Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : ভারতের সঙ্গে বেশ কিছু দেশের যোগাযোগ এতটাই দৃঢ় সেখানে গেলে বিদেশ বলে বিশেষ মনে হয় না। বেড়াতে গেলে মনে হয় যেন উত্তরবঙ্গ বা সিকিমে বেড়াতে গেছেন। সংস্কৃতি, খাওয়া দাওয়া, অতিথি আপ্যায়নের দিক দিয়ে ভারতীয়দের সঙ্গে ভুটানবাসীদের বেশ মিল। তা আধুনিক জীবনযাত্রা তো নিজের বাড়িতেই আছে, বেড়াতে গিয়ে পাহাড়ি সাবেকিয়ানায় কটা দিন কাটালে কেমন হয়?
পূর্ব ভুটান —– পর্যটকদের চোখে ভুটান মানেই পাহাড়, জঙ্গল, আর সবুজ প্রকৃতি। ধীরে ধীরে নতুন হোটেল, ট্রেকিং রুট, প্রশিক্ষিত গাইডে দেখা মিলতে শুরু করেছে। বর্তমানে এই স্থান পর্যটকদের জন্য পুরোপুরি সেজে উঠেছে। আধুনিক ভুটানের সঙ্গে এখানকার জীবনযাত্রার বিশেষ মিল নেই। দেশের এই অংশের মানুষরাও নিজেদের প্রাচীন সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে মরিয়া। বাইরের আধুনিক দুনিয়ার সঙ্গে তাঁরা প্রয়োজনের বেশি যোগাযোগ রাখেন না। তাঁদের সেই সরল জীবনযাত্রা এখানকার অন্যতম আকর্ষণ।
পূর্ব ভুটান গ্রীষ্মকালে বেজায় গরম পড়ে। তেমনই ঘামে অস্বস্তি হয়। তাই গরমকালে সেখানে যাওয়া ঠিক নয়। যদিও এই সময় নানা এলাকার জঙ্গল প্রচুর পাখি। পূর্ব ভুটান ঘোরার সেরা সময় হল ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত। এই সময় আবহাওয়া যেমন আরামদায়ক থাকে তেমনই এখানে নানা উৎসব পালিত হয়।
পূর্ব ভুটান ঘুরতে গেলে কিন্তু শারীরিকভাবে একদম সুস্থ হতে হবে। সব জায়গায় গাড়ি পৌঁছোয় না। তাই পায়ে হেঁটে অনেক স্থানেই যেতে হবে। বৌদ্ধ মঠ আর মন্দিরে পরিপূর্ণ এই এলাকা। এই প্রাচীন স্থাপত্যগুলি দেখলে মন ভরে যাবে।
পূর্ব ভুটানের সবচেয়ে উল্লখযোগ্য বৌদ্ধ মঠ হল দ্রামেতসে গোয়েম্বা। এখানকার ‘না চাম’ বাজনা বাজিয়ে নাচের খ্যাতি জগৎজোড়া। এই নাচ UNESCO-এর সেরা সাংস্কৃতিক বিভাগে স্থান পেয়েছে।
পূর্ব ভুটানের অপূর্ব সুন্দর এক অভয়ারণ্য হল গোম্ফু কোরা। কথিত আছে, এখানকার এই পাথরেরই কাছে অবস্থিত একটি ছোটো গুহায় গুরু রুনপোচে ধ্যান করতেন।
নেপালের বোধনাথ স্তূপের আদলে তৈরি হয়েছে চোরতেন কোরা। চান্দ্র পঞ্জিকার প্রথম মাসে মাসে ফেব্রুয়ারি বা মার্চে স্থানীয়দের কাছে খুব পবিত্র। মাসের ১৫ এবং ৩০তম দিনে অনুষ্ঠান হয়।
খোমা পূর্ব ভুটানের চোট্টো এবং ছবির মতো সাজানো একটি গ্রাম। তবে দুঃখের বিষয় এই অপূর্ব সুন্দর গ্রামে গাড়ি করে প্রবেশ করা যায় না। ঘণ্টা দুয়েক পায়ে হেঁটে তবে এই গ্রামে পৌঁছোনো যায়। গ্রামের প্রায় বেশিরভাগ মানুষই কাপড় বানিয়ে দিন গুজরান করেন।
পেটপুজো ও হোটেল ——
ঘোরাঘুরি তো অনেক হল এবার পেটপুজোর পালা। পূর্ব ভুটানে খাবারের হোটেল কিন্তু হাতে গোনা। যদি হোমস্টে করলে সেখান থেকেই খাবার সরবরাহ করা হয়। এবং সেই খাবারের স্বাদের কোনও তুলনা হয় না।
ভুটানে গেলে অবশ্যই একবার ‘নাকে’ খেয়ে দেখবেন। নাকে মানে নাক দিয়ে খাবার নয়। এটি একধরনের পানীয়। হাতে গোনা কয়েকটি হোটেল আছে অবশ্য। আরও তৈরি হচ্ছে। তবে হোমস্টের ব্যবস্থা বেশ ভালো।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল