Bangla News Dunia, সারদা দে :- মানবদেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার চরিত্র খুবই জটিল! তার মন, আচরণ বোঝা সত্যিই কঠিন। ‘দানব-ধ্বংসকারী’ এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা কখনও কখনও ‘ঘরশত্রু বিভীষণের ‘ ভূমিকা পালন করে। এর কারণে এটি একদিকে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করলেও অন্যদিকে অন্য কোনো জটিল রোগ বা সংক্রমণের দরজা খুলে দেয়। তবে কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার বা বানাতে হলে বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও গবেষকদের মনুষ্যদেহের এই জটিল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই আগে বুঝতে নিতে হয়।
কিন্তু যদি সেই কাজটি মানুষের উপর চালানো হয় তবে তা বিপরীতমুখী হতে পারে। তাই এখন ইঁদুর, খরগোশ, শূকরের মতো প্রাণীর উপরে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পরীক্ষা চালানো হয় । কিন্তু ইমিউন সিস্টেমের জ্যামিতি এবং রসায়ন এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি এক প্রজাতির প্রাণী থেকে অন্য প্রজাতির মধ্যে ভিন্ন হয়। তাই, অনেক ক্ষেত্রে, কোনো সফল ওষুধ বা ভ্যাকসিন অন্য প্রাণীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হলেও মানুষের ক্ষেত্রে ততটা সফল বা কার্যকরী নাও হতে পারে।
আরো পড়ুন :- স্বাস্থ্য উন্নত করতে চান ?এই ফসল চাষ করে স্বাস্থ্য এবং অর্থ উভয় দিক থেকে হন লাভবান
তবে কয়েক শতাব্দীর এই সমস্যার সমাধানের পথ এবার খুলে যেতে চলছে । হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজিক্যালি ইন্সপায়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিজ্ঞানীরা ইমিউন সিস্টেমের জন্য একটি মাইক্রোচিপ তৈরি করেছেন। এটি লিম্ফয়েড ফলিকুলার চিপস (এলএফ চিপস) নামেও পরিচিত। মঙ্গলবার গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা জার্নালে অ্যাডভান্সড সায়েন্সে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই বিশেষ ধরনের মাইক্রোচিপ অনেক আগে থেকেই মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার রহস্য উন্মোচন করতে সাহায্য করবে।
কোভিড আক্রান্ত হলে কেন কোনো উপসর্গ দেখায় না, এবং কেনই বা কারো কারো প্রচণ্ড জ্বর, শরীরে নানা ধরনের ফুসকুড়ি, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা হয় তা এই মাইক্রোচিপের মাধ্যমে আগে থেকেই বোঝা যাবে। কোভিড-এ আক্রান্ত হওয়ার পর কোন কারণে কেউ নিজের শরীরের সাইটোকাইন ঝড়ে মারা যায় আবার কেউ এই সাইটোকাইন ঝড়ের ফলেও মারা যায় না, তা এই মাইক্রোচিপের সাহায্যে জানা যাবে। এক কথায় অনেক অজানা রহস্য উন্মোচন করতে সাহায্য করবে এই চিপ।
আরো পড়ুন :- নিঃশব্দে বাড়ছে ডায়াবিটিস ! কোন কোন লক্ষন দেখলে সতর্ক হবেন ?
গবেষকরা দুটি প্রধান ধরনের ইমিউন সেল বি কোষ এবং টি কোষ নিয়ে এই মাইক্রোচিপ তৈরি করেছেন। এরা একসাথে ক্ষতিকারক ছত্রাক,ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার মোকাবিলা করে। সংক্রমণ প্রতিরোধের সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করবে কিভাবে এই দুটি কার্যকরী সেল একে ওপরের সাথে পারস্পরিক বোঝাপড়া করবে তার উপরে। গবেষকরা জানিয়েছেন আগে থেকে এটি বোঝার জন্য দরকার এই ধরনের মাইক্রোচিপ। যা ভবিষ্যতে ওষুধ বা ভ্যাকসিন উদ্ভাবন ও বিকাশের প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে তুলবে। ভ্যাকসিন বা ওষুধের কার্যকারিতা আরও সহজে এবং আরও দ্রুত পরিমাপ করা যাবে