলি (Guillain-Barre) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে শরীরের কিছু অংশ ক্রমাগত অসাড় হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই রোগটি সাধারণত ভাইরাল সংক্রমণের পর দেখা দেয়, এবং কখনও কখনও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণও এর কারণ হতে পারে।
পুণেতে প্রথম থেকেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে। গত ১৮ জানুয়ারি, সোলাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গুলিয়ান বারিতে (Guillain-Barre) আক্রান্ত এক রোগী ভর্তি হন। রোগীর ডায়রিয়া এবং সর্দিকাশি ছিল, যার পর তাকে আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা শুরু হলে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল এবং তাকে সাধারণ বেডে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু হঠাৎ গতকাল তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে, চিকিৎসকদের প্রচেষ্টার পরেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি এবং রোগী মারা যান।
আরও পড়ুন:– চিনকে চাপে ফেলে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর পথে ভারত! জানুন বিস্তারিত
এই ঘটনায় পুণে ও তার আশেপাশে গুলিয়ান বারি সিনড্রোম নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে গেছে। প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দপ্তর পরিস্থিতি তত্ত্বাবধান করছে এবং আক্রান্তদের স্বাস্থ্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে, এই রোগের বিস্তার কীভাবে হচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, অস্বাস্থ্যকর খাবার বা দূষিত পানীয় জল থেকেই এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। গুলিয়ান বারি রোগের বিস্তার ঠেকাতে প্রশাসন জনসচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং স্যানিটেশন এবং খাদ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গুলিয়ান বারি (Guillain-Barre) সিনড্রোম সাধারণত খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে না, তবে একবার যে সংক্রমণ শুরু হয়, তা অত্যন্ত গুরুতর হতে পারে। স্নায়ুতে আক্রমণ হওয়ায় রোগীর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা না গেলে, এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
এখনো পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অঞ্চলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে কোনও বিশেষ তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে পুণেতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে একে জাতীয় স্বাস্থ্য সংকট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রশাসন আশা করছে, দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
এছাড়া, নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এবং নিরাপদ খাবার ও পানীয় জল নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য দপ্তর জরুরি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। গুলিয়ান বারি সিনড্রোমের বিষয়ে আরও গবেষণা এবং কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি