Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : তুলসী পাতার গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ থাকতে প্রতিদিন একটি করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খান। বারান্দায় যেখানে আলো–বাতাস চলাচল করে, সেখানে লাগিয়ে রাখতে পারেন উপকারী তুলসীগাছ।
শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের ঠান্ডা, সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে তুলসী পাতা মহৌষধ। বাচ্চার সর্দি-কাশি থাকলে আধা চামচ মধুর সঙ্গে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ালে কাশি কমে যাবে। বুকে কফ বসে গেলে সকালবেলা এক গ্লাস জলে তুলসী পাতা, আদা ও চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করুন। মাথাব্যথা কমাতে তুলসীর চা অনেক কার্যকরী। তুলসী পাতা ফুটিয়ে গারগেল করলে গলাব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।
বেশির ভাগ দেশে তুলসীকে মানসিক চাপমুক্ত করার অসাধারণ ঔষধি হিসেবে ধরা হয়। তুলসীর ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। নার্ভকে শান্ত করে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে তুলসী পাতায় রয়েছে অসাধারণ রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা , ফুসফুসের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি। জ্বরের সময়ও তুলসী পাতা খুব উপকারী।
তুলসী পাতা রক্তের সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টেরল দুটোই কমাতে সাহায্য করে, খুব সহজেই আপনি ওজন বৃদ্ধির হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। ক্যানসার প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান, যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও তুলসী পাতা খুব কার্যকরী।
ত্বকের যত্নের জন্যও তুলসী পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার তুলসী পাতাকে যৌবন ধরে রাখার টনিকও মনে করেন। তুলসী পাতা বেটে সারা মুখে লাগিয়ে রাখলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়। ত্বকের কোনো অংশ পুড়ে গেলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগালে জ্বালা কমবে এবং সেখানে কোনো দাগ থাকবে না।
তুলসীতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলো চোখের চুলকানি, অঞ্জনি, পিচুটিজাতীয় যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পুষ্টিগুণে ভরপুর তুলসী পাতা, দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানির মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে।
রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে।
তুলসী পাতা হার্টের রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। হার্টের রোগ জন্ম দেয় হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ , কোলেস্টরলের। তুলসী পাতার দ্বারা রক্তের জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করা যায় ও হার্ট অ্যাটাক রোধ করা যায়।
পেটের সমস্যায় তুলসী পাতা মহৌষধ। পেটব্যথা, অম্বল, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দূর করতে তুলসী পাতা দারুণ কার্যকরী। পেটে আলসারের বিরুদ্ধেও তুলসী পাতা ভালো কাজ করে। পেটব্যথা ও হাইপার অ্যাসিডিটি খুব সহজে কমে যায়।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল