মনের ভিতর কষ্টের মেঘ, প্রিয়জনের যন্ত্রণা কমাবেন কী ভাবে? জানাচ্ছেন বিশিষ্ট মনোবিদ

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ‘তুম ইতনা জো মুসকুরা রহে হো/কেয়া গম হ্যায় জিসকো ছুপা রহে হো…’ গুলজ়ারের লেখায় কথাগুলো খুব স্পষ্ট করা হয়েছে। এমনভাবে সবাই কি প্রিয় মানুষের চেপে রাখা কষ্ট বুঝে নিতে পারেন? কেউ পারেন, কেউ পারেন না। সবাই যদি পারতেন, তাহলে খানিকটা হলেও প্রিয় মানুষটি স্বস্তি পেতেন। চাপা মনের মানুষের মনের কথা সহজে বোঝা কঠিন। এ ব্য়াপারে বিশদ কথা বলল ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডাক্তার ঊর্মি চট্টোপাধ্যায় ।

ডাঃ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘কোনও মানুষের মনে কষ্ট জমা হলে কাজে ভুল হওয়া, ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া, মেজাজ হারানো, অবসাদ, হতাশা, বিষণ্ণতা তৈরি হতে পারে। অনেক সময় ব্যক্তি নিজের সমস্যাকে নিজেই গ্রহণ করতে চান না। এর প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনে।’ হাসির আগে আপনার প্রিয় মানুষটিকে কখনও ছোট্ট ঝাঁকুনি দিতে দেখেছেন? কিংবা আনমনে সকলের থেকে আলাদা হয়ে পড়তে দেখছেন?’ সতর্ক করলেন ঊর্মি, ‘এমনটা দেখলে তাঁর দিকে একটু নজর দিন। তিনি হয়তো খুব কষ্টে আছেন। আর যদি সেই মানুষটাকে ঘনিষ্ঠভাবে লক্ষ্য করা সম্ভব হয়, তাহলে তাঁর মধ্যে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য চোখে পড়লেও পড়তে পারে।

আরও পড়ুন: R.G কর মেডিকেল কলেজে নতুন করে কর্মী নিয়োগ চলছে! সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে চাকরি – দেখেনিন বিস্তারিত

দূরে সরে আসা

দুঃখ পেলে অনেক সময়ই মানুষ নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন। সরে আসেন। ডাঃ ঊর্মি চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ভিতরে ভিতরে আঘাত পেয়ে অনেকেই লোকজনের ভিড় এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বাতিল কিংবা যে কোনও অজুহাতে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায় তাঁদের মধ্যে। এমনকী সকলের মাঝে থেকেও নিজেকে ভিড় থেকে সরিয়ে রাখেন তাঁরা। এ রকম দেখলে তাঁকে সাধ্যমতো সাহায্য করুন। তাঁর দিকে সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দিন।’

ঘুমের পরিবর্তন

ঘুম শরীরের পাশাপাশি মনকেও বিশ্রাম দেয়। ডাঃ ঊর্মি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যদি দেখেন, প্রিয় মানুষটি অতিরিক্ত ঘুমোচ্ছেন বা তাঁর চোখে একেবারেই ঘুম নেই, তাহলে তাঁর প্রতি সচেতন হোন। হয়তো তাঁর সাহায্য দরকার। প্রয়োজনে তাঁকে মনোবিদের কাছে নিয়ে যান। অতিরিক্ত ঘুম বা একেবারে ঘুম না হলে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে মেজাজ হারানো, অবসাদ, বিষণ্ণতার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।‘

পছন্দের কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা

মনের ভিতর কষ্ট জমা হলে পছন্দের কাজ, খেলা, খাবার, শখ কিংবা মানুষের থেকেও আগ্রহ চলে যায়। নিজের অজান্তেই বন্ধু-প্রিয়জনদের প্রতি উপেক্ষা চলে আসে। কারও মধ্যে এই ধরনের বৈশিষ্ট্য দেখলে বুঝবেন তিনি গভীর মানসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। ডাঃ চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ, এমন অবস্থায় তাঁর পাশে দাঁড়ান।

আবেগের পরিবর্তন

নিজের অজান্তে অযথা রাগ, চেঁচামেচি, কান্না, অতিরিক্ত হাসি, বিরক্তি কিংবা হতাশাও মনকষ্টের লক্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন মনোবিদ ঊর্মি। এক এক সময় অবস্থা এমন হয় যে, সেই আবেগ অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে ধৈর্য্য ধরুন, তাঁকে বোঝার চেষ্টা করুন। বন্ধুর মতো মিশতে হবে এ রকম সময়। তাতে অনেক সময়ই মনের কষ্ট কমতে পারে।

নিজের সমালোচনায় মুখর

মনোবিদ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘অত্যধিক মানসিক আঘাতে অনেক সময়ই ব্যক্তি নিজের সবচেয়ে বড় সমালোচক হয়ে ওঠেন। যে কোনও ভুলভ্রান্তির জন্য নিজেকেই দোষারোপ করতে থাকেন। কিংবা ভালো কাজে নিজের কৃতিত্বকে উপেক্ষা করেন। নিজের প্রতি অত্যন্ত কঠোর হয়ে উঠতে পারেন। আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান কমে যাওয়াও গভীর মানসিক সংগ্রামের লক্ষণ হতে পারে।‘

আপনার পরিচিত কারও মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তাঁর পাশে থাকুন। এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁকে মনোবিদ বা মনোচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। এর কারণ মনের অসুখ একমাত্র তাঁরাই সারাতে পারেন।

আরও পড়ুন:– 147টি ট্রেনের টাইম টেবিলে বদল আনছে পূর্ব রেল ! দেখে নিন নয়া টাইম টেবিল

আরও পড়ুন:–  কলকাতায় উদ্ধার ক্যান্সার-সহ বিভিন্ন রোগের ‘ভেজাল ওষুধ’, ধৃত ১, শোরগোল

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন