Bangla news dunia, অজয় দাস :- পেটের ভিতরের জমা বায়ু বের করা এই আসনের অন্যতম কাজ তাই এই আসনের নাম পবনমুক্তাসন। তবে যে কোনো আসনেরই কোনো না কোনো ভালো দিক আছে। তবে আপনাকে দেখে ও বুঝে নিতে হবে যে আপনার জন্য কোন ব্যায়াম বা প্রাণায়ামটি উপযোগী। এবার সেই ব্যায়ামের সমন্ধে ভালো করে জানুন যে সেই ব্যায়াম করার সঠিক নিয়ম কি কি আর আপনার শরীরে কোনো প্রবলেম থাকলে সেই ব্যায়ামটি করতে পারবেন কি না। আর সেই ব্যায়ামের কি কি কার্যকারিতা ও উপকার আছে তা সবার আগে সঠিক ভাবে জেনে নিন। চলুন পবনমুক্তাসনের সমন্ধে ভালো করে জেনে নেওয়া যাক –
নিয়ম :- প্রথমে চিৎ হয়ে শবাসনে শুয়ে পড়ুন। এবার ডান পা হাটু থেকে ভাঁজ করে মুখ ও পেটের কাছে নিয়ে আসুন। তারপর পা টিকে দুহাতের সাহায্যে পেটের সঙ্গে জোরে চেপে ধরুন যাতে পেটের উপর উরুর বেশ চাপ পরে। এবার নিঃশাস সহজ ও স্বাভাবিক রাখুন এবং লক্ষ রাখবেন যাতে হাতের চাপ আলগা না হয়। এই অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড থাকার পর পা সোজা করুন এবং সঙ্গে সঙ্গে ডান পায়ের মতোই বাঁ পা হাটু থেকে ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে চেপে ধরুন।
এই ভাবে ৩০ সেকেন্ড থাকার পর পা সোজা করুন। এরপর দুপায়ের হাটু এক সঙ্গে ভেঙে পেটের উপর জোরে চেপে ধরুন। যাতে পা দুটি জোড়া অবস্থায় থাকে। এই ভাবে প্রথমে ডান পা পরে বাঁ পা এবং শেষে এক সঙ্গে দুপা তুলে এই আসন করার পর একটি প্রস্থ পূর্ণ হবে। এই ভাবে মোট তিনবার করার পর একবার করে শবাসন করবেন।
পবনমুক্তাসন করাকালীন যদি পেট ও ঊরুর মাঝখানে ফাক থাকে তবে একটি চাদর ভাঁজ করে অথবা পাতলা একটা বালিশ পেটের উপর দিয়ে নিতে হবে।
কার্যকারিতা ও উপকারিতা :- পেটে বায়ু সাধারণত দুটি কারণে জমে। প্রথমত পুরানো আমাশা থেকে দৃতীয়ত তাড়াতাড়ি খাবার জন্য মুখ দিয়ে হাওয়া ঢোকার ফলে। এই আসন করবার সময় প্রথমেই যদি বাঁ পা তুলে করেন তবে পেটের মধ্যে কোলনে যে বায়ু জমে আছে তা নির্গত হয়ে অবরোহী কোলন থেকে আরোহী কোলনে প্রবেশ করে , ফলে কোনো উপকার পাবেন না। তাই এই আসনটি করার সময় প্রথমেই ডান পা দিয়ে শুরু করবেন। আসনটির নিয়মিত অভ্যাসে পেটে বায়ু জমতে পারে না , ফলে পায়খানা ভালো হয়।
আমাদের বুক ও পেটের গভরে মধ্যে চ্যাটের আকারের একটি মাংস পেশী আছে যার নাম (Diaphragm )ডায়াফ্রাম। নিঃশাস গ্রহণ করার সাথে সাথে ঐ পেশী তলার দিকে নেমে এসে হজমের যন্ত্র গুলিকে অল্প অল্প ধাক্কা দিয়ে অন্তের চলন কার্যকে চালু রাখতে সাহায্য করে।
হাঁপানি রোগীদের জন্য পবনমুক্তাসন বিশেষ উপকারী। কারণ হাঁপানি রোগীরা নিঃশাস ছাড়ার সময় ভীষণ কষ্ট পায়। এই আসনটি করার সময় ঊরু দিয়ে পেট চেপে ধরার ফলে পেট সামনের দিকে এগোতে পারে না। সেইজন্য ডায়াফ্রাম পেশিটি আরো তলার দিকে নেমে এসে পুরো ফুসফুসে বায়ু প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে তেমনি আবার ওই পেশিটিকে ওপরের দিকে উঠতে সাহায্য করে। এই জন্য ফুসফুস থেকে বায়ু সহজে বেরিয়ে যেতে পারে।
সুতরাং পবনমুক্তাসনের নিয়মিত অভ্যাস পাকস্থলী , যকৃৎ ও প্লীহাকে বেশি কর্মক্ষম করে তোলে ও হজম শক্তি বাড়ায়। তাই এই আসন হাঁপানি রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়া যাদের হাঁটুতে ব্যাথা থাকার জন্য বজ্রাসন , উৎকটাসন , পদ্মাসন ইত্যাদি আসন অভ্যাস করতে পারেন না তারা প্রথমে অল্প সময় দিয়ে পবনমুক্তাসনের অভ্যাসের পর একটু সুস্থ বোধ করলে উপরের আসন গুলি অভ্যাস করার চেষ্টা করতে পারেন।
যারা অনেক দিন ধরে স্পন্ডলোসিস কোমরের ব্যাথায় ভুগছেন তারা পবনমুক্তাসন করলে উপকার পাবেন। যাদের গ্যাস্টিক আলসার বা হার্টের কোনো অসুখ আছে তাঁরা পবনমুক্তাসন করার সময় শুধু ডান পা দিয়ে করবেন এবং যারা ডিওডেনাম আলসারের রোগী তারা শুধু বাঁ পা দিয়ে করবেন।