Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বিশ্বের কাছে বর্তমানে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ঘটনা। আক্রান্ত ভারতও। ন্যাশনাল ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে গোটা ভারতে পুলিশের কাছে ডিজিটাল গ্রেফতারি নিয়ে প্রায় 15 লক্ষেরও বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্য ও কলকাতা শহরের বিভিন্ন থানায় ডিজিটাল গ্রেফতারি নিয়ে 65 হাজারের বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
আদতে কী এই ডিজিটাল গ্রেফতারি ? জানালেন এথিক্যাল হ্যাকার এবং সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, “আসলে ডিজিটাল গ্রেফতারি বা ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু হয় না। বিষয়টি একেবারে আর পাঁচটা ডিজিটাল জালিয়াতির মতো ঘটনা। আমি সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করব, কখনও কোনও পুলিশ ফোন করে আপনাকে ডিজিটাল গ্রেফতারির হুমকি দিতে কিংবা ভয় দেখাতে পারে না। মূলত, পাকিস্তান এবং চিনের বেশ কিছু নম্বর ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ফোন করা হচ্ছে।”
আরো পড়ুন:- মাশরুমের উপকারিতা জুরি মেলা ভার ! কি জানালেন পুষ্টিবিদ?
তিনি আরও বলেন, “কখনও বলা হচ্ছে আপনার ক্যুরিয়র বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে মাদকদ্রব্য পাওয়া গিয়েছে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আপনাকে গ্রেফতার করা হবে ৷ আপনি আমাদের ইচ্ছা ছাড়া এক পা-ও কোথাও রাখতে পারবেন না। আবার অনেক সময় বলা হচ্ছে, আপনার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় এফআইআর জমা পড়েছে। আবার অনেক সময় একেবারে দিল্লি কিংবা মুম্বই পুলিশ বা অনেক সময় সিবিআই-এর লোগো ব্যবহার করে পুলিশের পোশাক পড়ে সাধারণ মানুষকে ভিডিয়ো কল করে এই ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে এই রকম ডিজিটাল অ্যারেস্ট-এর ঘটনা যদি আপনি এড়িয়ে যেতে চান, তাহলে তাদের দেওয়া একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কথা বলছে সাইবার দস্যুরা।”
এ ক্ষেত্রে কী করণীয় ? সাইবার বিশেষজ্ঞের মতে, “আমি সাধারণ মানুষকে বলব, এই রকমের কোনও ফোন এলে প্রথমেই ভয় পাবেন না। একেবারে যে ফোন নম্বর থেকে ফোন আসছে সেগুলি ব্লক করে দিতে হবে। কিন্তু, এই সাইবার দস্যুরা এতটাই বুদ্ধিমান যে পুলিশ তাদেরকে সাধারণত গ্রেফতার করতে পারে না। আর যে ফোন নম্বরগুলির মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষকে ফোন করে ভয় দেখায়, সেই নম্বরগুলিও ট্র্যাক করা অত্যন্ত মুশকিল। ফলে উপায় হল ভয় না পেয়ে, স্রেফ ওই নম্বরগুলিকে ব্লক করে দেওয়া ৷ যদি কেউ ভয় পেয়ে টাকা দিয়ে ফেলেন, সে ক্ষেত্রে তারা যেন পুলিশের দ্বারস্থ হন ৷”
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) রূপেশ কুমার ইটিভি ভারতকে বলেন, “পুলিশের তরফে এই রকমের কোনও ফোন কোথাও করা হয় না। ইতিমধ্যেই কলকাতার কসবা, টালিগঞ্জ, চারু মার্কেট, বাঁশদ্রোণী-সহ একাধিক থানায় ডিজিটাল গ্রেফতারি নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। সম্প্রতি চারু মার্কেট থানা এলাকায় এক মহিলাকে এই ডিজিটাল গ্রেফতারির ভয়ে দেখিয়ে তাঁর থেকে 66 লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আমরা মহারাষ্ট্রের দু’জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি। কিন্তু, এই বিষয়ের সবচেয়ে বড় সমাধান হল, ভয় না পেয়ে মানুষ যেন সরাসরি পুলিশে যোগাযোগ করেন।”