উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বহু বছরের দাবি এবার পেল এক নতুন, শক্তিশালী সমর্থন। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার (Keir Starmer) ঘোষণা করেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (UNSC) ভারতের ‘ন্যায্য স্থান’ পাওয়া উচিত। এই ‘উচ্চ-পর্যায়ে’র সমর্থন ভারতের কূটনৈতিক এজেন্ডার ক্ষেত্রে এক বিশাল অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের জন্য জোরদার সওয়াল করছে। সেই আবহে স্টারমারের এই বিবৃতি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্বে আমেরিকা (জো বাইডেন প্রশাসনের সময়), জার্মানি, ফ্রান্স, আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাপান এবং ব্রাজিলের মতো শক্তিগুলিও এই দাবিতে সম্মতি জানিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরেও স্টারমার, বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রায় একই সময়ে ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করে জাতিসংঘকে আরও ‘প্রতিনিধিত্বমূলক সংস্থা’ হিসেবে গড়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। সম্প্রতি রাশিয়াও এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার বৃহত্তর প্রতিনিধিত্বের পক্ষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রয়েছে- আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, চিন এবং ফ্রান্স। এশীয় দেশগুলির মধ্যে শুধুমাত্র চিনই স্থায়ী আসন ধরে রেখেছে। এই প্রেক্ষাপটে, চিনের সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক চিরাচরিতভাবে তেমন ‘ভালো’ না হলেও, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্কের বিরুদ্ধে দুই দেশের আপাত সখ্যতা কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করছে।
জাতিসংঘে স্থায়ী সদস্যপদের সমর্থন ছাড়াও, স্টারমার ভারতের ‘উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন’-এর প্রশংসা করেন। প্রসঙ্গত, মোদি এবং স্টারমার দু’জনেই গত জুলাইয়ে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তি অনুসরণ করে ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন। এই চুক্তির ফলে ভারত ব্রিটিশ পণ্য (যেমন হুইস্কি, কসমেটিকস এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম) আমদানিতে শুল্ক কমাবে এবং ব্রিটেন ভারতীয় পণ্য (যেমন পোশাক, জুতো এবং খাদ্যদ্রব্য) আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি এই প্রসঙ্গে ভারত ও ব্রিটেনকে ‘স্বাভাবিক অংশীদার’ হিসেবে বর্ণনা করেন জানান, দুই দেশ বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করছে। দুই নেতার আলোচনায় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা, পশ্চিম এশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যু উঠে আসে। ইউক্রেন এবং গাজার সংঘাতের বিষয়ে, ভারত বরাবরের মতোই সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমে শান্তির প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার পক্ষে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।