Indian Economy: জাপানকে টপকে বিশ্বমঞ্চে ভারতের দাপট! এখন চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি, পরবর্তী টার্গেট জার্মানি

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Indian Economy: নতুন বছরের শুরুতেই দেশবাসীর জন্য এল এক বিরাট সুখবর। ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে যে, জাপানকে পেছনে ফেলে ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি (4th Largest Economy)। শুধু তাই নয়, সরকারের দাবি অনুযায়ী আগামী তিন বছরের মধ্যে জার্মানিকেও টপকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে আসবে ভারত।

গোল্ডিলক্স মুভমেন্ট: অর্থনীতির সুসময়

সরকার বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে ‘গোল্ডিলক্স মুভমেন্ট’ (Goldilocks Moment) হিসেবে অভিহিত করেছে। এটি অর্থনীতির এমন একটি আদর্শ অবস্থা যখন:

  • দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (Growth) গতি অত্যন্ত দ্রুত থাকে।
  • মুদ্রাস্ফীতি বা মূল্যবৃদ্ধি (Inflation) থাকে নিয়ন্ত্রণে।

সাধারণত দেখা যায়, উচ্চ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মুদ্রাস্ফীতিও বাড়ে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে চিত্রটি বেশ ইতিবাচক—এখানে প্রবৃদ্ধির হার শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও উপভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) কম রয়েছে, যা যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্য একটি অত্যন্ত সুবিধাজনক পরিস্থিতি।

জিডিপি-র পরিসংখ্যান (Nominal GDP)

এই র‍্যাঙ্কিং মূলত নমিনাল জিডিপি-র ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা বর্তমান বাজার মূল্য এবং ডলারের বিনিময় হারের নিরিখে মাপা হয়। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর বর্তমান অবস্থা নিচে দেওয়া হলো:

দেশ জিডিপি (আনুমানিক)
আমেরিকা ২৮ ট্রিলিয়ন ডলার
চীন ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার
জার্মানি ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি
ভারত ৪.১৮৭ ট্রিলিয়ন ডলার
জাপান ভারতের সামান্য পেছনে

জাপান কেন পিছিয়ে পড়ল?

ভারতের এই উত্থান এবং জাপানের পিছিয়ে পড়ার পেছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে:

  • বিকাশের গতি: ভারত একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ৬-৭% হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। অন্যদিকে, উন্নত দেশ জাপানে গত ৩০ বছর ধরে প্রবৃদ্ধির হার ১%-এর নিচে আটকে আছে।
  • জনসংখ্যা ও শ্রমশক্তি: ভারতের বিশাল যুব সমাজ এবং বড় ঘরোয়া বাজার অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। বিপরীতে, জাপানের জনসংখ্যা দ্রুত বুড়ো হচ্ছে, ফলে সেখানে কর্মক্ষম মানুষের অভাব দেখা দিচ্ছে।
  • মুদ্রার মান: ডলারের তুলনায় জাপানি ইয়েন (Yen) মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়েছে। যদিও ভারতীয় রুপির মানও কমেছে, কিন্তু ইয়েনের পতন এতটাই বেশি যে ডলারের হিসেবে তাদের জিডিপি কমে গেছে।
  • কাঠামগত পার্থক্য: ভারত যেখানে ডিজিটাল অর্থনীতি এবং ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে জোর দিচ্ছে, জাপান সেখানে অপস্ফীতি বা ডিফ্লেশনের (Deflation) চাপের সঙ্গে লড়াই করছে।

ভারতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি

ভারতের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কয়েকটি মূল স্তম্ভ:

  • জনবিন্যাসের সুবিধা: ভারতের গড় বয়স (Median Age) মাত্র ২৮ বছর, যা উৎপাদন এবং ভোগ—উভয় ক্ষেত্রেই বড় ভূমিকা রাখছে।
  • অবকাঠামো উন্নয়ন: হাইওয়ে, রেলওয়ে এবং লজিস্টিক পার্ক তৈরির ফলে পণ্য পরিবহনের খরচ কমছে এবং ব্যবসার প্রতিযোগিতা বাড়ছে।
  • ম্যানুফ্যাকচারিং: পিএলআই (PLI) স্কিম এবং ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ (China Plus One) নীতির কারণে দেশে বিনিয়োগ বাড়ছে।
  • ডিজিটাল পরিকাঠামো: আধার, ইউপিআই (UPI) এবং জিএসটি-র মতো ব্যবস্থার ফলে অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা এসেছে।

পরবর্তী লক্ষ্য: জার্মানি

আগামী ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে, অর্থাৎ মাত্র ৩ বছরের মধ্যে জার্মানিকে টপকে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণ জার্মানির অর্থনীতি বর্তমানে রপ্তানি-নির্ভর এবং তারা বৈশ্বিক মন্দা ও শক্তি সংকটের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে, ভারতের প্রবৃদ্ধির হার জার্মানির চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি। এছাড়া, ভারতের জিডিপি গণনার ‘বেস ইয়ার’ (Base Year) ২০১১-১২ থেকে পরিবর্তন করে ২০২২-২৩ করা হলে অর্থনীতির আকার খাতায়-কলমে আরও বড় দেখাবে।

জিডিপি বনাম মাথাপিছু আয়: বাস্তব চিত্র

অর্থনীতির আকারে চতুর্থ হলেও, মাথাপিছু আয়ের (Per Capita Income) ক্ষেত্রে ভারত এখনও অনেকটা পিছিয়ে।

  • ভারত: ১৪০ কোটি জনসংখ্যার কারণে মাথাপিছু আয় প্রায় ২,৮০০ ডলার।
  • জাপান: কম জনসংখ্যার কারণে মাথাপিছু আয় প্রায় ৩৪,০০০ ডলার (ভারতের চেয়ে প্রায় ১২ গুণ বেশি)।

অর্থনৈতিক এই বৃদ্ধির সুফল তখনই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে, যখন এটি আরও বেশি কর্মসংস্থান, উন্নত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় রূপান্তরিত হবে। তবে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ডেটাবেসে এই নতুন র‍্যাঙ্কিং আপডেট হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন