উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দুর্গাপুর ধর্ষণকাণ্ডে তোলপাড় গোটা রাজ্য। দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ডাক্তারির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সব অভিযুক্তকে পুলিশ ধরেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শফিক শেখকে ধরতে পুলিশকে সহায়তা করেছে তারই বোন রেজিনা। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুর্গাপুরের আণ্ডাল ব্রিজের নীচে শফিককে ধরিয়ে দিতে সহায়তা করেছিলেন রেজিনাই।
এই বিষয়ে রেজিনা বলেন, ‘আমি জানতে পারি ভাই শফিক এই ধর্ষণকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। আমি চেয়েছিলাম ভাই আইনের মুখোমুখি হোক। তার জন্য আমাদের পরিবারের লজ্জার ভাগিদার হওয়া উচিত নয়। তাই আমি শফিককে ধরিয়ে দিয়েছি পুলিশের হাতে।’
এদিকে যে শেখ নাসিরুদ্দিনের মোটরসাইকেলে করে অপরাধীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, তাকেও ধরেছে পুলিশ। ধৃত অন্য তিনজন হল – রিয়াজউদ্দিন (কলেজের প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী), অপু বারুই এবং ফিরদৌস শেখ।
এদিকে দুর্গাপুরে গণধর্ষণের শিকার ডাক্তারি পড়ুয়ার মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। সেই রিপোর্টে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্নের উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গে যৌনাঙ্গ দিয়ে ব্যাপক রক্তপাতেরও উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে ধৃতদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে এই মামলায়। এই আবহে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল এলে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের জড়িত থাকার পাকা পোক্ত প্রমাণ পাওয়া যাবে। এই ধর্ষণ কাণ্ডে পাচ অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলেন, কলেজের প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী রিয়াজউদ্দিন শেখ, নাসিরউদ্দিন শেখ, অপু বারুই, শফিক শেখ এবং ফিরদৌস শেখ। ধৃত শেখ নাসিরুদ্দিনের মোটরসাইকেলে করে অপরাধীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিল। মঙ্গলবার অভিযুক্তদের সঙ্গে করে অপরাধ পুনর্গঠনের জন্য ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
উল্লেখ্য, নির্যাতিতা তরুণী ওডিশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১০ অক্টোবর রাত আটটা নাগাদ ওই পড়ুয়া এক বন্ধুর সঙ্গে কলেজের বাইরে খেতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেই সময় দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধুটি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। এদিকে গণধর্ষণ করার পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ৩ হাজার টাকাও নাকি চাওয়া হয়েছিল সেই তরুণীর থেকে। তা না পেয়ে অভিযুক্তরা নাকি নির্যাতিতাকে মারধরও করেছিল। এই আবহে নিজের অভিযোগপত্রে নির্যাতিতা দাবি করেন, ৫ জন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করেছিল।