EPFO Insurance: কর্মরত অবস্থায় কোনো পিএফ (PF) সদস্যের মৃত্যু হলে, তাঁর পরিবারকে আর্থিক সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ‘এমপ্লয়িজ ডিপোজিট লিঙ্কড ইনশিওরেন্স’ (EDLI) বা বিমার সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠছে যে, আঞ্চলিক পিএফ অফিসগুলির একাংশ নানা অজুহাতে মৃত কর্মীর পরিবারকে এই বিমার টাকা থেকে বঞ্চিত করছে অথবা প্রাপ্য টাকার চেয়ে কম প্রদান করছে। এই বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (EPFO) কর্তৃপক্ষ। মৃত কর্মীর পরিবার যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়, তার জন্য দিল্লি থেকে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
বিমার টাকা নিয়ে আঞ্চলিক অফিসগুলির কারচুপি
ইপিএফও (EPFO)-র নিজস্ব পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আঞ্চলিক স্তরের কিছু কর্মী নিয়ম থাকা সত্ত্বেও মৃত সদস্যদের পরিবারকে বিমার টাকা মেটাতে টালবাহানা করছে। বিশেষ করে চাকরির মেয়াদের মাঝে ছোটখাটো বিরতি বা ছুটির দিনগুলিকে ‘সার্ভিস ব্রেক’ হিসেবে দেখিয়ে বিমার দাবি নাকচ বা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের অভিযোগের পাহাড় জমতেই কেন্দ্রীয় অছি পরিষদ বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
পিএফ বিমার নতুন নিয়ম ও সুবিধা
কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের শেষ বৈঠকে কর্মীদের সুবিধার্থে তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা মৃত কর্মীর পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে:
- ১ বছরের কম চাকরিতেও বিমা: আগে নিয়ম ছিল, এক বছরের কম চাকরি করলে কোনো বিমার টাকা পাওয়া যেত না। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো সংস্থায় এক বছরের কম সময়ও কাজ করেন এবং দুর্ভাগ্যবশত মারা যান, তবুও তাঁর পরিবার ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা বিমা বাবদ পাবে।
- চাকরি ছাড়ার পরেও সুরক্ষা: যদি কোনো ব্যক্তির পিএফ অ্যাকাউন্টে টানা ৬ মাস টাকা জমা না পড়ে এবং তিনি ওই ৬ মাসের মধ্যেই মারা যান, তাহলেও তাঁর পরিবার বিমার সম্পূর্ণ টাকা পাওয়ার অধিকারী হবে।
- চাকরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ছাড়: সর্বোচ্চ ৭ লক্ষ এবং সর্বনিম্ন ২.৫ লক্ষ টাকা বিমার সুবিধা পাওয়ার জন্য টানা এক বছর চাকরির শর্ত রয়েছে। আগে এক চাকরি ছেড়ে অন্য চাকরিতে যোগ দেওয়ার মাঝে শনি-রবিবার বা সরকারি ছুটি পড়লে তাকে ‘চাকরি নেই’ বা বিরতি হিসেবে ধরা হতো এবং বিমার টাকা আটকে দেওয়া হতো। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, দুই চাকরির মাঝে ২ মাস পর্যন্ত ব্যবধান থাকলেও তা ‘নিরবচ্ছিন্ন চাকরি’ বা কন্টিনিউয়াস সার্ভিস হিসেবেই গণ্য হবে এবং পরিবার পুরো বিমার টাকা পাবে।
কর্তৃপক্ষের কড়া বার্তা
এত স্পষ্ট নিয়ম থাকা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, এক সংস্থা থেকে অন্য সংস্থায় যোগ দেওয়ার মাঝে সাপ্তাহিক ছুটি বা সরকারি ছুটি থাকলে, অনেক আঞ্চলিক অফিস এখনও পুরনো অজুহাত দেখিয়ে বিমার টাকা আটকাচ্ছে। এই অনিয়ম রুখতে ইপিএফও সদর দপ্তর থেকে আঞ্চলিক অফিসগুলিকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ছুটির দিন বা ছোটখাটো ব্যবধানের কারণে কোনোমতেই মৃত কর্মীর পরিবারের বিমার টাকা আটকানো যাবে না। বঞ্চনা রুখতে এবং দ্রুত দাবি মেটাতে তৎপর হয়েছে পিএফ দপ্তর।
Follow Us












