জয় রায় :- আমরা জানি সমস্ত আসনের কিছু না কিছু নিয়ম থাকে আর আমাদের উচিত প্রতিটি আসন করার আগে সেই আসনের সঠিক নিয়ম ও উপকারিতা জানা। এতে আমরা বুঝতে পারবো ওই আসনটি করার ফলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হয়েছে। তবে চলুন এখানে আমরা যষ্টি আসনের ব্যাপারে জেনেনি –
নিয়ম :- প্রথমে চিৎ হয়ে শবাসনে শুয়ে পড়ুন। দুহাত শরীরের দু – পাশে রেখে হাতের আঙ্গুল মুঠ করে মাটিতে রাখুন। এবার দু – পায়ের পাতা শরীরের দিকে টেনে আনুন এবং হাত দুটি মুঠ করা অবস্থায় মাথার পিছনে মাটিতে ঠেকান। এই অবস্থায় পিঠের উপরাংশ মাটি থেকে সামান্য উঠবে।
এবার স্বাভাবিক ভাবে নিঃশাস নিন , এই ভাবে ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর দুহাত শরীরের দু – পাশে এনে রাখুন। এবার দু – পায়ের পাতা সামনের দিকে করে রাখুন , পূর্বের ন্যায় দু হাত মুঠ করা অবস্থায় মাথার পিছনে নিয়ে যান। এবার নিঃশাস স্বাভাবিক রাখুন। এই ভাবে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। এই ভাবে পর্যায় ক্রমে প্রথমে দু – পায়ের পাতা শরীরের দিকে টেনে পরে দু – পায়ের পাতা সামনের দিকে করাকে ১ বার ধরে মোট তিনবার ধরে আসনটি করতে হবে।
কার্যকারিতা ও উপকারিতা :- অনেক মহিলার রাতের ঘুমের সময় পায়ের ডিমে খিঁচুনি ধরে। ফলে ভীষণ যন্ত্রনা ও ব্যাথা শুরু হয়ে ঘুম ভেঙে যায়। এর কারণ হলো রক্ত চলাচলের অভাব। এই আসনটি নিয়মিত করবেন বিশেষ করে রাত্রে শোবার আগে। তাহলে পায়ের ডিমের খিঁচুনি ধরার সম্বাভনা কমে সুনিদ্রা পেতে সাহায্য করবে।
খেলোয়াড়দের প্রায়ই দেখা যায় যে খেলার সময় ঊরুর পিছনের পেশিতে টান ধরার জন্য মাঝ পথে খেলে ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন। বিজ্ঞান সম্মত ব্যায়ামের অভাবে পেশী ঠিক মতো প্রসারিত করা হয় না। যষ্টি আসনের সাহায্যে ঐ পেশিকে যেমন প্রসারিত করা যায় অন্যদিকে ঊরুর সামনের দিকের পেশিকে শক্তিশালী করা যায়।
যারা সার্ভিক্যাল স্পন্ডলোসিস এ ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে Active extension of the servical spine – এর কাজ হয়।
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এটা খুবই উপকারী আসন কারণ শরীরের শিরার রক্ত চলাচল হৃৎপিন্ডের দিকে যেতে এই আসনটি বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। বাতের রোগী যারা নিজে থেকে কোনো অস্থি সন্ধিকে যেমন পায়ের গোড়ালি ,হাটু ,হাতের কব্জি ও কুনুই এবং কাঁধ সঞ্চালন করতে পারেন না তারা এই যষ্টি আসনটি নিয়মিত অভ্যাস করলে বিভিন্ন অস্থি সংলগ্ন মাংস পেশি উজ্জীবিত হয় এবং মাংস পেশি গুলিকে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
যাদের পায়ের ডিমে খিঁচুনি হয় তারা যষ্টি আসনের পরে প্রত্যহ রাতে শোবার আগে ফুট – বাথ নিতে ভুলবেন না। তিন মিনিট গরম জলে এবং এক মিনিট ঠান্ডা জলে পায়ের ডিম পর্যন্ত ডুবিয়ে রাখুন। এই প্রসেসটি মোট তিনবার থেকে চারবার করবেন। এর ফলে পায়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হয়ে এই রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
রাতে ঘুমের ঘরে খিঁচুনি ধরলে সঙ্গে সঙ্গে পায়ের ডিমে পাউডার দিয়ে হালকা মালিশ করলে বা বরফের টুকরো দিয়ে ওই স্থান মালিশ করলে ব্যাথা ও কষ্ট থেকে উপকার পাবেন। ভিটামিন -ই একটি করে এক মাস সকালে প্রাতরাশের পর খেলে উপকার পাবেন।
এই আসনটি খেলোয়াড়রা খেলতে নামার পূর্বে এক্সারসাইজ করবার সময় করলে , খেলার মাঝে পায়ের পেশিতে খিঁচুনি ধরার সম্বাভনা কমে যায়। আবার খেলা শেষে এই আসনটি করলে খেলোয়াড়দের রাতে যে পায়ের পেশিতে টান ধরে তার থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়া খেলোয়াড়রা যদি প্রতিদিন নিয়মিত সকালে এই আসনটি করে তবে তাদের পায়ের এই পেশি প্রসারিত হয়ে যায় ,তাই খেলার সময় পায়ের পেশিতে টান লাগার সম্বাভনা অনেক কমে যায়।